• আইপিএল ২০২৩
  • " />

     

    চেন্নাইয়ের ভাগ্য ফেরাতে পারবেন স্টোকস-ধোনিরা?

    চেন্নাইয়ের ভাগ্য ফেরাতে পারবেন স্টোকস-ধোনিরা?    

    এলেন কারা, গেলেন কারা

    বেন স্টোকস, চেন্নাইয়ে সবচেয়ে বড় সংযোজন। বিদেশি আরও একজনকে এনেছিল, সেই কাইল জেমিসন ইনজুরিতে ছিটকে পড়ায় বদলি এসেছেন সিসান্ডা মাগালা। গেলবারের স্কোয়াড থেকে বুড়িয়ে যাওয়া ব্রাভো, উথাপ্পাদের ছেড়ে দিয়েছে চেন্নাই। রাখেনি দুই পেসার এডাম মিলনে ও ক্রিস জর্দানকেও। জাগাদিশান, আসিফসহ দেশি চারজনকে বিদায় করে যুক্ত করেছে তিন আনকোরা অলরাউন্ডারকে, সঙ্গে এনেছে অভিজ্ঞ আজিঙ্কা রাহানের সাথে তরুণ শেখ রশিদকে। 

    সম্ভাব্য সেরা একাদশ

    চোটের কারণে মুকেশের উপস্থিতি নিয়ে আছে সংশয়। অলরাউন্ডার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে ডাকা যেতে পারে যেকোন সময়। বিকল্প হিসেবে থাকবেন মিচেল স্যান্টনারও। 

    ১। গায়কোয়াড়

    ২। কনওয়ে

    ৩। মঈন

    ৪। স্টোকস

    ৫। রাইডু

    ৬। জাদেজা

    ৭। ধোনি

    ৮। দুবে / হাঙ্গারগেকার

    ৯। চাহার

    ১০। থিকশানা

    ১১। তুশার/ সিমারজিত  

    ব্যাটিং- ধোনির শেষটা হবে সাফল্যের চূড়ায়?  

    টুর্নামেন্টের শেষ হওয়ার তখনও বাকি, চেন্নাইয়ের চিন্তায় চলে এসেছিল ভবিষ্যত। গেলবার চেন্নাইয়ের অবস্থা হয়েছিল এমনই। প্লেঅফের দৌড়ে আগেভাগেই বাদ পড়ে শেষের দিকে নতুনদের বাজিয়ে দেখাই শুরু করেছিল। ধোনি থেকেও অধিনায়ক থাকেননি শুরুতে, টুর্নামেন্টের মাঝপথে আবার জাদেজাকে বদলে অধিনায়ক হলেন ধোনি। যে দলটাকে সবচেয়ে স্থির মনে হয়, সে দলের মাঝেই যেন অস্থিরতা বিরাজ করছিল। প্লেঅফের হিসেবে আইপিএলের সবচেয়ে সফল দল চেন্নাইয়ের গুরুভার এবার ধোনিরই কাঁধে। 

    গেলবারে, আর এবারে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। ওপেনিংয়ে গায়কোয়াড় প্রত্যাশার দাবি মেটাতে পারেননি গত আইপিএলে, ২৬ গড় আর ১২৭ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৩৬৪ রান। কনওয়ে অবশ্য ১৪৫ স্ট্রাইক রেটেই করেছিলেন ৭ ম্যাচে ২৫২ রান। গায়কোয়াড়-কনওয়ে ওপেনিং জুটিতেই ভরসা থাকবে, সেখানে বিকল্প হিসেবে এবার চেন্নাই এনেছে রাহানেকে। চেন্নাইয়ের ব্যাটিংয়ের শক্তি গেল আসরেও কম ছিল না। শুধু আশানূরুপ পারফরম্যান্সটা আসেনি, এই যা! পেছনে ঠেলে দিয়েছিল জাদেজার ব্যাটিং, ১২০ এর কম স্ট্রাইক রেট ও ২০ এর কম গড়ে জাদেজা করেছিলেন মাত্র ১১৬ রান। এই মৌসুমে মিডল অর্ডারের শক্তি অনেকটুকুই বাড়িয়ে দিয়েছে ১৬.২৫ কোটি রুপির বেন স্টোকসের আগমন। চেন্নাই তাদের ইতিহাসেই নিলামে আর কারও পেছনে এত খরচ করেনি!  

    লেট-মিডল অর্ডারে পাওয়ার হিটিংয়ের জন্য আছেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতি টেনে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই যার সব মনযোগ। সুযোগ পেলে জ্বলে উঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা এই প্রোটিয়ার। শিভাম দুবেও চেন্নাইয়ে এসে শেষমেশ নিজেকে মেলে ধরেছিলেন গত আসরে, দেড়শোর বেশি স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ব্যাটিং। ক্যারিয়ারের শেষবেলায় এসে ধোনি এখন নিজেকে ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকেই রাখেন। ৪১ বছর বয়সী ধোনির আইপিএল অধ্যায়ের সমাপ্তি এবারই হওয়ার জোর সম্ভাবনা। যে অধ্যায়ের শুরু শিরোপা দিয়ে, জাদেজা-মঈনরা মিলে কী সেই ধোনির শেষটুকু রাঙাতে পারবেন শিরোপায়? ধোনি-যুগের সমাপ্তি হবে সাফল্যের চূড়ায় থেকেই, এমনটাই তো মানায়, নাকি! 

