শুধু নর্থ লন্ডন না, প্রিমিয়ার লিগের দাদাগিরিই এখন আর্সেনালের
টটেনহাম ০:২ আর্সেনাল
ম্যানচেস্টার ডার্বিতে হারার পর পেপ গার্দিওলা স্বীকার করে নিয়েছিলেন ম্যান সিটির পক্ষে আর লিগ জেতা সম্ভব না। আর্সেনাল আজ সেই স্বীকারোক্তিকে মহিমান্বিত করলো আরেকটি মহাগুরুত্বপূর্ণ জয় দিয়ে। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহাম হটস্পারের মাঠে ছয় বছর পর জয়ের দেখা পেয়েছে গানাররা। আর এই জয়ে টেবিলের শীর্ষে আট পয়েন্টের লিড নিয়েছে মিকেল আরতেতার দল।
এই মৌসুমে ধীরেস্থীরে ম্যাচ শুরু করাকে একরকম অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে স্পার্স। লিগে সর্বশেষ নয় ম্যাচে প্রথমার্ধে তারা মোট গোল পেয়েছে মাত্র একটি। গত ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতলেও প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। এই ম্যাচও নিয়ম মাফিক জড়তা নিয়েই শুরু করে অ্যান্টনিয়ো কন্তের দল।
অপরদিকে আর্সেনাল তাদের স্বাভাবিক ছন্দে ম্যাচ শুরু করলে প্রথম মিনিট থেকেই ব্যাকফুটে চলে যায় স্পার্স। তাদের অবস্থাকে আরও বেগতিক করে গোলরক্ষক হুগো লরিসের নড়বড়ে কিপিং। সপ্তম মিনিটে এই ফরাসির ভুল থেকে গোলই দিয়ে বসেছিলেন এনকেতিয়া। সেবার এনকেতিয়ার দুর্বল শট ফেরাতে সক্ষম হলেও ১৪ মিনিটে এক লঙ্কাকাণ্ডই করে বসেন লরিস। বক্সের ডানপাশ থেকে করা বুকায়ো সাকার ক্রস ফেরাতে গিয়ে বল পাঠিয়ে দেন নিজের জালে। এগিয়ে যায় আর্সেনাল।
২৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পার্টের করা ভলি বার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। তবে আর্সেনালের দ্বিতীয় গোলটি আসে দূরপাল্লার এক শট থেকেই। ৩৬ মিনিটে সাকার বাড়ানো বল নিয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে নেওয়া মাটি কামড়ানো এক শটে লরিসকে পরাস্ত করেন ওডেগার্ড। ২-০ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে স্পার্স খোলস থেকে বেরিয়ে আসে। সন, কেইন, সেসেইয়নরা ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই টানা বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে স্পার্স। এরমধ্যে সবচেয়ে দুর্দান্ত আক্রমণটি আসে সেসেইয়নের পা থেকে। এই লেফট মিড বল নিয়ে বেশ কয়েকজন আর্সেনাল খেলোয়াড়কে পাশ কাটিয়ে বক্সের সামনে থাকা কেইনকে পাস দেন। কেইনও দেরি না করে বক্সের ভিতর রান নেওয়া সেসেইয়নকে খুঁজে নেন সঙ্গে সঙ্গেই। কিন্তু সেসেইয়নের শট ফিরিয়ে দেন রামসডেল।
দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে আর্সেনাল মার্টিনেল্লি, এনকেতিয়ার মাধ্যমে কয়েকবার আক্রমণে উঠলেও গোলের ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি। ওদিকে শেষদিকে পেরিসিচ ও রিচার্লিসনকেও মাঠে নামান কন্তে। কিন্তু দুজনের কেউই আর দলকে ম্যাচে ফেরাতে সক্ষম হননি।
২-০ গোলের এই জয় আর্সেনালের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম স্পার্সের মাঠে জয় পেয়েছে তারা। এই জয়ে শুধু নর্থ লন্ডনে দাদাগিরি করার এখতিয়ারই পায়নি গানাররা, লিগও যে এখন একঅর্থে তাদেরই। অর্ধেক মৌসুমে, ১৮ ম্যাচ শেষে আর্সেনাল সংগ্রহ করেছে ৪৭ পয়েন্ট। এই ধারায় এগোলে মৌসুম শেষে তাদের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়াবে ৯৪ পয়েন্টে, সিটি ও ইউনাইটেডের জন্য যেখানে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ঠেকবে।