• অন্যান্য
  • " />

     

    বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনার প্রেম, মোসাদ্দেকের 'নো বল' : অন্যরকম ২০২২

    বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনার প্রেম, মোসাদ্দেকের 'নো বল' : অন্যরকম ২০২২    

    বিদায় নিচ্ছে ২০২২ সাল। তবে এই বছর দিয়ে গেছে খেলার মাঠের অনন্য সব স্মৃতি। ক্রীড়াঙ্গনে এত ঘটনাবহুল বছর আগে এসেছে কিনা, তা নিয়ে একটা জরিপও করে ফেলা যায় চাইলে। এশিয়া কাপ, টি--টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ফিফা বিশ্বকাপ, টেনিসের গ্র্যান্ডস্ল্যাম; বছর জুড়েই ব্যস্ত ছিল খেলার মাঠ। দারুণ সব স্মৃতির সাথে যোগ হয়েছে বিদায়ের সুর। এই পথচলায় হারিয়েছি চিরপরিচিত মুখ।  অবাক করেছে মাঠ ও মাঠের বাইরের কিছু ঘটনাও। দেখার পর অস্ফুটস্বরে আপনি হয়তো বলে উঠেছেন ‘এমনও হয় নাকি!’ কোনো ঘটনা দেখে হয়তো হেসেছেনও বেশ। আবার অবিশ্বাসে মুখও চেপেছেন হয়তো! 

    ‘নো বল’ বিভ্রাটে পাগলাটে এক টি--টোয়েন্টি

    সুপার টুয়েলভে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি--টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় জয় পায় বাংলাদেশ। তবে সেই ম্যাচ জয়ের আগে শেষ ওভারে যে নাটকের জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশ সেটাকে পাগলাটে বলা যায় অনায়াসে। 

    ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। দ্বিতীয় বলে ব্র্যাড ইভান্সকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মোসাদ্দেক হোসেন। পরের দুই বলে লেগ বাই থেকে চার ও এনগারাভার ছক্কায় জয়ের দিকে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। পাঁচ নম্বর বলে উইকেট ছেড়ে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন এনগারাভা। শেষ বলে স্ট্রাইকে ছিলেন নতুন ব্যাটার ব্লেসিং মুজারাবানি। ব্যাটে বলে করতে পারেননি তিনি। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দিয়ে ৩ ৪ রানের জয়ের আনন্দে মাতেন। 

    বাউন্ডারি লাইনের কুশন সরিয়ে ম্যাচ প্রেজেন্টেশনের জন্য তৈরি হয়ে যান প্রোডাকশন টিমের ফিল্ড ক্রুরা। দুই দল করমর্দন করে মাঠও ছেড়ে দেয়। এর মধ্যেই ঘটে যায় সেই অঘটন। থার্ড আম্পায়ার সেই ডেলিভারির রিপ্লে দেখে অন-ফিল্ড আম্পায়ার মারাইস এরাসমাসকে জানান সেটি নো বল। কারণ উইকেটের আগ থেকে বল ধরেছিলেন সোহান, নিয়মানুযায়ী সেটা নো বল। আম্পায়াররা আবার ডেকে পাঠান দুই দলের ক্রিকেটারদের। আবারও ম্যাচ জেতার সুযোগ আসে জিম্বাবুইয়ানদের সামনে। তবে শেষ বলে আবারও পরাস্ত হন মুজারাবানি। 

    ফুটবলের সুতোয় গাঁথা পড়ল বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনা 

    ফুটবল বিশ্বকাপ এলেই বাংলাদেশের চারপাশ ছেয়ে যায় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকায়। গাছের মগডালে, বিল্ডিংয়ের ছাদে দেখা যায় সারি সারি পতাকা। রাত জেগে দল বেধে চলে প্রিয় দলের খেলা দেখা। তবে এবারের ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের বাংলাদেশি ভক্তদের উন্মাদনা ছাপিয়ে গেছে সবকিছুকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে সেই খবর। মেক্সিকোর বিপক্ষে লিওনেল মেসির অসাধারণ এক গোলের পর সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদযাপন। ফিফার টুইটার হ্যান্ডলেও দেখা গেছে সেই ভিডিও। 

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-মহসীন হলের মাঠে বড় পর্দায় রাত জেগে খেলা দেখেছেন লিওনেল মেসিদের ভক্তরা। ড্রোন শটে তোলা ছবিতে রাতের আধার ফুঁড়ে কেবল আর্জেন্টিনার আকাশি-সাদা জার্সিই দেখা গেছে। এই উন্মাদনার খবর পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনাতেও। রোজারিও, বুয়েনোস আইরেসের রাজপথে আর্জেন্টাইনদের হাতে ছিল বাংলাদেশের পতাকাও। লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ ওঠার পর সেই উদযাপনেও আর্জেন্টিনার নাগরিকরা সামিল হয়েছিলেন বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে। এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশের এই অকুণ্ঠ সমর্থনের জবাবে আর্জেন্টাইনরা সাকিব আল হাসানদের সমর্থনে একটা ফেসবুক গ্রুপই খুলে বসেছেন। সেই গ্রুপ দুই দেশের ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্প্রীতির সেতুবন্ধন। 

    সম্পর্ক বদলে গেলে একটি পলকে…

    বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে সৌদি আরবের বিপক্ষে খেলছিল পোল্যান্ড। গ্যালারিতে এক ভক্ত সেই খেলা দেখছিলেন সৌদি আরবের জার্সি গায়ে। ম্যাচের ৮২ মিনিটে রবার্ট লেওয়ানডফস্কি গোল করার পরই সেই ভক্ত ঘটান এক মজার কান্ড। গায়ে থাকা সৌদি আরবের জার্সি খোলার পর দেখা যায় এর নিচে থাকা পোল্যান্ডের জার্সি। সাথে চিৎকার করতে থাকেন লেওয়ানডফস্কির নামে। সেই ভিডিও নজর এড়ায়নি পোলিশ অধিনায়কের। সেই দর্শককে ডেকে নিয়ে নিজের একটি জার্সিও উপহার দিয়েছেন এই স্ট্রাইকার। 

    যেতে নাহি দিব হায়…

    সিডনি থেকে মেলবোর্ন। ৭০০তম টেস্ট উইকেট, কিংবা ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের সেই ‘বল অফ দ্য সেঞ্চুরি’। দুর্দান্ত গুগলি -ফ্লিপার-ড্রিফটারে বিভ্রান্ত ব্যাটার। লেগ স্পিনের সমার্থক হয়ে ওঠা, মাঠ মাতানো শেন ওয়ার্ন চিরতরে চলে গেছেন এই বছরের মার্চ মাসে। এই কিংবদন্তির চির বিদায়ে শোকের ছায়ায় ঢাকা পড়েছিল গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। এখনও সময়ে সময়ে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন ওয়ার্ন। তার স্মরনে এক মিনিটের নীরবতা নামে ক্রিকেট মাঠে। বক্সিং ডে টেস্টেও তাই ফিরে আসেন লেগ স্পিনের এই জাদুকর। 

    শেন ওয়ার্নেরই দীর্ঘদিনের সতীর্থ অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন এই বছরের মে মাসে। এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান তারকা।