• Other
  • " />

     

    মৌসুম রিভিউ: মাদ্রিদ, বায়ার্ন, পিএসজি ও ইউরোপের যত ওয়ান-হর্স রেস

    মৌসুম রিভিউ: মাদ্রিদ, বায়ার্ন, পিএসজি ও ইউরোপের যত ওয়ান-হর্স রেস    

    পর্দা নামতে যাচ্ছে ২০২১-২২ ফুটবল মৌসুমের। ঘটনাবহুল এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ ও সিরি আ দুটি জমজমাট শিরোপা লড়াই দেখলেও ইউরোপের বাকি শীর্ষ লিগগুলোর ভাগ্যে ছিল একপেশে যুদ্ধ। চলুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে মৌসুম শেষ করছে ইউরোপের বাকি তিন শীর্ষ লিগ

      লা লিগা: আনচেলত্তির পুরনো ফর্মুলা, একই ফলাফল 

    নাপোলি থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে এভারটনের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকেই কার্লো আনচেলত্তির শেষ দেখে ফেলেছিল। মাদ্রিদে ফিরে যখন আবার পুরনো ফর্মুলা ও পুরনো স্কোয়াডের উপরই ভরসা রাখতে শুরু করেন আনচেলত্তি, তখনও সমালোচনা কম হয়নি। তবে সব সমালোচকের মুখে কুলুপ এঁটে হেসেখেলেই লিগ শিরোপা জিতেছে কার্লোর মাদ্রিদ। 

     

    আনচেলত্তির অধীনে বেনজেমা হয়ে উঠেছেন বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার। ভিনিসিয়াসের সঙ্গে বেনজেমার পার্টনারশিপ এবং মধ্যমাঠে ক্রুস-মদ্রিচ-ক্যাসেমিরো ত্রয়ীকে ব্যবহার করে চার ম্যাচ হাতে রেখে লিগ জিতেছে রিয়াল। মাদ্রিদের রেকর্ড ৩৫তম লিগ শিরোপা এটি। 

     

    লা লিগা মৌসুম এবার বেশ নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে গেলেও শেষ হয়েছে পরিচিত টপ ফোরকে নিয়েই (রিয়াল, বার্সা, অ্যাটলেটিকো, সেভিয়া)। দুইয়ে থেকে লিগ শেষ করতে যাচ্ছে বার্সেলোনা। মেসির প্রস্থান, একের পর এক বাজে ফলাফল, কোমান বরখাস্ত, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বাদ; এতকিছুর পর স্মরণকালের সবচেয়ে ঝঞ্ঝাটময় মৌসুমটি সম্মানজনকভাবেই শেষ করতে যাচ্ছে কাতালান ক্লাবটি। নতুন ম্যানেজার হিসেবে জাভি হার্নান্দেজের আগমনের পর থেকেই আবার স্বকীয়তা ফিরে পেতে শুরু করে ক্লাবটি। শীতকালীন দলবদলে পিয়ের এমেরিক অবামেয়াং, ফেরান তোরেস, আদামা ট্রায়োরের মতো খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়ে আবার মাঠের ফুটবলে কর্তৃত্ব করতে শুরু করে বার্সা। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালকে ৪-০ গোলে হারানোটা নিশ্চিতভাবেই মৌসুমে বার্সার সবচেয়ে বড় অর্জন। এই জয় বার্সাকে একটি নতুন যুগের প্রতিশ্রুতি দিলেও ইউরোপার ম্যাচে ন্যু ক্যাম্পে ফ্রাঙ্কফুর্টের করা সমর্থক বিপ্লবের পর কিছু পুরনো শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। 

     

    এদিকে, বার্সার মতোই একটি টালমাটাল মৌসুম পার করেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা এ মৌসুমের একটি বড় অংশ পার করেছে শীর্ষ চার থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা নিয়ে। তবে মৌসুমশেষে সেই আশঙ্কা থেকে মুক্ত হয়েছে রোহিব্লাঙ্কোরা। ডিয়েগো সিমিওনের অধীনে টানা দশমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল নিশ্চিত করেছে অ্যাটলেটিকো।  

     

    বুন্দেসলিগা: বায়ার্নের দশে দশ 

    ভিয়ারিয়ালের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এবং মুনশেনগ্ল্যাডবাখের কাছে ০-৫ গোলে হেরে ডিএফবি পোকাল থেকে বাদ পড়া বায়ার্ন মিউনিখ কিন্তু বুন্দেসলিগা জিতেছে হেসেখেলেই। 

     

    সাম্প্রতিক সময়ে বুন্দেসলিগা কতটা একপেশে হয়ে গেছে, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ছিল এবারের মৌসুম। আরও বিষদভাবে বললে, মৌসুমের সর্বশেষ ডার ক্লাসিকা। তিন ম্যাচ হাতে রেখে বায়ার্ন মিউনিখের শিরোপা নিশ্চিত করাকে আটকাতে পারত তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ের মতো ক্লাসিকাতেও সহজেই আত্মসমর্পণ করে ডর্টমুন্ড। ৩-১ গোলের এই ম্যাচে ডার ক্লাসিকায় টানা অষ্টম জয় নিশ্চিত করার পর শিরোপার উদযাপন করেছে বায়ার্ন। এ নিয়ে বিগত ১০ মৌসুমের ১০টিতেই শিরোপা জিতল মিউনিখের এই ক্লাব।

    টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথারীতি বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে লেভারকুসেন ও লাইপজিগ। 

     

    লিগ ওয়ান: মেসি-এমবাপের মৌসুম 

    গত মৌসুমে লিগ শিরোপা জেতেনি পিএসজি। এই সংবাদটি হয়তো অনেকে ভুলেই গেছেন, কিংবা কখনো শুনেনইনি। তবে পিএসজির শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন না, এই মৌসুমে ফরাসি লিগের সবচেয়ে আলোচ্য দুই বিষয় ছিল মেসির আগমন ও এমবাপের থেকে যাওয়া। 

    বার্সেলোনা ছেড়ে মেসির প্যারিসে আগমনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল মৌসুম, শেষ হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদকে প্রত্যাখ্যান করে এমবাপের প্যারিসে থেকে যাওয়ার মাধ্যমে। এর মাঝখানে শিরোপা জিতেছে পিএসজি, স্বাভাবিকভাবেই। দুইয়ে থাকা মার্সেইয়ের সঙ্গে মেসিদের পয়েন্টের ব্যবধান ১৬ পয়েন্টের। গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া লিল এবার মৌসুম শেষ করেছে ১০ম স্থানে। 

    তবে কাতারের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে চলা ক্লাবটি দলবদল বাজার ও ফরাসি লিগে একচেটিয়া আধিপত্য গড়ে তুললেও এর বাইরে তেমন সাফল্য পাচ্ছে না। অর্থনৈতিকভাবে প্রতি মৌসুমে শত শত মিলিয়ন ডলার লোকসান দেখছে ক্লাবটি, মহাদেশীয় ফুটবলেও দেখছে না কোনো সাফল্য। এবার রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়েছে ফরাসি ক্লাবটি।