• অন্যান্য খবর
  • " />

     

    গ্রীষ্মের দলবদলে ফ্রি এজেন্ট থাকবেন যেসব ফুটবলাররা

    গ্রীষ্মের দলবদলে ফ্রি এজেন্ট থাকবেন যেসব ফুটবলাররা    

    আর মাত্র দুই মাসের মধ্যেই শুরু হবে শীতকালীন দলবদল। বড় তারকা ফুটবলারদের একাংশ তাদের চুক্তির শেষ ৬ মাসে প্রবেশ করবেন, সেক্ষেত্রে অন্যান্য ক্লাবগুলো ১লা জানুয়ারি থেকে তাদের সাথে চুক্তির ব্যাপারে প্রস্তাব দিতে পারবে। 

     

    কিলিয়ান এমবাপে, পল পগবা, অ্যান্টোনিও রুডিগার, পাওলো দিবালার মতন খেলোয়াড়েরা আগামী গ্রীষ্মে ফ্রি এজেন্ট হতে যাচ্ছেন, জেসি লিনগার্ড, আনহেল দি মারিয়া, লুইস সুয়ারেজ এবং আলেকজান্ডার লাকাজেতের মত খেলোয়াড়েরাও ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ক্লাবগুলোর আলোচনা করতে পারবেন। 

     

    আজকাল ফুটবলে "ফ্রি ট্রান্সফার" বলে কিছু নেই, চুক্তির বাইরে থাকা ফুটবলারদেরকেও বড় অঙ্কের বেতন এবং চুক্তি সইয়ের টাকা দিতে হয়, ক্লাবগুলোও চুক্তি করার জন্য খেলোয়াড়দের এজেন্টদের বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে থাকে। 

     

    কিন্তু যে সমস্ত ক্লাবগুলো বিনামূল্যের এজেন্টের জন্য বাজারে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ট্রান্সফার ফি বাবদ কোনো টাকা খরচ করতে চায়না তাদের জন্য প্রত্যেক পজিশনে বেশ কিছু ভালো খেলোয়াড় পাওয়া যায় যারা পরবর্তী গ্রীষ্মের দলবদলে বিনামূল্যে স্বাক্ষর করতে পারে। ইএসপিএন সেরা ফ্রি একাদশ বেছে নিয়েছে যাদের চুক্তির মেয়াদ ২০২২ সালের জুনে শেষ হবে এবং ফর্মেশন হিসেবে বেছে নিয়েছে ৪-১-২-৩ ফর্মেশনটি।

     

    গোলকিপার: উগো লরিস (টটেনহাম)

    বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্সের অধিনায়ক উগো লরিস টটেনহাম হটস্পারের হয়ে ৯ বছর খেলার পরেও নতুন কোনো চুক্তি নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা থমকে আছে, তবে এই মাসের শুরুতে আন্তোনিও কন্তে কোচ হিসেবে আসার পর তার ভবিষ্যত আরও পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। ডিসেম্বরে লরিসের বয়স ৩৫ হবে এবং তার এক সূত্র ইএসপিএনকে জানিয়েছে, ফ্রান্স জাতীয় দলের অধিনায়ক তার চুক্তির শেষে মেজর সকার লিগ (এমএলএস)-এ ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যেতে আগ্রহী। তার যে অভিজ্ঞতা এবং খ্যাতি আছে, এতে কম প্রস্তাব পাবেন না।

     

    আয়াক্সের ১ নম্বর গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার ডোপিং আইন ভঙ্গের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ৪ নভেম্বর। আগামী গ্রীষ্মে তিনিও ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাবেন এবং ইন্টার মিলানের সাথে তার চুক্তি করার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ভিয়ারিয়ালের সের্হিও আসেনহোর চুক্তির মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে।

     

    রাইট ব্যাক: নুসাইর মাজরাউই (আয়াক্স)

    আর্সেনাল এবং লিডস ইউনাইটেড দুই দলই আয়াক্সের মাজরাউইকে স্কাউট করছ। মরক্কোর রাইট-ব্যাক জানুয়ারিতে একটি নন-ডাচ ক্লাবে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী।
     

