ফুটবলকে বিদায় লুকা টনির
গত মৌসুমে তাঁর বয়স ছিল ৩৮। বুড়ো বয়সেই শেষ মৌসুমে সিরি আ’র সেরা গোলদাতার পুরস্কার জিতেছিলেন লুকা টনি। তবে এক মৌসুম পার হতেই যেন বার্ধক্য আঁকড়ে ধরেছে এই ইতালিয়ানকে। গত মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা এই মৌসুমে গোল করেছেন মাত্র পাঁচটি! নিজের পারফর্মেন্সের এমন ভরাডুবির পর হয়ত নিজেও বুঝতে পেরেছেন, বয়স হয়ে গেছে ঢের! আর তাই মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই বুট তুলে রাখার ঘোষণা দিলেন ‘০৬ বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার।
লুকা টনির পারফর্মেন্সের মতোই এই মৌসুমে ভরাডুবি খেয়েছে তাঁর দলও। রেলিগেশন এড়াতে না পেরে এরই মধ্যে সিরি বি তে অবনমন হয়েছে হেলাস ভেরোনার। আর তাই অবসরের জন্য মৌসুমের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করেন নি এই ইতালিয়ান কিংবদন্তি। ঘরের মাঠ স্টাডিও বেন্টেগোডিতে আসন্ন জুভেন্টাসের বিপক্ষের ম্যাচ দিয়েই ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন, “অনেক বছর ধরে ফুটবল খেলার পর মনে হচ্ছে বিদায় নেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।”
গত বছরের আগস্টে অবসরের ব্যাপারে এক সংবাদ সম্মেলনে টনি জানিয়েছিলেন, “যখন এক মৌসুমে তিন গোল করবো এবং আমি আর তেমন প্রতিযোগিতামূলক থাকবো না কেবল তখনই অবসরে যাওয়ার কথা চিন্তা করবো।” এই মৌসুমে তাঁর গোল সংখ্যা তাঁকে হয়ত গত আগস্টের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে, “সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। বিদায়ের সিদ্ধান্তটা নেয়াও কঠিন ছিল। আজ থেকে রবিবার পর্যন্ত আমার মাঝে আনন্দ ও কষ্টের মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলবে।”
ইতালির সর্বশেষ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন লুকা টনি। তাছাড়া ২০০৫/০৬ মৌসুমে ফিওরেন্তিনার হয়ে সিরি আ’র সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। ‘০৭/০৮ মৌসুমে একই কীর্তি গড়েছিলেন বুন্দেসলিগায়ও; বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে। তবে চলতি মৌসুমটা যে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় ছিল সেটা মানছেন টনিও, “অনেক কারণেই এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় ছিল। ব্যাপারটা সত্যিই হতাশাজনক। কোচের (গিগি ডেলনেরি) সাথে আমার মোটেই ভালো সম্পর্ক ছিল না। যাই হোক, এ বিষয় নিয়ে এখন কথা বলার সময় নয়। এই মৌসুমে আমরা দু’জনই ব্যর্থ ছিলাম।”
দীর্ঘ ২১ বছরের ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালেও ফুটবলের সাথে থাকার ইচ্ছার কথাই জানালেন লুকা টনি, “ইতালির ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের জ্ঞানসম্পন্ন লোকের অভাব রয়েছে অর্থাৎ প্রাক্তন ফুটবলার। আমার মনে হয় খেলাটির সাথে জড়িত থাকার অধিকার ফুটবলের অভিজ্ঞ কারোরই রয়েছে।” ফুটবলের সাথে থাকাতে হেলাস ভেরোনায় চাকরি পেলে বেশ খুশিই হবেন টনি। তবে কোচ হওয়ার ইচ্ছা নেই বলেই জানালেন এই ইটালিয়ান, “হেলাসের জন্য আমার একটা টান রয়েছে। এখানে নতুন কোন চাকরি শুরু করতে পারলে খুব খুশি হবো। কিন্তু, সেটা অবশ্যই কোচের দায়িত্ব না।”