অ্যানফিল্ডে শোডাউন শেষে পয়েন্ট ভাগাভাগি লিভারপুল-আর্সেনালের
লিভারপুল ২:২ আর্সেনাল
ম্যাচটা দুই দলের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর্সেনালের শিরোপা ও লিভারপুলের শীর্ষ চারে শেষ করার সম্ভাবনা অনেকটুকুই ঝুলছিল এই ম্যাচের উপর। কিন্তু অ্যানফিল্ডের ৯০ মিনিট শেষে এই দুই সম্ভাবনা আগের চেয়েও বেশি ঝুলন্ত অবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে। মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে এই দুই পরাশক্তি ফাইনালসুলভ একটি ম্যাচ উপহার দিলেও কোনো দলই এদিন হাসিমুখে মাঠ ছাড়েনি।
২-২ গোলের এই ড্র হয়তো সামনে একটি প্রিমিয়ার লিগ ক্লাসিক হিসেবে বিবেচিত হবে। ম্যাচের ২৮ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর আর্সেনাল ভক্তরা হয়তো শিরোপার কথাই ভাবছিল। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট আসলে আট পয়েন্টের ব্যবধান রেখে শেষ আট ম্যাচ খেলতে নামত তারা, সাথে যোগ হতো তীব্র আত্মবিশ্বাস। তবে অ্যানফিল্ডের এক পয়েন্টও শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের জন্য যথেষ্ট হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে রামসডেলের শেষ মুহূর্তের সেভগুলোকে দেখা হবে আর্সেনালের শিরোপা-নির্ধারণী মুহূর্ত হিসেবে।
অ্যানফিল্ডে বিগত সাত বছরে কোনো পয়েন্ট আদায় করতে পারেনি আর্সেনাল। মিকেল আরতেতার জন্য এই এক পয়েন্ট তাই এমনিতেও চাট্টিখানি কথা না।
এই মৌসুমে আগ্রাসী ভঙ্গিমায় ম্যাচ শুরু করাকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে আরতেতার আর্সেনাল। অ্যানফিল্ডেও রীতিমত তারাই ম্যাচ শুরু করে। ফলাফলও পায় দ্রুতই। অষ্টম মিনিটে ডান পাশ দিয়ে উঠে মাঝখানে ওডেগার্ডকে বল বাড়িয়ে দেন সাকা। ওডেগার্ডের ভারী ফার্স্ট টাচে বল ছুটে যায়। কিন্তু অপ্রস্তুত ভ্যান ডাইকের পায়ে তা ডিফ্লেক্টেড হলে বলের দখল পায় বক্সের দিকে রান নেওয়া মার্টিনেল্লি। বল নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে হালকা করে তা জালে জড়ান মার্টিনেল্লি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্সেনাল।
মার্টিনেল্লির ক্রস থেকেই ম্যাচের দ্বিতীয় গোল পায় আর্সেনাল। ২৮ মিনিটে সেই ক্রসে হেড করেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। এই গোলের পর কিছুটা বেপরোয়া হয়ে উঠা লিভারপুল বিরতির আগে ব্যবধান কমায় মোহামেদ সালাহর গোলে। তবে লিভারপুল নিজেদের আসল চেহারা দেখায় দ্বিতীয়ার্ধে।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটে আর্সেনালকে দম নিতে না দিয়ে টানা আক্রমণ করে যায় অলরেডরা। এই সময়ে একটি পেনাল্টিও পায় তারা। কিন্তু সালাহর পেনাল্টি অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৫৮ মিনিটে একটি ইনজুরির বাহানা দিয়ে কিছুক্ষণ সময় নষ্ট করে আর্সেনাল। এরপর ম্যাচের বাকি সময় রক্ষণ ধরে রেখে খেলে যায় আরতেতার দল।
শেষ ৩০ মিনিটে একরকম বাস পার্ক করলেও কাউন্টারে বেশ কয়েকবার আক্রমণে উঠে গানাররা। তবে কোনো আক্রমণ থেকেই জয়সূচক গোলটি বের করতে পারেনি সাকা-ট্রসাররা। মাঠের অপর পাশে চারজন ফরওয়ার্ড নামায় লিভারপুল (ফ্যাবিনহো বদলি হিসেবে নামেন ফিরমিনো)। অনেক চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের রক্ষণকে ভাঙেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ড। ৮৭ মিনিটে রাইট উইং দিয়ে বক্সে ঢুঁকে জিনচেঙ্কোকে নাটমেগ করে ফার পোস্টে ক্রস করেন এই রাইটব্যাক। সেই ক্রসে মাথা ছুঁয়ান ফিরমিনো। সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠে অ্যানফিল্ড।
উত্তপ্ত অ্যানফিল্ডকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ৭-৮ মিনিটে আর্সেনালকে একরকম নাজেহাল করে ছাড়ে লিভারপুল। তবে এদিন গানারদের জন্য ত্রাতা হয়ে উপস্থিত হন অ্যারন রামসডেল। সালাহর বাঁকানো শট এবং কোনাতে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নেওয়া এটেম্প ব্লক করে শেষ পর্যন্ত আর্সেনালের এক পয়েন্ট ধরে রাখেন এই গোলকিপার।