মারকুটে মুশফিকে বাংলাদেশের সহজ জয়
১ম টেস্ট, মিরপুর (টস-আয়ারল্যান্ড/ব্যাটিং)
আয়ারল্যান্ড- ২১৪, ২৯২ (টাকার ১০৮, ম্যাকব্রাইন ৭২, টেক্টর ৫৬, তাইজুল ৪/৯০, এবাদত ৩/৩৭, সাকিব ২/২৬)
বাংলাদেশ-৩৬৯, ১৩৮/৩ (মুশফিক ৫১*, তামিম ৩১, লিটন ২৩, অ্যাডেয়ার ১/৩০, ওয়াইট ১/৪৩, ম্যাকব্রাইন ১/৫২)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
তৃতীয় দিনে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল আয়ারল্যান্ড তাতে বাংলাদেশ শিবিরে একটু হলেও শঙ্কা জাগার কথা। তবে চতুর্থ দিনে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে সহজেই জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ফিফটিতে সফর থেকে আইরিশদের তাই ফিরতে হল শূন্য হাতেই।
১৩৮ রানের লক্ষ্যে এদিন তামিম ইকবালের সাথে ওপেন করতে নেমেছিলেন লিটন দাস; অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের অফ স্পিনের বিপক্ষে দুই বাঁহাতি এড়াতেই হয়ত। পরিকল্পনাটা কাজেও এলো। মাঠে নেমেই লিটন ওয়ানডে মেজাজে খেললেন; স্পিনারদের বেরিয়ে এসে খেলে একহাত নিলেন। অন্য প্রান্তে তামিম খেলছিলেন ঠান্ডা মেজাজেই। তবে পঞ্চম ওভারেই মার্ক অ্যাডেয়ারের বলে স্টাম্প খুইয়ে লিটনকে থামতে হয় ১৯ বলে ২৩ রান শেষে। ৮ম ওভারে সেই ম্যাকব্রাইনের শিকার হয়েই ৪ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরলে চিন্তার উদ্রেক ঘটে।
তবে সেসব চিন্তার কোনও সুযোগ রাখেননি চারে নামা মুশফিক। লিটনের মত তিনিও নেমেই আক্রমণ শুরু করলেন; সুইপ-রিভার্স সুইপের পসরা সাজিয়ে স্পিনারদের লাইন এলোমেলো করে দিলেন। অন্য প্রান্তে তামিমের সাথে ম্যাকব্রাইনের লড়াইটা জমলেও মুশফিককে কোনও বিপদেই ফেলতে পারেনি স্পিনাররা। উলটো জয়ের কাছাকাছি এসে বেন ওয়াইটের নিরীহ এক বলে সংযোগ করতে না পেরে বল আকাশে ভাসিয়ে ৩১ রানে ফেরেন তামিম।
জয়ের লক্ষ্যে ততক্ষণে অনেকটাই এগিয়ে যাওয়ায় উইকেটে এসে মুমিনুল হকও খেললেন সহজাত এক ইনিংস। তার সুবাদে মুশফিক ৪৭ বলে পেয়ে যান ২৬-তম ফিফটির দেখা। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এই ইনিংসেও ফিফটি পাওয়ার সাথে মুমিনুলের ২২ বলে ২০* রানে বাংলাদেশ তাই সহজেই জয়ের বন্দরে নোঙর পুতে তৃপ্তির শ্বাস ফেলতে পেরেছে।
এর আগে সকালে ম্যাকব্রাইনের প্রতিরোধ ভেঙেছিল এবাদত হোসেনের গতিতে। ৭২ রানের দারুণ ইনিংস শেষে এবাদত হোসেনের বলে স্টাম্প খুইয়ে এই অফ স্পিনার যখন ফিরলেন আইরিশদের গুটিয়ে যাওয়া তখন সময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। হলও তাই; গ্র্যাহাম হিউমকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করালেন সেই এবাদতই। আইরিশদের জন্য তাই আক্ষেপ হয়ে থাকবে প্রথম ইনিংসটাই; ব্যাটিং নিয়েও ব্যাটিং বান্ধব উইকেট পড়তেই হয়ত তাদের সময় লেগে গিয়েছে। তবে বাংলাদেশ যেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে এই জয়টা পেল তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ধরণেও পালাবদলের হাওয়া লাগে কি না সেটাই দেখার বিষয়।