আর্জেন্টিনা-ইতালির ফাইনালিসিমা: আপনার যা যা জানা দরকার

   

বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে নিয়ে মাঠে গড়াবে ফাইনালিসিমা। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১২.৪৫ মিনিটে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মাঠে নামছে ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকা মহাদেশের এই দুই দল। 

ফাইনালিসিমা কী? 

ইতালিয়ান শব্দ ফাইনালিসিমার অর্থ মহা ফাইনাল। এক ম্যাচের এই টুর্নামেন্ট খেলা হয় ইউয়েফার ইউরো চ্যাম্পিয়ন ও কনমেবলের অধীনস্থ কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়নের মধ্যে। 

ফাইনালিসিমার ইতিহাস

সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে ও দ্বিতীয়বার ১৯৯৩ সালে হয়েছিল এই আন্তঃমহাদেশীয় লড়াই। যদিও এই ম্যাচের নাম তখন ফাইনালিসিমা ছিল না। ১৯৮৫ সালের সেই ম্যাচে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল স্বাগতিক ফ্রান্স। ১৯৯৩ সালে ডেনমার্কের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেও টাইব্রেকারে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার হয়ে দিয়েগো ম্যারাদোনার শেষ ট্রফি এটি। 

তখন আন্তঃমহাদেশীয় এই ম্যাচের নাম ছিল আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি কাপ। ১৯৮৩ সালে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ইউয়েফার প্রয়াত সভাপতি আর্তেমিও ফ্রাঞ্চির নামানুসারে চালু হয় এক ম্যাচের এই ফুটবল উৎসব। এই ম্যাচকে অবশ্য কনমেবল-ইউয়েফা কাপ অফ চ্যাম্পিয়ন্সও বলা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম বদলে গেলেও ফাইনালিসিমায় থাকছে আর্তেমিও ফ্রাঞ্চির ছোঁয়া। এবারের জয়ী দলকে দেয়া হবে আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফি। 

ফাইনালিসিমার পুনর্জন্ম

গত বছর ডিসেম্বরে এক সমঝোতা চুক্তি সাক্ষর করেছে ইউয়েফা ও কনমেবল। দুই মহাদেশের ফুটবল  উন্নয়ন, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ফুটবলের সম্প্রসারণই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। এই চুক্তির মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত। নারী ফুটবল, যুব ফুটবল, ফুটসালও এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। সেই পরিকল্পনারই অন্যতম এক অংশ ফাইনালিসিমা। তাই ২৯ বছর পর আবারও চালু হচ্ছে এক ম্যাচের এই টুর্নামেন্ট।

কোন নিয়মে হবে ফাইনালিসিমা?

আর দশটা সাধারণ ফুটবল ম্যাচের মতো থাকছে না ফাইনালিসিমার নিয়ম।  আর্জেন্টিনা-ইতালির এই ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ফল না এলে ভাগ্য নির্ধারণ হবে পেনাল্টি শুট আউটে। অর্থাৎ থাকছে না অতিরিক্ত সময়ের ব্যবস্থা। 

কে কেমন প্রস্তুতি নিল? 

হাইভোল্টেজ এই ম্যাচকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে দুই দলই। লিওনেল মেসিরা অনুশীলন সেরেছেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের হোম গ্রাউন্ডে। ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন ইতালিও তৈরি হচ্ছে তাদের ঘরের মাঠেই। 

টানা দুইবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে বাদ পড়েছে ইতালি। তবে এবারের ধাক্কায় বেশ  টালমাটাল ইতালি শিবির। তারা এই ম্যাচ জিতে হাসি ফেরাতে চাইবে নিশ্চিত। আলাদা নজর থাকবে জর্জো কিয়েল্লিনির ওপর। ফাইনালিসিমা দিয়েই দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন এই ডিফেন্ডার। এই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন জর্জিনহো এবং তরুণ যানিওলো। 

ওদিকে কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার আক্রমণ আবর্তিত হবে লিওনেল মেসিকে ঘিরে। কোপা আমেরিকার গত আসরের সর্বোচ্চ এই স্কোরারের সাথে নজরে থাকবেন লতারো মার্টিনেজ-জুলিয়ান আলভারেজরাও। 

পরিসংখ্যানে কে এগিয়ে?

দুই দলের শেষ ৫ ম্যাচের ৪টিতেই জিতেছে আর্জেন্টিনা। তবে সব মিলিয়ে এগিয়ে আছে ইতালিই। ১৫ ম্যাচের ৬টিতে জিতেছে আজ্জুরিরা। আলিবিসেলেস্তেদের দখলে আছে ৫ জয়। বাকি ৪ ম্যাচ ড্র হয়েছে।