শীত শুভ্র তুষারে ঘাম ঝরিয়ে প্যারিসের 'গ্যালাকটিকোস'-এর জয়
ম্যাচের ফল দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। সেতঁ এতিয়েনকে তিন গোল দিলেও ম্যাচটা সহজেই ড্র হতে পারত, কিংবা হেরেও যেতে পারতেন প্যারিজিয়ানরা। স্কোয়াডে যখন মেসি-রামোস-নেইমার-এমবাপে-দি মারিয়ারা প্রথমবারের মত একসঙ্গে নেমেছিলেন, তাদের সঙ্গে এই পারফরম্যান্স একেবারেই যায় না। তবে তীব্র তুষার ঝড় আর দশ জনের এতিয়েনের পার্ক করা বাস ভেঙ্গে মেসি করেছেন অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক। তার প্লেমেকিং নৈপুণ্যে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরেছে প্যারিস সেতঁ ‘গ্যালাকটিকোস’রা।
অবশ্য জয়ের পরও খুশি হবার সুযোগ নেই পিএসজির। চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে নেইমারকে। প্রাথমিকভাবে বেকায়দায় পড়ে গিয়ে গোড়ালির চোট বেশ গুরুতরই মনে হয়েছে। আনুষ্ঠানিক রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে কতদিনের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে প্যারিসের নাম্বার টেনকে।
তীব্র তুষারপাতের মাঝে ম্যাচের ছন্দে বারবার ছেদ পড়েছে প্রথমার্ধে একের পর এক ফাউলে। ঠিক পাঁচ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি, যদি না নেইমারের করা গোল অফসাইডে বাতিল হয়ে যেত। সঙ্গে ম্যাচ শেষে নামের পাশে চার অ্যাসিস্ট থাকতে পারত মেসির।
তবে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তারে প্রথমার্ধে পিএসজির থেকে সেতঁ এতিয়েনই ছিল এগিয়ে। ট্রানজিশন আর কাউন্টারে পিএসজির হাই লাইন ডিফেন্সকে ভেঙ্গে বারবার সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে খাজরির বাঁকানো ক্রস রামোসের মাথা ছুয়ে চলে যায় পিএসজির ডি বক্সে। বোদেবোজের মারা শট ডোনারুম্মা ঠেকালেও বিপদমুক্ত হয়নি, সেই সুযোগ মিস করেননি এতিয়েন উইঙ্গার বোয়াঙ্গা। প্রথমে অফসাইড বলে বাতিল হলেও ভিএআরে দেখা গেল, ঠিক পজিশনেই ছিলেন সবাই। ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে ব্যাকফুটে পিএসজি।
এতিয়েনের ইংলিশ গোলকিপার এটিয়েন গ্রিন পোস্টে ছিলেন অনবদ্য। এমবাপের দু’টি শট ঠেকিয়েছেন; বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে আগে বেরিয়ে এসে বিপদমুক্ত করেছেন মারিয়ার একটি নিচু ক্রস। সব ঠিকঠাক থাকলেও বিপত্তি বাধে প্রথমার্ধের একদম শেষ মুহূর্তে। শেষ ডিফেন্ডার হিসেবে এমবাপেকে উঁচু ট্যাকল করায় সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার কোলোদজিয়েশজাক। বক্সের বেশ বাইরে থেকে মেসির নেওয়া ফ্রি কিক থেকে বল পান মার্কিনিওস, তার হেডে ম্যাচে সমতায় ফিরে পিএসজি।
দশজনের দলে পরিণত হওয়া এতিয়েনের সামনে ডিফেন্ড করে খেলা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। ৫-৩-১ ফরমেশনে ‘বাস পার্ক’ করে দ্বিতীয়ার্ধে তারা একের পর আক্রমণ ঠেকিয়ে গেছে পিএসজির, এবং ভালোমতই কাজটা করছিলেন। হাড়কাঁপানো শীতের মাঝেও গোল বের করতে ঘাম ঝড়েছে মেসি-নেইমার-এমবাপেদের। সুযোগ নষ্টও করেছেন অনেক। ৬৭ মিনিটে পোস্ট ফাকা পেয়েও স্কোরশিটে নাম তুলতে পারেননি মেসি।
গোল না পেলেও অবশ্য গোল ঠিকই করিয়েছেন এলএম30। ৭৯ মিনিটে তাকে এতিয়েন ডিফেন্ডাররা ঘিরে থাকলেও বক্সের ডানে ফাকায় তিনি খুঁজে নেন দি মারিয়াকে। তার জোরালো এক শট ঠেকাতে পারেননি এটিয়েন গ্রিন, ম্যাচে লিড নেয় পিএসজি। আর একেবারে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে বক্সের বাম থেকে মেসির পাঠানো ক্রসে মাথা ছুঁয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মার্কিনিয়োস, পেয়ে যান নিজের দ্বিতীয় গোলও।
এই জয় নিয়ে লিগ ওয়ানে ১৫ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও শক্ত করলো পিএসজি। তাদের থেকে ১৪ পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয়তে আছে নিস