• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    এই আর্সেনালকে থামাবে কে?

    এই আর্সেনালকে থামাবে কে?    

    আর্সেনাল ৩:২ ম্যান ইউনাইটেড 


    শিরোপার মিশনে নামা আর্সেনাল এ মৌসুমে ছোট-বড় প্রায় সব ক্লাবকেই নাজেহাল করে ছেড়েছে। লিভারপুল, চেলসি, টটেনহাম; লিগের পরাশক্তিদেরও অনায়াসে হারিয়েছে। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও। রোববার এমিরেটস স্টেডিয়ামে পাঁচ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি হেসেছে মিকেল আরতেতার শিষ্যরাই। বুকায়ো সাকার দূরপাল্লার গোল ও এডি এনকেতিয়ার সুযোগসন্ধানী দুই গোলে ঘরের মাঠে আরেকটি বিখ্যাত জয় পেয়েছে গানাররা।

    বিগত মৌসুমগুলোতে আর্সেনাল, ইউনাইটেড দুই ক্লাবই ভক্তদের মাঝে দুর্নাম কুড়িয়েছে ‘ব্যান্টার’ ক্লাব হিসেবে। গত মৌসুমেও শীর্ষ চারে থাকতে পারেনি তাদের কেউ। কিন্তু এবার দুই ক্লাবই হাজির হয়েছে নতুন রূপে। আর্সেনাল-ইউনাইটেডের আজকের ম্যাচ হয়তো অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে ফার্গি-ওয়েঙ্গার যুগের কথা। শূন্য দশকে প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে বড় রেষারেষি এই দুই ক্লাবের মধ্যেই ছিল কি না। এমিরেটসে টাচলাইনে সেই উত্তাপ না থাকলেও মাঠের ফুটবলে তা ভালোভাবেই ছিল।

    শিরোপা প্রত্যাশী দুই দলের মধ্যকার ম্যাচে যেরকম ক্ষিপ্রতা আশা করা হয়, সেরকম ক্ষিপ্রতা নিয়েই ম্যাচ শুরু করে আর্সেনাল ও ইউনাইটেড। ম্যাচের ১৭ মিনিটে এমিরেটসকে স্তব্ধ করে দিয়ে অসাধারণ এক গোল করেন ইউনাইটেড নাম্বার টেন মার্কাস রাশফোর্ড। প্রেস করে মিডফিন্ডে টমাস পার্টের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে আক্রমণ শুরু করেন রাশফোর্ড। তারপর বল পান ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ব্রুনো কাছ থেকে বল নিয়ে রাশফোর্ড প্রথমে পার্টেকে নাটমেগ করেন, তারপর বল নিয়ে আরেকটু সামনে এসে ডিবক্সের বেশ সামনে থেকে বুলেটগতির এক শট করেন নিয়ার পোস্টে, যেটি ফেরানোর কোনো সুযোগই ছিল রামসডেলের। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। 

    তবে ইউনাইটেডের উচ্ছ্বাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সমতা ফেরায় গানাররা। সর্ট কর্নার নিয়ে বক্সের বাঁ পাশ থেকে আক্রমণে আসে আর্সেনাল। জিনচেঙ্কোর সামনে বাড়ানো বলে ক্রস করেন শাকা। সেই ক্রসে হেড করে গোল করেন এডি এনকেতিয়া।

    প্রথমার্ধে দুই দলই আরও একাধিক আক্রমণ করলেও ১-১ গোলের সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রাশফোর্ড-সুলভ এক ওয়ান্ডার গোল করে ইউনাইটেডকে কাঁপিয়ে দেন বুকায়ো সাকা। ৫২ মিনিটে রাইট উইংয়ে বল নিয়ে বক্সের বেশ বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে ডেভিড ডি হেয়াকে পরাস্ত করেন এই ২১ বছর বয়সী ইংলিশ তারকা।

    রাশফোর্ডের মতো তার উচ্ছ্বাসও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ছয় মিনিটের মাঝে সমতা ফেরায় ইউনাইটেড। এই গোলটিও আসে আরেক কর্নার থেকে। কর্নারের বল রামসডেলের হাত থেকে ছুটে গেলে তাতে হেড করে গোল করেন ইউনাইটেড ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজ।

    ইউনাইটেড সমতা ফেরানোর পর অবশ্য আরও ক্ষিপ্র হয়ে উঠে আর্সেনাল। শেষ ৩০ মিনিটে একাধারে আক্রমণ চালায় মার্টিনেল্লিরা। ৬৬ মিনিটে ওডেগার্ডের শট এরিকসনের গায়ে লেগে ফিরে যায়। ৭০ মিনিটে সাকার আরেকটি দূরপাল্লার শট বারে লেগে ফিরে যায়। ৮৪ মিনিটে এনকেতিয়ার বাঁ পায়ের শট কোনোমতে ফেরাতে সক্ষম হন ডি হেয়া।

    কিন্তু ইউনাইটেডের শেষ রক্ষা আর হয়নি। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে লেফট উইং থেকে জিনচেঙ্কোর পাঠানো ক্রসে শট মারতে যান ওডেগার্ড। কিন্তু এই নরওয়েজিয়ান বল পাওয়ার আগেই তা ক্লিয়ার করেন ফ্রেড। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার ক্লিয়ার করা বল গিয়ে পড়ে ডি হেয়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এনকেতিয়ার কাছে। হালকা পায়ের ছোঁয়ায় তা জালে জড়ান এনকেতিয়া। আর্সেনালকে এনে দেন মহাগুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট।

    এই জয়ে ইউনাইটেডের সঙ্গে ১১ পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করেছে আর্সেনাল। দুইয়ে থাকা ম্যান সিটির সঙ্গে তাদের ব্যবধান বলবত রয়েছে আট পয়েন্টেই। বড় দলগুলোর মধ্যে শুধু সিটিকেই এখনো হারায়নি আর্সেনাল। তবে সেই অপেক্ষাও ঘুচে যেতে পারে আগামী সপ্তাহে। আসছে শনিবার নিজের সাবেক বসের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন মিকেল আরতেতা, এফএ কাপের ম্যাচে।