দাঁতে দাঁত কামড়ে অ্যাটলেটিকোর মাঠ থেকে বার্সার তিন পয়েন্ট উদ্ধার
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ০:১ বার্সেলোনা
গতকাল রিয়াল মাদ্রিদ হেরে বসায় টেবিলের শীর্ষস্থানটা ফাঁকাই ছিল বার্সেলোনার জন্য। মেট্রোপালিতানো স্টেডিয়ামে তাই জেতার জন্য বাড়তি চাপ ছিল না পেদ্রিদের কাঁধে। তবে ডেম্বেলের গোলে শুরুতেই লিড পাওয়া বার্সা ম্যাচের বাকি সময় দাঁতে দাঁত চেপে অ্যাটলেটিকোর সব প্রতিরোধ সয়ে যায়, মাঠ ছাড়ে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে।
বার্সেলোনার বিপক্ষে সর্বশেষ দেখায় ২-৪ গোলে হেরেছিল অ্যাটলেটিকো। ডিয়েগো সিমিওনের দলের জন্য যেকোনো ম্যাচেই চার গোল হজম করাটা একটি অস্বাভাবিক ব্যাপার। গত ম্যাচের স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে এবার অবশ্য ইতিবাচকভাবেই ম্যাচ শুরু করে অ্যাটলেটিকো। কিন্তু বুস্কেটস-ডি ইয়ং-পেদ্রি-গাভিদের নিয়ে সাজানো বার্সার মিডফিল্ড দ্রুতই ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। মধ্যমাঠের দখল বেশি রাখা বার্সা জালের দেখা পায় তাদের মিডফিল্ডারদের জন্যই।
২১ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে বল বেশ কয়েকজন অ্যাটলেটিকো খেলোয়াড়কে পাশ কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন পেদ্রি। ঢুকে পাস দেন বক্সের মাঝখানে দাঁড়ানো গাভিকে। অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডার রেইনাল্ডোকে গা দিয়ে সরিয়ে বলটি রিসিভ করেন গাভি, এবং সঙ্গে সঙ্গে পাস দেন বক্সের ডানপাশে ফাঁকা দাঁড়িয়ে থাকা ডেম্বেলেকে। বল রিসিভ না করেই সরাসরি শট নেন ডেম্বেলে, যা ডাইভ দেওয়া হিমনেজের পায়ের নিচ দিয়ে যায় জালে।
কয়েক মিনিটের মধ্যে অ্যাটলেটিকোর এক রক্ষণাত্মক ভুলে বক্সে ফাঁকা বল পেয়ে যান পেদ্রি। সময় নিয়ে শট নেওয়ামাত্রই অবশ্য দৌড়ে এসে সেটি ব্লক করেন অ্যাটলেটিকো ফুলব্যাক নেহুয়েল মলিনা।
প্রথমার্ধের শেষদিকে অবশ্য অ্যাটলেটিকো বেশ কয়েকবার বার্সার রক্ষণকে ভোগাতে সক্ষম হয়। কিন্তু গ্রিজমানের শট ফিরিয়ে দেন টার স্টেগান, হিমনেজ ও রেইনাল্ডোর হেড অল্পের জন্য চলে যায় বাইরে দিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধও একই উদ্যম নিয়ে শুরু করে স্বাগতিকরা। কিন্তু টার স্টেগান ঠিক ফর্মে না থাকলেও তাকে পরাস্ত করতে সমর্থ হয় না গ্রিজমানরা। আর ফ্রন্টফুটে চলে যাওয়া অ্যাটলেটিকোকে ফাঁকি দিয়ে কয়েকটি দুর্দান্ত প্রতি-আক্রমণের সুযোগ পায় বার্সা। দুবার কাউন্টার-অ্যাটাক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করার কাছাকাছি চলে আসেন ডেম্বেলে।
শেষদিকে কোরেয়া, লেমার, কন্ডোবিয়ার মতো বদলি খেলোয়াড়দের নিয়ে বার্সেলোনার রক্ষণকে ভয়ানক চাপে ফেলে দেয় অ্যাটলেটিকো। যোগ করা সময়ের শুরুতে অবশ্য ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা। অ্যাটলেটিকোর একটি আক্রমণ চলাকালে মাঠের অপর পাশে বাহাসে জড়িয়ে পড়েন স্যাভিচ ও ফেরান তোরেস। দুজন গড়িয়ে পড়ে এক অর্থে রেসলিংই শুরু করে দেন মাঠের মধ্যে। ফলস্বরূপ, দুজনই দেখেন লাল কার্ড।
এই লাল কার্ডের মিনিটখানেকের মধ্যে অবশ্য ম্যাচে তাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ করে অ্যাটলেটিকো। শেষ বাঁশি বাজার দুই মিনিট আগে ডান পাশ দিয়ে বক্সের দিকে রান নেওয়া কোরেয়াকে লব পাসে খুঁজে নেন মার্কোস ইয়ুরেন্তে। বল নিয়ে বক্সে ঢুকা কোরেয়া গোলরক্ষকের কাছে এসে কাটব্যাক করেন গ্রিজমানকে। কিন্তু গ্রিজমানের শট মোরাতাকে মার্ক করতে থাকা আরাউহো গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন। অল্পের জন্য সমতা-বঞ্চিত হয় স্বাগতিকরা।
শেষ পর্যন্ত ০-১ গোলেই ইতি টানা হয় ম্যাচের। এই জয়ে টেবিলের শীর্ষে তিন পয়েন্টের লিড পেয়েছে জাভির বার্সেলোনা। আর সিমিওনের দল নেমে গেছে টেবিলের পঞ্চম স্থানে।