আর্সেনালকে ডুবিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল কেইনরা
টটেনহাম হটস্পার ৩:০ আর্সেনাল
চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ওয়েস্ট হাম, লিডস; টানা চার ম্যাচে চারটি গুরুত্বপূর্ণ জয় নিয়ে শেষ চার প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলেছিল আর্সেনাল। নর্থ লন্ডন ডার্বিতে হার এড়ালে তা আজই একরকম নিশ্চিত হয়ে যেত। কিন্তু তা আর হলো কই? ১৯৮৩ সালের পর নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহামের বিপক্ষে লিগে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের পরাজয় নিয়ে ফিরল আর্সেনাল। স্পার্সের ৩-০ গোলের জয়ের পথে জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেইন।
চতুর্থ স্থানের লড়াইয়ে টিকে থাকা শেষ দুই ক্লাবের এ লড়াই বলতে গেলে লিগে এই মৌসুমের সর্বশেষ ডুয়েল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লড়াইয়ে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জিততেই হতো স্পার্সের। আর স্পার্সের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে থেকে ম্যাচ শুরু করা আর্সেনালের কোনোভাবে ড্র করতে পারলেই হতো। সেই উদ্দীপনা নিয়েই ম্যাচ শুরু করেছিল আর্সেনাল। স্পার্সের ঘরের মাঠ হলেও ম্যাচে শুরুটা করে সফরকারীরা। ওডেগার্ড, সাকা, এনকেতিয়ার বদৌলতে প্রথম ১০ মিনিটে বেশ কয়েকটি বলার মতো আক্রমণও করে। তবে সেসব আক্রমণ ফেরাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি স্পার্সের রক্ষণকে।
২১ মিনিটে ব্যাকপোস্টে নেওয়া কুলুসেভস্কির ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে সনকে ফাউল করে বসেন আর্সেনাল ডিফেন্ডার সেদরিক। পেনাল্টি পায় স্পার্স। সেই পেনাল্টি কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেন কেইন। এই গোলের সঙ্গে সঙ্গেই ম্যাচের চেহারা বদলে যায়। আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় স্বাগতিকরা। ২৭ মিনিটে লেফট উইং থেকে দুইজন আর্সেনাল ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে শট নেন কেইন। তবে তার শট ব্লক করতে সমর্থ হন তমিয়াসু। ফিরতি বলে এমারসন শট নিলেও তা বারের উপর দিয়ে চলে যা।
এর এক মিনিট আগে সনকে চার্জ করে হলুদ কার্ড দেখেন আর্সেনাল সেন্টার-ব্যাক রব হোল্ডিং। কার্ড দেখার ৬ মিনিটের মধ্যে, ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে আবার সনকে ফাউল করে বসেন এই ডিফেন্ডার। এবার সনকে আটকাতে গিয়ে তার মুখে কনুই দিয়ে আঘাত করে বসেন হোল্ডিং। এই ফাউলের জন্য দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানো হয় তাকে। ১০ জনে নেমে যায় আর্সেনাল।
১০ জনের আর্সেনালের উপর আরও আগ্রাসন চালায় স্পার্স। যার ফলশ্রুতিতে প্রায় সাথে সাথেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় তারা। ৩৭ মিনিটে সনের নেওয়া কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে ব্যাকপোস্টের দিকে বল পাঠান বেনটাঙ্কৌর। প্রায় শুয়ে পড়ে হেড করে সেই বলকে জালে জড়ান কেইন।
২-০ ব্যবধানে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তৃতীয় গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। এদিন দারুণ ছন্দে থাকা কেইন সেন্টারের পর পরই বল নিয়ে ঢুকে পড়েন আর্সেনালের বক্সে। ট্যাকেল করে তার পা থেকে বল সড়াতে পারলেও ফিরতি বলটি গিয়ে পড়ে সনের পায়ে। কালক্ষেপণ না করে এক টাচেই শট নেন সন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একরকম জয় নিশ্চিত করে ফেলে স্পার্স।
এই গোলের সঙ্গে লিগে সনের গোলসংখ্যা এসে দাঁড়ায় ২১-এ। শেষ দুই ম্যাচের তার হাতে থাকছে সালাহকে (২২) টপকে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল্ডেন বুট জিতে নেওয়ার সুযোগ।
ম্যাচের বাকি সময়ের মধ্যেই অবশ্য সালাহকে ধরে ফেলার সুযোগ পেয়েছিলেন সন। ৬৩ মিনিটে বক্সের বাঁপাশ থেকে সনকে উদ্দেশ্য করে ক্রস করেন সেসেইয়ন। কিন্তু গোলকিপারের সামনে একদম ফাঁকা দাঁড়িয়ে থাকা সন ঠিকমতো বল পেলেও বারের উপর দিয়ে মারেন সে শট।
তবে দিনশেষে এই মিস নিয়ে আর চিন্তা করতে হয়নি তার। নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তার দল। আন্তনিয়ো কন্তের সময়ে কতটুকু উন্নতি করেছে স্পার্স, তার আরেকটি স্মারক জয় এটি।
সপ্তাহের শুরুতে অ্যানফিল্ডে গিয়ে ড্র করা স্পার্স এই জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে। তবে এখনও আর্সেনালের চেয়ে এক পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা। আর্সেনাল শেষ দুই ম্যাচ জিতে গেলে আর কিছুই করার থাকবে না কেইনদের।