    বোলিং- স্পিনের শক্তিতে আড়াল হবে পেসের অনভিজ্ঞতা?

    আইপিএলের অধ্যায়ে সমাপ্তি টেনেছেন ডোয়াইন ব্রাভো। ক্রিকেটার হিসেবে না থাকলেও কোচ হিসেবে যদিও থাকছেন চেন্নাইয়ের সঙ্গেই। আইপিএলে ডেথ ওভারে এক শর বেশি উইকেট এক বোলারেরই, তিনি ডোয়াইন ব্রাভো। সেই ডেথ স্পেশালিষ্ট ব্রাভোর জায়গাটা কীভাবে পূরণ করবেন চেন্নাইয়ের বোলিং কোচ ব্রাভো? 

    দীপক চাহারের এবারের আইপিএলে ফেরা চেন্নাইয়ের জন্য সুখবর। মুকেশের খেলার সম্ভাবনা নেই। গেল আসরে তারা বাজিয়ে দেখেছিল কয়েক পেসারকে। দেশি সিমারজিত সিংয়ের সাথে বিদেশি মাহিশ পাথিরানাকে দিয়েছিল সুযোগ। জেমিসনের জায়গা দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার মাগালেকে ভিড়িয়েছে চেন্নাই। তুশার দেশপান্ডের সঙ্গে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকার আছেন তার পেস নিয়ে। বিদেশি কোন পেসারের খেলার সম্ভাবনা কম, মুকেশের জায়গায় দেশি কারো উপরই আস্থা রাখবে চেন্নাই। 

    যেকোন দলেরই কোনও না কোনও জায়গায় ফাঁকফোখর থাকবেই। চেন্নাইয়ের ডেথ বোলিংও তেমনই। অনভিজ্ঞ দেশি পেস বিভাগে বড় দায়িত্ব থাকবে চাহারেরই কাঁধে। অবশ্য তা খুব বেশি যে দুশ্চিন্তার কারণ, সেটি আসলে বলা যায় না। চেন্নাইয়ের আসল শক্তির জায়গা যে স্পিনই, পেস নয়! আর থিকশানা-জাদেজা-মঈনের চেয়ে শক্তিশালী আর কোনও স্পিন আক্রমণ আছে এই আইপিএলে? আবার ঘরের মাঠে যে সাত ম্যাচ খেলবে তারা, চেন্নাইয়ের মাঠের মতো তো স্পিনাররা সহায়তা পান না আইপিএলের আর কোনও ভেন্যুতেই। স্পিনাররাই তাই চেন্নাইয়ের ভরসা। তবে গেলবার জাদেজা দশ ম্যাচে উইকেট নিয়েছিলেন মোটে পাঁচটি, এবার বল হাতে জাদেজার জ্বলে উঠার আশাই করবে চেন্নাই সমর্থকেরা। বেন স্টোকসের বোলিং প্রথম দিকে পাবে না চেন্নাই। তারপরও ধোনির হাতে কম অপশন থাকবে না। টপ সাতে জাদেজা, মঈনের বোলিং পেয়ে যাওয়ার এই তো ফায়দা! এবার শুধু ধোনির গুটি চালানোর পালা!

    কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার পালা

    দীপক চাহারের অনুপস্থিতিতে ভাগ্য খুলেছিল মুকেশ চৌধুরীর। সুযোগ পেয়ে গেল আসরে নতুন বলে বোলিং করেছিলেন দুর্দান্ত, ১৩ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন ৯.৩২ ইকোনমিতে। এবার তাই আলাদা করেই নজর থাকতো তার উপর। কিন্ত ইনজুরিতে তার অংশ্গ্রহণ শঙ্কার মুখে। চেন্নাই দলে বাকিদের মধ্যে সবাই অভিজ্ঞ, নয়তো একেবারেই তরুণ। আইপিএলে প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন, বড় কিছুর সম্ভাবনা আছে, তেমন কেউ নেই আসলে। যদি বলতেই হয়, তবে গেল আসরে ৬ ম্যাচে সাড়ে সাতের মতো ইকোনমিতে ৪ উইকেট নেওয়া সিমারজিতের কথাই আসবে। কিন্ত তিনি একাদশে নিয়মিত হতে পারেন কি না, সে নিশ্চয়তা নেই। 

    গেলবারের অবস্থান

    মাত্র চার জয়ে চেন্নাই হয়েছিল নবম।