আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার: শুধু ব্যাট বা বল করেই চমকে দিচ্ছেন যারা
আইপিএলে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়দের নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় উঠছে নিয়মিতই। এমনকি মাঠে নেমে এই খেলোয়াড়েরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষের জন্য চিন্তার উদ্রেক ঘটিয়েছেনও বটে। প্রতিটি দলকেই নতুন করে পরিকল্পনা সাজাতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়ের নিয়মকানুন ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন। এবার জেনে নিতে পারেন ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড়দের মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি পারফর্ম্যান্স।
ভেঙ্কটেশ আইয়ার
আইপিএলের ১৩-তম ম্যাচটা হয়তো আপনি আজীবন মনে রাখবেন রিঙ্কু সিংয়ের অবিশ্বাস্য ফিনিশিংয়ের জন্য । তবে সেদিন পার্শ্বনায়ক হয়ে থাকা একজন হতে পারতেন নায়কও। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ম্যাচে সেদিন কলকাতার ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় ছিলেন ভেঙ্কটেশ। ইতিমধ্যে কলকাতার ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। তবে তার আগে এদিন গুজরাটের বিপক্ষে খেলেছিলেন অসামান্য এক ইনিংস। গুজরাট সেদিন বিজয় শঙ্করের বিধ্বংসী ইনিংসে কলকাতাকে ছুঁড়ে দিয়েছিল ২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যতাড়ায় ২৮ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন দুই ওপেনার। যেটা হতে পারত এক দুর্বিষহ রান তাড়া সেটাকেই ভোজবাজির মত পালটে দিলেন আইয়ার; অধিনায়ক নিতিশ রানাকে সঙ্গী করে। এই জুটি শতরান ছুঁয়েছিল মাত্র ৫৫ বলে। পরে গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে ফিরেছিলেন আইয়ার। তবে ৪০ বলে ৮৩ রানের যেই ইনিংসটা খেলেছিলেন সেটার জন্যই জয়ের স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিল কলকাতা।
ধ্রুভ জুরেল
পাঞ্জাবের বিপক্ষে সেদিন বল হাতে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি রাজস্থান। শিখর ধাওয়ান সেদিন জ্বলে উঠেছিলেন আরও একবার। পাঞ্জাব অধিনায়কের ৫৬ বলে ৮৬* রানের অনবদ্য ইনিংসের সাথে প্রাভসিমরান সিংয়ের ৩৪ বলে ৬০ রানে রাজস্থানের সামনে সেদিন লক্ষ্য স্থির হয়েছিল ১৯৮ রানে। বড় সেই লক্ষ্যতাড়ায় যেন মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল তাদের। ১৫ ওভারে ১২৪ রান করে ৬ উইকেট হারিয়ে রাজস্থানের জন্য লক্ষ্য মনে হচ্ছিল দূর আকাশের তারা। সেই সময়েই কি না জেসন হোল্ডারের মত একজন লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটারের বদলি হিসেবে রাজস্থান মাঠে নামিয়ে দিল অনভিজ্ঞ জুরেলকে। আর নেমেই ম্যাচটা দারুণভাবে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। হেটমায়ারের সাথে অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছিলেন প্রায়। ১৫ বলে ৩২* রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেও জুরেলকে সেদিন পরাজয়ের গ্লানি নিয়েই ফিরতে হয়েছিল। তবে সেই ইনিংস দিয়েই নিজেকে আইপিএলে নতুন করে চিনিয়েছেন এই নতুন ভারতীয়।
সুয়াশ শর্মা
বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে সেদিন ম্যাচটা হেসেখেলেই জিতেছিল কলকাতা। তবে দাপুটে সেই জয়ের মাঝেও আলাদা করে নজর কেড়েছিলেন এক তরুণ। কাগজে-কলমে তিনি লেগ স্পিনার। তবে সতীর্থ বরুন চক্রবর্তীর মতই তিনিও রহস্যময়। আর এই দুজন মিলেই সেদিন ধসিয়ে দিয়েছিল বেঙ্গালুরকে। বেঙ্গালুরুর সামনে সেদিন লক্ষ্য ছিল ২০৫ রান। তবে দুই প্রান্ত দিয়ে বরুন ও সুয়াশের স্পিন বিষে নীল হয়ে বেঙ্গালুরুর একেবারে বেহাল দশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এক প্রান্ত দিয়ে বরুন পেলেন ৪ উইকেট। অন্য প্রান্তে রহস্য জাল বুনে অভিষেকেই অনুজ রাওয়াত, দীনেশ কার্তিক ও কারন শর্মার উইকেট পেয়েছলেন সুয়াশ।
আয়ুশ বাদোনি
বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে নিকোলাস পুরানের রেকর্ড গড়া ফিফটিতে বোধহয় আপনার স্মৃতিতে এখনও তাজা। ভিরাট কোহলি, ফাফ ডু প্লেসি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ফিফটিতে ২১৩ রানের সুবিশাল লক্ষ্য পেয়েছিল লক্ষ্ণৌ। বিশাল এই লক্ষ্য তাড়া করে রেকর্ড গড়া সম্ভব হয়েছিল মার্কাস স্টইনিস ও পুরানের দারুণ ফিফটিতে। তবে সেদিন বাদোনি না থাকলে শেষটা ভাল নাও হতে পারত লক্ষ্ণৌয়ের জন্য। ২৪ বলে ৩০ রান করে ছয় মেরেও হিট উইকেট হয়ে ফিরতে হয়েছিল তাকে। তবে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসেবে সেদিন শেষটা টেনেছিলেন বাদোনি।
বিজয় শঙ্কর
বিজয় শঙ্করের এদিনের ইনিংসটা সাদা চোখে আহামরি নাও মনে হতে পারে। তবে দিল্লি ক্যাপিটালসের বেঁধে দেওয়া ১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সুবিধা করে উঠতে পারছিল না গুজরাট। ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে গুজরাটের লক্ষ্য তাড়াও খেই হারাতে বসেছিল। সাই সুধারসানের সাথে জুটি গড়ে সেদিন গুজরাটকে পথে রেখেছিলেন শঙ্কর। খলিল আহমেদের বদলি হিসেবে মাঠে নামা শঙ্কর সেদিন ২৩ বলে ২৯ রান করে বিপর্যয় সামাল না দিলে পরিস্থিতি অন্যদিকেও যেতে পারত।