    ২৩ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার ৮ বছর বয়স থেকে আয়াক্সে খেলছেন। এই মৌসুমে দারুণ সূচনা করেছেন তিনি। এরিক টেন হাগের দলের হয়ে চারটি গোল এবং তিনটি এসিস্ট করেছেন। চেলসি রাইট-ব্যাক সেজার আজপিলিকুয়েতাকেও দলে ভেড়াতে চোখ রাখবে বড় ক্লাবগুলো। আর ভিয়ারিয়ালে সার্জ অরিয়েরের এক বছরের চুক্তি আগামী জুনে শেষ হবে।

     

    সেন্টার ব্যাক: অ্যান্টনিও রুডিগার (চেলসি)

     

    জার্মান এই ডিফেন্ডারের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে বায়ার্ন মিউনিখ এবং রিয়াল মাদ্রিদ। সাবেক কোচ ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের অধীনে বাদ পড়ে যাওয়া ২৮ বছর বয়সী রুডিগার থমাস তুখেলের অধীনে চেলসিতে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন নতুন করে। গত মৌসুমে ক্লাবের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রেখেছেন। তবে তিনি এখনও নতুন কোনো চুক্তি করেননি চেলসির সঙ্গে, এবং বড় ক্লাবগুলি ইতিমধ্যে ফ্রি ট্রান্সফারে তাকে দলে ভেড়াতে মুখিয়ে আছে। 

     

    সেন্টার ব্যাক: নিকোলাস সুলে (বায়ার্ন মিউনিখ)

    সুলের ভবিষ্যত অনেকটা নির্ভর করছে বায়ার্ন রুডিগারকে নিতে আগ্রহী হবে কি না সেটার ওপর।

    তবে সুলে আগামী গ্রীষ্ম পর্যন্ত তার চুক্তি বাড়ানোর প্রস্তাবে ক্লাবকে এখনও সম্মতি দেননি। ২৬ বছর বয়সী সুলে যে কোন শীর্ষ লিগের দলগুলোর বড় আকর্ষণ হবেন সামনের ট্রান্সফার উইনডোতে।

     

    আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন (চেলসি), জেসন ডেনায়ের (লিওঁ) এবং ম্যাথিয়াস গিন্টারেরও (বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখ) চুক্তির শেষ ৬ মাস চলছে। 

     

    লেফটব্যাক: মার্সেলো (রিয়াল মাদ্রিদ)

    ১৫ বছর ধরে রিয়াল মাদ্রিদে খেলা ৩৩ বছর বয়সী মার্সেলো আগামী জুনে চুক্তি শেষে ছাড়তে পারেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যু। মার্সেলোর বয়স কিছু ক্লাবকে নিরুৎসাহিত করবে, এবং  তিনিও সম্ভবত বেতনের ব্যাপারে ছাড় দিতে চাইবেন না। কারণ এখনও তিনি বিশ্বের শীর্ষ লেফট ব্যাকদের একজন।

     

    গ্রীষ্মের দলবদলে লিলের রেইনিল্ডো মান্ডাভা, আরবি লাইপজিগের মার্সেল হ্যালস্টেনবার্গ এবং রিয়াল সোসিয়েদাদের আইহেন মুনিওজ কম বয়সী এবং কম বেতনের ফ্রি এজেন্ট বলে বিকল্প পছন্দ হতে পারেন। 

     

    ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার: মার্সেলো ব্রোজোভিচ (ইন্টার মিলান)

    বিভিন্ন সূত্র ইএসপিএনকে বলেছে যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আগামী গ্রীষ্মে একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের দিকে নজর দেবে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্কাউটদের জন্য ভাল খবর হল বাজারে ‘দামে কম, মানে ভালো’ মিডফিল্ডার রয়েছেন।

     

    ইন্টার মিডফিল্ডার ব্রোজোভিচ ফ্রি এজেন্টদের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রাক্তন সাবেক কোচ কন্তের সাথে কাজ করার জন্য স্পার্সে যাওয়ার কথা চলছে। মার্শেইয়ের বুবাকার কামারা, মনশেনগ্লাডবাখের ডেনিস জাকারিয়া এবং বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের অ্যাক্সেল উইটসেলও আগামী গ্রীষ্মে ফ্রি এজেন্ট হতে পারেন।

     

    সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: পল পগবা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)

    বিভিন্ন সূত্র গত মাসে ইএসপিএনকে জানিয়েছে ইউনাইটেড মেনে নিচ্ছে পগবা তার চুক্তি বাতিল করবেন এবং আগামী গ্রীষ্মে তিনি ফ্রি এজেন্ট হবেন। যদিও জানুয়ারিতে ২৮ বছর বয়সীকে ছেড়ে দেওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই রেড ডেভিলদের।

