• লা লিগা
  • " />

     

    সিজন প্রিভিউ: বার্সার নতুন শুরু নাকি বায়ান্ন তাসের সর্বস্ব বাজি?

    সিজন প্রিভিউ: বার্সার নতুন শুরু নাকি বায়ান্ন তাসের সর্বস্ব বাজি?    

    উল্লেখযোগ্য দলবদল 

    যারা এলেন: রাফিনহা (৫৮ মিলিয়ন ইউরো), রবার্ট লেভানডফস্কি (৪৫ মিলিয়ন), জুলস কুন্ডে (৫০ মিলিয়ন), ফ্রাঙ্ক কেসি (ফ্রি), আন্দ্রেয়াস ক্রিশ্চেনসন (ফ্রি)। 

    যারা গেলেন: ফিলিপ কুটিনহো (২০ মিলিয়ন), দানি আলভেস (ফ্রি), ক্লেমেন লেংলে (লোন), ফ্রান্সিসকো ত্রিনকাও (লোন), অস্কার মিনগুয়েজা (৩ মিলিয়ন), নেটো (ফ্রি), রিকি পুজ (ফ্রি,), নিকো। 

     

    অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে থাকা বার্সেলোনা এই ট্রান্সফার উইন্ডোতে পুরো বিশ্বকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ইউরোপের সবচেয়ে ঋণগ্রস্ত ক্লাব হয়েও এবছর দলবদল বাজারে বিশ্বের যেকোনো ক্লাবের চেয়ে বেশি খরচ করেছে বার্সা। দলে ভেড়ানো খেলোয়াড়দের নিবন্ধন করতে বিক্রি করেছে ক্লাবের টিভি-সত্ত্বের একটি বড় অংশ (যা ভবিষ্যতে ক্লাবকে ভোগাতে পারে অর্থনৈতিকভাবে)। বলা যায়, বড় একটা জুয়াই খেলেছেন বার্সা সভাপতি লাপোর্তা। সেটা লেগে গেলে ভালো, নইলে আরও বড় মুল্য দিতে হতে পারে বার্সাকে।

    তবে যেসব খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়েছে বার্সা, তাদেরকে ঠিকমত ব্যবহার করা হলে আবারও পরাশক্তি হয়ে উঠতে পারে ক্লাবটি। রাফিনহা, রবার্ট লেভানডফস্কি, জুলস কুন্ডে, ফ্রাঙ্ক কেসি, আন্দ্রেয়াস ক্রিশ্চেনসন; বার্সেলোনার নতুন পাঁচ সাইনিংই পরীক্ষিত। এবং তারা রক্ষণ, মধ্যমাঠ, আক্রমণভাগ; মাঠের তিন অংশেই বার্সাকে বহুগুণ শক্তিশালী করে তুলবে। 

     

    যা জানা আছে 

    মেসি-যুগে ১১ বছরে আটবার লিগ শিরোপা জিতেছিল বার্সা। ২০১৯ সালে যখন শেষবার লিগ জিতেছিল দলটি, তখন ন্যু ক্যাম্পে দাঁড়িয়ে স্বয়ং লিওনেল মেসিই বলেছিলেন, “১১ বছরে আট শিরোপা, এজন্য লিগ জেতাকে আমরা যথেষ্ট মূল্য দিচ্ছি না। কিন্তু কয়েকবছর পরই বোঝা যাবে, কত কঠিন ছিল লিগ জেতা।” এই বক্তৃতার পর আর লা লিগা শিরোপার দেখা পায়নি কাতালান ক্লাবটি। পরের মৌসুমে লিগ টেবিলে শীর্ষে থাকাবস্থায় বরখাস্ত করা হয় ম্যানেজার আর্নেস্টো ভালভার্দেকে। এরপর আর সুদিনের দেখা পায়নি ক্লাবটি। মেসির বুরোফ্যাক্স কাণ্ড ও প্রস্থান, বোর্ড প্রধানদের দুর্নীতি ও জেল-জরিমানা, মহামারী ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েন; সব মিলিয়ে গত তিন বছর যেকোনো বার্সা ভক্তের জন্য ছিল ব্যাপক বেদনাদায়ক। 

    তবে গত বছর ক্লাব সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে গার্দিওলা যুগের গোড়াপত্তন করা হুয়ান লাপোর্তা। ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন গার্দিওলা যুগের পোস্টার-বয় ও ক্লাব কিংবদন্তি জাভি। ক্রুইফ-গার্দিওলার ডিএনএ পুনস্থাপন করার লক্ষ্যেই কাজ শুরু করেছেন জাভি। তার অধীনে দলের খেলার ধরনে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। যে কারণে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে শুরুর পরও গতবার সম্মানজনকভাবেই মৌসুম শেষ করেছে ক্লাবটি। মার্চে রিয়াল মাদ্রিদকে বার্নাব্যুতে ৪-০ গোলে হারানো ছিল জাভি-বিপ্লবের হাইলাইটস। এবার নতুন সাইনিংদের নিয়ে সেই বিপ্লবকে প্রলম্বিত করবেন জাভি এবং ক্লাবকে বড় কোনো শিরোপা জেতাবেন, সেটিই প্রত্যাশা বার্সা ভক্তদের। 

    সেদিকে ভালোভাবেই এগুচ্ছে বার্সা। প্রিসিজনে ছয় ম্যাচে খেলে অপরাজিত বার্সা, জুভেন্টাসের বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্র ব্যতীত জাভির শিষ্যরা জিতেছে সবকটি ম্যাচই। রাফিনহার গোলে জিতেছে প্রিসিজন এল ক্লাসিকোও (১-০)। এছাড়া ইন্টার মায়ামি ও ন্যাসিওনালকে ৬-০ গোলে হারানোর রেকর্ডও আছে বার্সার।

     

    বড় প্রশ্ন: নতুন সাইনিংরা মানিয়ে নিতে পারবেন? 

    সাম্প্রতিক সময়ে বার্সার সবগুলো বড় সাইনিংই বলতে গেলে ফ্লপ। ফিলিপ কুটিনহো, উসমান ডেম্বেলে, আন্তোয়ান গ্রিজমান; বার্সা ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল তিন সাইনিংয়ের একজনও ক্লাবে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারেননি। সেই চক্র থেকে বেড়িয়ে রাফিনহা-লেভানডফস্কিরা মানিয়ে নিতে পারেন কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।   



     

    শেষ পাঁচ মৌসুমে বার্সেলোনা     

    ২০২১-২২: ২য়  

    ২০২০-২১: ৩য়  

    ২০১৯-২০: ২য়  

    ২০১৮-১৯: ১ম 

    ২০১৭-১৮: ১ম 

     

    প্যাভিলিয়নের প্রেডিকশন: দ্বিতীয়।