প্রিমিয়ার লিগে কোভিড হানা: কোন দলে বেশি আক্রান্ত? কার ম্যাচ বাতিল?
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নতুন করে হানা দিয়েছে কোভিডের নতুন ঢেউ। লেস্টার সিটি দলে 'একাধিক' খেলোয়াড়-স্টাফ কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় বাতিল হয়ে গেছে টটেনহামের সঙ্গে তাদের আজকের ম্যাচ। শনিবার ম্যান ইউনাইটেড ও ব্রাইটনের ম্যাচও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে তার কিছুক্ষণ পরই। এ সপ্তাহে আরোও বাতিল হয়েছে ওয়াটফোর্ড-বার্নলি ও ম্যান ইউনাইটেড-ব্রেন্টফোর্ডের ম্যাচ। দ্য অ্যাথলেটিক এর সূত্রমতে, চেলসি দলের তিন খেলোয়াড়েরও এসেছে কোভিড পজিটিভ। সবমিলিয়ে কোভিড সংক্রমণের বড় এক ঝুঁকির মুখে রয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো
কোভিডের নতুন ঢেউ- কারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত?
কোভিডের নতুন ঢেউ প্রথম হানা দেয় ব্রেন্টফোর্ড শিবিরে। দলের ইংলিশ স্ট্রাইকার ইভান টনির কোভিড পরীক্ষা পজিটিভ আসে। ডিসেম্বরের ৭ তারিখে টটেনহামের 'আট জন খেলোয়াড়' ও দলের আরও বেশ কিছু কর্মীর কোভিড পরীক্ষায় পজিটিভ আসে। একইদিনে চেলসিতে কোভিড আক্রান্ত হন মাতেও কোভাচিচ। এক সপ্তাহের মাথায় কোভিডের বড়সড় আঘাত আসে ম্যান ইউনাইটেড, লেস্টার সিটি ও ওয়াটফোর্ড দলে। এছাড়াও ব্রাইটন, অ্যাস্টন ভিলা ও নরউইচ সিটির 'উল্লেখযোগ্য সংখ্যক' খেলোয়াড় ও কর্মীরা করোনা আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে।
কোন কোন ম্যাচ বাতিল? কোনগুলো বাতিল হবার শঙ্কায়?
কোভিডের নতুন ঢেউয়ে টালমাটাল টটেনহামের ম্যাচ প্রথম স্থগিত হয় ডিসেম্বর ১২ তারিখ, ব্রাইটনের বিপক্ষে। সেই সঙ্গে ইউরোপা কনফারেন্স লিগে রেনেঁর বিপক্ষে স্পার্সের ম্যাচটিও পণ্ড হয়ে যায়। ম্যান ইউনাইটেড ও ব্রেন্টফোর্ডের প্রথম সারির কয়েকজনের খেলোয়াড় কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় বাতিল হয় তাদের ডিসেম্বরের ১৪ তারিখের ম্যাচ। ম্যাচ শুরু হবার ঠিক আধ ঘণ্টা আগে বাতিল হয়ে যায় ডিসেম্বরের ১৫ তারিখে ওয়াটফোর্ড আর বার্নলির ফিক্সচার। আর লেস্টার সিটিতে 'আশংকাজনক' হারে কোভিড পজিটিভ আসায় টটেনহামের সঙ্গে আজকের ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ। লিগের পঞ্চম ম্যাচ হিসেবে বাতিল হয়েছে শনিবার ম্যান ইউনাইটেড ও ব্রাইটনের ম্যাচ।
আরও বাতিল হয়েছে যেসব ম্যাচ-
*সাউদাম্পটন-ব্রেন্টফোর্ড
*ওয়াটফোর্ড-ক্রিস্টাল প্যালেস
*ওয়েস্ট হ্যাম-নরউইচ
*লেস্টার সিটি-এভারটন
প্রিমিয়ার লিগ স্থগিতের জোর দাবি
ম্যান ইউনাইটেড-ব্রেন্টফোর্ড ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর আর কোন ম্যাচ স্থগিতের অনুরোধ তারা রাখবে না বলে জানিয়ে দেয় প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ; যদিও এরপর আরও দুইটি ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করেছে তারা। এর আগে টটেনহাম-লেস্টারের ম্যাচ স্থগিতের জোর দাবি জানিয়ে স্পার্স বস আন্তোনিও কন্তে জানান, ম্যাচ স্থগিত না রাখলে কোভিড থেকে সুস্থ হয়েও তার খেলোয়াড়রা বড় ধরণের ইনজুরিতে পড়তে পারেন। এদিকে আজ সংবাদ সম্মেলনে স্কাই স্পোর্টসকে ব্রেন্টফোর্ড ম্যানেজার থমাস ফ্র্যাংক জোর দাবি জানান প্রিমিয়ার লিগ 'সাময়িক সময়ের' জন্য হলেও পুরোপুরি স্থগিত রাখার জন্য।
'কোভিডে নতুন করে আক্রান্ত হবার সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে, এবং সব ক্লাব-খেলোয়াড়ই এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রিমিয়ার লিগের পরবর্তী রাউন্ড এবং একই সঙ্গে ক্যারাবাউ কাপ স্থগিত রাখলে অন্তত ৫-৭ দিন সময় পাওয়া যাবে, ফলে কোভিডের এই নতুন শেকল ভাঙ্গা সম্ভব হবে,'- স্কাই স্পোর্টসকে জানান থমাস ফ্র্যাংক।
তাহলে প্রিমিয়ার লিগ কী স্থগিত হবে?
প্রিমিয়ার লিগের নিয়মাবলি বলছে, শুধুমাত্র অনাকাঙ্খিত বিপর্যয় ঘটবার সম্ভাবনা তৈরি হলে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ লিগের কোন ম্যাচ স্থগিত বা পরবর্তী কোন তারিখে খেলার ব্যাপারে অনুমোদন দিতে পারে। সাম্প্রতিক কোভিড সংক্রমণের কারণে এরই মাঝে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ 'বাড়তি সতর্কতা' মেনে চলার জন্য ক্লাবগুলোকে বার্তা পাঠিয়েছে। ট্রেনিং গ্রাউন্ড ও ক্লাব কম্পাউন্ডে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক, এবং খেলোয়াড়-স্টাফদের দৈনিক কোভিড টেস্ট করানোর ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে ক্লাবগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ, এবং 'সময়মত' সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে তারা।