বিশ্বকাপের পর কেমন করছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা?
বিশ্বকাপের পর কেটে গেছে আড়াই মাসের বেশি। ক্লাব ফুটবল শুরু হয়ে গেছে পুরোদমে, আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ীরাও মাঠ মাতাচ্ছেন কমবেশি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি লতারো মার্তিনেজ । কিন্তু ইন্টার মিলানের জার্সিতে যেন ফিরে পাচ্ছেন পুরনো ফর্মের দেখা। বিশ্বকাপের পর জানুয়ারি মাসে মাঠে নেমে ৬ গোল করে ফেলেছেন। আর মধ্যে আছে সুপার কোপা ইতালিয়ার ফাইনালে মিলানের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানের বিপক্ষে গোল। এই সপ্তাহেই আবার মিলান ডার্বিতে তার গোলেই জিতেছে ইন্টার। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন আরেক সিরি আ ফুটবলার পাউলো দিবালা। বিশ্বকাপ শুরুর পর তিনি এর মধ্যে তিন গোল ও পাঁচ অ্যাসিস্ট করে ফেলেছেন। জোসে মরিনিও নিজেই বলেছেন, দিবালা এখন রোমার খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্য উচ্চতায় আছে। ফিওরেন্টিনার বিপক্ষ এর মধ্যে আছে জোড়া গোল।
আর্জেন্টাইনদের সংখ্যাটা এখন প্রিমিয়ার লিগেই বেশি। ১৪ জন আর্জেন্টাইন খেলছেন এখন প্রিমিয়ার লিগে। আপনি ঠিক মনে করতে পারবেন না, নিকট অতীতে লিগে এমন কয়জন আর্জেন্টাইন খেলেছেন সেটা মনে করতে কষ্ট হবে। গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বিশ্বকাপের পর অ্যাস্টন ভিলায় পেয়েছিলেন দারুণ সংবর্ধনা। প্রিমিয়ার লিগে বিশ্বকাপের পর সাউদাম্পটনের সাথে ভিলার জয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন। একের পর এক সেভ করে পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। উলভস ও লিডসের সাথে ম্যাচেও রেখেছেন অবদান।
তবে ফর্ম যদি বলতে হয় সেটা লিসান্দ্রো মার্টিনেজের কথা আলাদা করে বলতে হবে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডারকে বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পরেই সাথে সাথে খেলাননি এরিক টেন হাগ। ধীরে ধীরে একাদশে নিয়ে এসেছেন। লিসান্দ্রো তার নিজের জাতটা চিনিয়েছেন ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে ম্যাচে, দুর্দান্ত সব ক্লিয়ারে দশ জনের ম্যান ইউনাইটেডকে নিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন। টটেনহামের হয়ে ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোও ছড়াচ্ছেন আলো।
ওদিকে ইংলিশ লিগে আরেক বিশ্বকাপজয়ী অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের ব্রাইটন দারুণ করছে। ম্যাক অ্যালিস্টারও বিশ্বকাপ শুরুর পর দুই গোল পেয়ে গেছেন। ম্যান সিটির হুলিয়ান আলভারেজও গোল পেয়েছেন টটেনহাম ও ফুলহামের সাথে। তবে প্রিমিয়ার লিগে যে আর্জেন্টাইন নিয়ে এখন জয়জয়কার তার কথা একটু আলাদা করে বলতে হয়। এনজো ফার্নান্দেজ এই মুহূর্তে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। কদিন আগেই দলবদলের ব্রিটিশ রেকর্ড গড়ে অনেক নাটকের পর বেনফিকা থেকে তাকে নিয়ে এসেছে চেলসি। বিশ্বকাপের পর থেকেই তার চেলসিতে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। অভিষেক ম্যাচে চেলসি ড্র করলেও এঞ্জো সম্ভবত ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড়, গোল পাওয়ার খুব কাছাকাছিও গিয়েছিলেন। এনজোর সাথে দারুণ করছেন প্রিমিয়ার লিগে আর্জেন্টিনার আরেক তরুণ আলেহান্দ্রো গারনাচো। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে বদলি নেমে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন খেলার মোড়। প্যালেসের সাথে তিনি মাঠে নামার পরেই জয়সূচক গোল পায় আর্জেন্টিনা।
লা লিগাতেই এখন সবচেয়ে কম আর্জেন্টাইন। তবে তারাও খারাপ করছেন না। রদ্রিগো দি পল কদিন আগেই অ্যাটলেটিকর হয়ে ম্যাচসেরা পারফরম্য্যান্স করেছেন, সুযোগ পাচ্ছেন খেলার। আনহেল কোরেয়ার গোলে এই সপ্তাহেই জয় পেয়েছে অ্যাটলেটিকো। গোল পেয়েছেন সেভিয়ার মার্কোস আকুনিয়াও।
ওদিকে অভিজ্ঞদের মধ্যে আনহেল ডি মারিয়ার জুভেন্টাস কঠিন সময় কাটাচ্ছে। ডি মারিয়া অবশ্য এর মধ্যেই দুই গোল পেয়েছেন। আর লিওনেল মেসির কথা তো বলতেই হয়। পিএসজির হয়ে এই সপ্তাহেই নিজের বাঁ পায়ের ট্রেডমার্ক গোল করেছেন মেসি। সেরাটা সম্ভবত রেখে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্যই। শোনা যাচ্ছে, পিএসজির হয়ে নতুন চুক্তিটাও সেরে ফেলবেন কিছুদিনের মধ্যে।