ম্যানচেস্টার ডার্বি: হালান্ড- ফোডেনে বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
ম্যানচেস্টার সিটি ৬:৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
লিগে টানা চার ম্যাচে জয় নিয়ে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে পা রেখেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু এরিক টেন হাগের অধীনে বদলে যাওয়া রেড ডেভিলদেরও ‘ফুটবলীয় শিক্ষা’ দিয়ে ছাড়ল প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। রোববার লিগের শো-ডাউন ম্যাচে আরলিং হালান্ড ও ফিল ফোডেনের জোড়া হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডকে ৬-৩ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।
সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ অভিষেক হওয়ার পর থেকেই লিগের সকল ডিফেন্ডারদের ধুঁকিয়ে যাচ্ছেন হালান্ড। ডার্বির আগেই লিগে সাত ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। তাই টেলিগ্রাফের এক কলামে ইউনাইটেড ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে ফুটবল বিশ্লেষক জ্যামি কারাগার উপদেশই দিয়েছিলেন, ম্যাচে হালান্ডের কাছে না ঘেঁষতে। পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে মার্টিনেজ দানবীয় হালান্ডের সঙ্গে দ্বৈরথে শারীরিকভাবে পেরে উঠবেন না, সেই চিন্তা থেকেই এই উপদেশ।
দলের মূল ডিফেন্ডারকে এভাবে ‘হেয়’ করায় ইউনাইটেড ভক্তরা ক্ষিপ্ত হলেও ম্যাচে কারাগারের উপদেশই মানতে দেখা যায় মার্টিনেজকে। শুরুতে হালান্ডকে মার্ক করার দায়িত্ব নিলেও কয়েক গোল হওয়ার পর হালান্ড-ফোডেন থেকে দূরে কোনো নিরপেক্ষ পজিশনে চলে যেতে দেখা যায় তাকে। শুধু মার্টিনেজ না, এদিনে ভুগেছেন ইউনাইটেডের সকল ডিফেন্ডারই। ডি ব্রুইনা, হালান্ড ও ফোডেনের লিংক-আপের সামনে প্রায় সময়ই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ইউনাইটেড রক্ষণ।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটে লেফট উইং থেকে বার্নার্দো সিলভার লো ক্রসে শট নিয়ে গোলের খাতা খুলেন ফোডেন। ৩৪ মিনিটে কর্নার ও ৩৭ মিনিটে ডিবক্সের সামনে থেকে ডি ব্রুইনার পাঠানো ক্রস থেকে দুটি গোল করেন হালান্ড। মধ্য বিরতির আগে ফোডেনকেও জোড়া গোল পেতে সাহায্য করেন হালান্ড।
৪-০ ব্যবধানে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে অগোছালো ইউনাইটেড রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে আরও একটি করে গোল বাগিয়ে নেন হালান্ড এবং ফোডেন। পূর্ণ করেন তাদের হ্যাটট্রিক। ম্যানচেস্টার ডার্বির ১৪২ বছরের ইতিহাসের এর আগে হ্যাটট্রিক হয়েছে মাত্র একটি। আর রোববারের ডার্বিতে সিটির দুই খেলোয়াড় নাম লিখিয়ে ফেললেন সেই তালিকায়।
সিংহভাগ ইউনাইটেড ভক্ত মধ্য বিরতিতেই মাঠ ছেড়ে দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে তাদের জন্য ইতিবাচক কিছু মুহূর্ত উপহার দিতে সক্ষম হয় টেন হাগের শিষ্যরা। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৬ মিনিটে ডিবক্সের অনেক বাইরে থেকে নেওয়া বাঁকানো এক শটে এডারসনকে পরাস্ত করতে সক্ষম হন অ্যান্টনি। ৮৪ মিনিটে বক্সে পাওয়া এক রিবাউন্ডে হেড করে গোল করেন অ্যান্থনি মার্শিয়ালও। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে স্কোরলাইন ৬-৩ বানান মার্শিয়াল।
ডার্বিতে রাজকীয় জয় নিয়ে শুধু ম্যানচেস্টারে না, যেন পুরো লিগেই রাজত্ব করার বার্তা পৌঁছে দিল সিটি। গত পাঁচ মৌসুমে চারবার লিগ জেতা সিটিজেনদের সঙ্গে টক্কর দেওয়া যে এবারও সহজ হবে না, সে বার্তা হয়তো ইতোমধ্যে পেয়েও গেছে লিগের বাকি সব দল।