     

    এই সপ্তাহে ফ্রান্স দলের সঙ্গে থাকাকালীন উরুর চোট পাওয়ায় পগবাকে দুই মাসের জন্য মাঠের বাইরে থাকা লাগতে পারে। তিনি চোট সেরে ফেরার পর ইংল্যান্ড ছাড়া যেকোনো দেশের ক্লাবের সাথে ফ্রি এজেন্টে হিসেবে আলোচনা করতে পারবেন।

     

    রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস এবং পিএসজি সকলেরই পগবাকে দলে নিতে অনেকদিন ধরেই আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু তিনি যদি গ্রীষ্মের দলবদলে ফ্রি এজেন্ট হন তবে ইংলিশ দলগুলোও তাকে প্রিমিয়ার লিগে রাখার জন্য চেষ্টা করবে। 

     

    মিডফিল্ডার: ফ্র্যাংক কেসি (এসি মিলান) 

    আগামী মাসে ২৫ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া এসি মিলান মিডফিল্ডার কেসিকে দলে নিতে

    পিএসজি এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দুই দলই আগ্রহী, ফ্রি এজেন্ট হলেও গ্রীষ্মের দলবদলে ভালো প্রস্তাব পেতে পারেন তিনি।

     

    কেসিকে নতুন চুক্তির জন্য অনেকবার প্রস্তাব দিয়েও রাজি করাতে পারেনি মিলান। সেক্ষেত্রে তাকে বাড়টি বেতনেরও প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তিনি যদি প্রস্তাব মেনে না নেন তাহলে কেসি হতে পারেন দারুণ একজন ফ্রি এজেন্ট।

     

    ফরোয়ার্ড: পাওলো দিবালা (জুভেন্টাস)

    যদিও পুরো মৌসুম জুড়ে রিপোর্ট এসেছে যে জুভেন্টাসের সঙ্গে নতুন চুক্তির কাজ প্রায় সেরেই ফেলেছেন দিবাল। তবে এখনো কাগজে কলমে কিছু হয়নি। এ অবস্থায়, জানুয়ারির পর থেকে ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার গ্রীষ্মের দলবদলে ইতালি ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের ক্লাবে যোগ দিতে পারেন। জুভেন্টাস আপাতত সেই শংকায় আছে।

     

    দিবালা ২০২০ সালে টটেনহামে যোগ দেয়ার খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। গোল করার দক্ষতার কারণে ফরোয়ার্ড হিসেবে ফ্রান্স এবং স্পেনের পাশাপাশি প্রিমিয়ার লিগের তার প্রতি দলগুলোর আগ্রহ থাকবে। 

     

    ফরোয়ার্ড: কিলিয়ান এমবাপে (পিএসজি)

    গ্রীষ্মকালীন দলবদলের শেষের দিকে পিএসজি ফরোয়ার্ড এমবাপে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন বোর্ডকে, কিন্তু চুক্তিটি হয়নি। তিনি পিএসজিতে তার চুক্তিটি বাতিল করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। যদিও রিয়ালে চলে যাওয়া ফ্রান্সের এই খেলোয়াড়ের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য ঠিকানা। তবে  পিএসজি ২২ বছর বয়সী এমবাপের সাথে একটি নতুন চুক্তি যে কোনো মূল্যে করতে চায়।

     

    ফ্রি ট্রান্সফারে এমবাপেকে দীর্ঘমেয়াদে দলে নিতে লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার সিটি দুই দলই আগ্রহী হতে পারে। 

     

    ফরোয়ার্ড: উসমান দেম্বেলে (বার্সেলোনা)

    ২০১৭ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ১০৫ মিলিয়ন ইউরোতে বার্সেলোনাতে আসার পর একের পর এক ইনজুরি ভুগিয়েছে দেম্বেলেকে। ৪ বছরে ক্যাম্প ন্যুতে সব মিলিয়ে মাত্র ১১৯টি ম্যাচ খেলেছেন দেম্বেলে। তার ফিটনেস সমস্যা সত্ত্বেও দেম্বেলে এখনও নজর কাড়তে পারেন শীর্ষ ক্লাবের। ফিট থাকলে তাকে নেওয়ার জন্য আগামী গ্রীষ্মে বড় দলগুলো পকেট ফাঁকা করার চেষ্টা করতে পারে।