'হাতাহাতি' আর লাল কার্ডের ম্যাচে অ্যাটলেটিকোর শেষ হাসি; হেরে ইউরোপ থেকে মিলানের বিদায়
৭ মিনিটের ব্যবধানে রেফারির পকেট থেকে বের হলো ৬ কার্ড। তিনটি লাল, আর তিনটি হলুদ। কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে লাল কার্ড দেখলেন কারাসকো; অন্যদিকে দুই মিনিট পর আনহেল কোররেয়াকে গলায় কনুই মেরে লাল কার্ড পেলেন পোর্তোর ওয়েনডেল। ডাগআউটে দুই দলের কোচিং স্টাফ-খেলোয়াড়দের রীতিমত ধস্তাধস্তি অবস্থা! রেফারি লাল কার্ড দেখালেন আরও এক পোর্তোর খেলোয়াড় এবং সহকারি কোচকে। নাটকীয়তা এখানেই শেষ নয়! এস্তাদিও দি দ্রাগাও'র অস্বস্তিকর ম্যাচে শেষ ৫ মিনিটে ৩ গোলের থ্রিলারে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট নিশ্চিত করেই বেরিয়ে আসছে ডিয়েগো সিমিওনের দল। পোর্তোর জন্য সান্ত্বনা, অন্তত ইউরোপা লিগে খেলতে পারবে তারা। অন্যদিকে লিভারপুলের কাছে ঘরের মাঠে হেরে ইউরোপা লিগেও জায়গা হচ্ছে না এসি মিলানের। 'গ্রুপ অফ ডেথ' এর পয়েন্ট টেবিলে তারা শেষ করেছে সবার নিচে থেকে।
কিন্তু ঘরের মাঠে শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল মিলান। লিভারপুল তাদের প্রথম সারির কয়েকজন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিলেও আজ খেলেছেন সালাহ-মানে-আলিসনরা। কর্নার থেকে ২৯ মিনিটে মিলানকে আনন্দে ভাসান সেন্টার ব্যাক টোমোরি। তার গোলে শুরুতে লিড নেওয়ার আগে অবশ্য কিছুটা খাপছাড়াই খেলছিল দুই দল। মাঝমাঠে টোনালি আর কেসির কারণে লিভারপুলও প্রেসিং স্পেস পায়নি। তবে ৩৬ মিনিটে লিভারপুলের হয়ে সমতা আনেন এই মৌসুমে নিজের সেরা ফর্মে থাকা মো সালাহ। সেই সঙ্গে করেন এই চ্যাম্পিয়নস লিগে তার সপ্তম গোল। ৫৬ মিনিটে ডিভক অরিগি ব্যবধান দ্বিগুন করলে তারপর আর ম্যাচে ফেরা হয়নি এসি মিলানের। শেষ দিকে একবার পেনাল্টি আবেদন করলেও সাড়া দেননি রেফারি। সাত বছর পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় মঞ্চে ফিরলেও খালি হাতে বিদায় নিতে হল ইব্রাহিমোভিচ-মেসিয়াসদের।
মিলানের পরাজয়ে সবচেয়ে বেশি লাভ হত পোর্তোর; অন্তত এক পয়েন্ট ম্যাচ থেকে আদায় করতে পারলেই হত। উলটো ৫৬ মিনিটে গ্রিজমানের গোলে পিছিয়ে পড়ে কনসেইসাউর দল। আর দুই দলের ধস্তাধস্তির পর শেষ ২০ মিনিটে দশজন নিয়ে খেলেছে দুই দলই।
আক্রমণে উঠে জান অবলাককে বার বার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও কাউন্টার অ্যাটাকে ধরা পড়ে যায় পোর্তো। গ্রিজমানের দেওয়া বল জালে জড়াতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি আনহেল কোরেয়ার। আবার ঠিক এক মিনিটের মাথাতেই বল কেড়ে নিয়ে তিন নম্বর গোল করে পোর্তোর জন্য সব আশা শেষ করে দেন রদ্রিগো ডি পল। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ করে পোর্তো; তবে তাতে কোন সমীকরণ বদলায়নি।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে লিভারপুলের নাম আগেই নিশ্চিত ছিল, দ্বিতীয় রাউন্ডে তাদের সঙ্গী হলো এবার অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। প্রথম ইংলিশ ক্লাব হিসেবে অবশ্য চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ জেতার রেকর্ড করে ফেলেছে অল রেডরা। একই কীর্তি আবার নিজেদের গ্রুপ থেকে করেছে ডাচ ক্লাব আয়াক্স। স্পোর্টিং লিসবনকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে তারা; অবশ্য সঙ্গে লিসবনও উঠেছে পরের রাউন্ডে। গ্রুপ সি'র অন্য ম্যাচে ডর্টমুন্ড ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে তুরস্কের চ্যাম্পিয়ন বেসিকতাসকে। ইনজুরি থেকে ফিরে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে এসেই হালান্ড করেছেন ২ গোল; তবে এটাই এই মৌসুমের জন্য শেষ। বাদ পড়ে যাওয়ায় এখন তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে ইউরোপা লিগের জন্য।
গ্রুপ ডি চ্যাম্পিয়নের স্পট নিশ্চিত করেছে রিয়াল ইন্টারকে ২-০ গোলে হারিয়ে। অন্যদিকে রূপকথার মতো ইউরোপে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করা শেরিফ তিরাসপোল চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়লেও ধরে রেখেছে ইউরোপা লিগের স্পট; শেষ ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে শাখতারের সঙ্গে।
রাতের অন্য দুই ম্যাচ ছিল স্রেফ নিয়মরক্ষার। তবে আরবি লাইপজিগের কাছে ম্যান সিটি হেরে বসেছে ১-২ গোলে। আর মেসি-এমবাপে মিলে ক্লাব ব্রুজকে চার গোল দিয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৪-১ গোলে