যথারীতি সেমিতে মাদ্রিদ, মিলান
চেলসি (০) ০:২ (৪) রিয়াল মাদ্রিদ
নাপোলি (১) ১:১ (২) এসি মিলান
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দুই দলের নাম রিয়াল মাদ্রিদ ও এসি মিলান। এই দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবকে আবারও একসাথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে দেখতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্ব। প্রথম লেগে জেতার পর দ্বিতীয় লেগেও প্রতিপক্ষদের কোনো নাটকীয় কামব্যাকের সুযোগ না দিয়ে সেমির টিকিট কেটেছে এই দুই দল।
স্টামফোর্ড ব্রিজে মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথমার্ধে উদ্যমী ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগোর জোড়া গোলে ০-৪ গোলের অ্যাগ্রিগেট পরাজয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। সিরি আ’য় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে থাকলেও মিলানের বিপক্ষে সাম্প্রতিক দৈন্যদশার পুনরাবৃত্তি করেছে নাপোলি। প্রথম লেগের পর এই লেগেও ৯০ মিনিটে কোনো গোল দিতে পারেননি কাভারাৎস্কেলিয়ারা। যোগ করা সময়ে (৯০+৩)’ ওসিমহেন জালের দেখা পেলেও সেটি তাদের বিদায় আটকাতে পারেনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে যেরকম নাটকীয়তার প্রত্যাশা থাকে সবার, যেরকম রোমাঞ্চ উপহার দিতে পারেনি আজকের রাত। তবে প্রথম লেগের দুই পরাজিত দল চেষ্টার কমতি রাখেনি। স্টামফোর্ড ব্রিজে প্রথমার্ধে ম্যাচের দখল ছিল চেলসির হাতেই। কিন্তু একজন পাকা ফিনিশারের অভাব আবারও ভুগিয়েছে তাদের। ১০ম মিনিটে গোলের ১২ গজ সামনে থেকে নেওয়া কান্তের শট বাইরে দিয়ে না গেলে ম্যাচের চেহারাই অন্যরকম হতে পারত। প্রথমার্ধের শেষদিকে এরকম আরেকটি সহজ সুযোগ পান কুকুরেয়া। তিনি শট করেন সরাসরি কর্তোয়া বরাবর।
এরকম ভুল-ভ্রান্তির ব্যাপারে সচরাচরই নির্দয় রিয়াল মাদ্রিদ। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এই ম্যাচেও প্রাথমিক চাপ সামলে চেলসিকে যথাযথ শাস্তিই দিয়েছে সফরকারীরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে প্রায় ম্যাচেই দলের ভেতর একজন নায়কের উত্থান হয় মাদ্রিদের। এ ম্যাচে সেই নায়কের নাম রদ্রিগো। গত মৌসুমে জোড়া গোল করে ম্যান সিটিকে বিদায় করা এই ব্রাজিলিয়ান এবার জোড়া গোল করে বিদায় করলেন আরেক ইংলিশ ক্লাবকে। প্রথমার্ধে বারের জন্য একবার গোলবঞ্চিত হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে দুটি সহজ সুযোগকে কাজে লাগান রদ্রিগো।
এদিকে ডিয়েগো মারাডোনা স্টেডিয়ামে ভক্তদের একটি ভুলে যাওয়ার মতো রাত উপহার দিয়েছে স্বাগতিক দল। ৩রা এপ্রিল মিলানের বিপক্ষে লিগের ম্যাচে এই স্টেডিয়ামেই ৪-০ গোলে হেরেছিল তারা, এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম লেগে মিলানের মাঠে ১-০। মৌসুমে বাকি সব ইতালিয়ান ক্লাবের চেয়ে অন্তত ২০ গোল বেশি করা কাভা–ওসিমহেনরা মঙ্গলবার মিলানের রক্ষণের সামনে আরেকটি কঠিন রাত পার করে। ম্যাচে একের পর এক শট নিয়ে গেলেও (মোট ২৩টি) জালের দেখা পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা।
উল্টো ম্যাচের শুরুতেই একটি পেনাল্টি খোয়ে বসেছিল তারা। অলিভিয়ের জিরুর নেওয়া সেই পেনাল্টি আলেক্স মেরেট ফিরিয়ে দিলেও ম্যাচে আর ফিরতে পারেনি নাপোলি। উল্টো জিরুর হাতেই শেষমেশ সর্বনাশ হয় তাদের। ৪৩ মিনিটে রাফায়েল লিয়াওয়ের বানিয়ে দেওয়া বল সিক্স ইয়ার্ড বক্স থেকে জালে জড়ান এই বর্ষীয়ান স্ট্রাইকার।
অ্যাগ্রিগেটে দুই গোলে পিছিয়ে যাওয়া নাপোলি দ্বিতীয়ার্ধে প্রাণপণ চেষ্টা করলেও গোলের দেখা পায় না। ৯৩ মিনিটে যখন শেষমেশ ওসিমহেন জালভেদ করেছেন, তখন তাদের বিদায় একরকম নিশ্চিতই হয়ে গেছে।