মন্থর উইকেটে জাদেজা, পাথিরানাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চেন্নাইয়ের জয়
দিল্লি-চেন্নাই, চেন্নাই (টস-চেন্নাই/ব্যাটিং)
চেন্নাই সুপার কিংস- ১৬৭/৮, ২০ ওভার (দুবে ২৫, রুতুরাজ ২৪, রায়ুডু ২৩, মার্শ ৩/১৮, অক্ষর ২/২৭, কুলদিপ ১/২৭)
দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৪০/৮, ২০ ওভার (রুশো ৩৫, পান্ডে ২৭, অক্ষর ২১, পাথিরানা ৩/৩৭, চাহার ২/২৮, জাদেজা ১/১৯)
ফলাফল: চেন্নাই ২৭ রানে জয়ী
চেন্নাইয়ের মন্থর উইকেটে দেখা মিলেছিল পুরোনো মহেন্দ্র সিং ধোনির। আর চেন্নাইও দেখালো নিজেদের লড়াকু পুঁজি রক্ষার সামর্থ্য। শিভাম দুবে, ধোনিদের ক্যামিওতে দিল্লিকে দেড়শো-পেরুনো লক্ষ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার পর দীপক চাহারের ওপেনিং স্পেল, রবীন্দ্র জাদেজার মাঝের ওভারের কিপ্টেমি আর মাথিশা পাথিরানার শেষের দক্ষতায় দিল্লিকে হারিয়েছে চেন্নাই।
কঠিন উইকেটে ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দিল্লি শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল রানের খাতা খোলার আগেই ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ে। তৃতীয় ওভারেই দীপক চাহারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৭ রানে ফিল সল্ট ফিরলে দিল্লি শিবিরে জাগে শঙ্কা। ঠিক পরের ওভারেই মানিশ পান্ডের সাথে মারাত্মক ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে মিচেল মার্শ ফিরে গেলে ঘোর বিপদে পড়ে দিল্লি।
পাওয়ারপ্লের সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছিলেন পান্ডে-রাইলি রুশো জুটি। তবে মাঝের ওভারগুলোতে আরও একবার বল হাতে রবীন্দ্র জাদেজা ছড়ি ঘোরানোয় সুবিধা করে উঠতে পারেননি কেউই। ১৩-তম ওভারের শেষ বলে পাথিরানার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে শেষ হয় পান্ডের ২৯ বলে ২৭ রানের ইনিংস। আর অন্য প্রান্তে নিজের তৈরি চাপের ফল নিজেই পান জাদেজা। লড়তে থাকা রুশোকে নিজের শেষ ওভারে এসে জাদেজা থামান ৩৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংস শেষে। ১৫ ওভার শেষে দিল্লি ৫ উইকেট হারিয়ে মোটে ৯১ রান তোলায় ম্যাচ সেখানেই তাদের জন্য কার্যত শেষ হয়ে যায়।
তবে শেষ একটা চেষ্টা করেছিলেন অক্ষর পাটেল। দারুণ এক মৌসুম কাটানো পাটেল অবশ্য নিঃসঙ্গ লড়াই শেষে পাথিরানার শিকার হয়ে থামেন ১২ বলে ২১ রানে। সেই পাথিরানাই শেষ ওভারে ৫ বলে ১২ রান করা ললিত যাদবকেও ফেরালে নিশ্চিত হয় চেন্নাইয়ের জয়।
এর আগে ধীরগতির উইকেটে চেন্নাইয়ের শুরুটা ভালই হয়েছিল। নিজের প্রথম ওভারেই অক্ষর ফিরিয়েছিলেন ডেভন কনওয়েকে। তবে পাওয়ারপ্লেতে আজিঙ্কা রাহানে-রুতুরাজ গায়কোয়াড জুটি চেন্নাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন ৪৯ রানে।
পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের বলেই অবশ্য অক্ষরের শিকার হয়ে ১৮ বলে ২৪ রান শেষে থামেন রুতুরাজ। দশম ওভারে কুলদিপ যাদবের শিকার হয়ে উইকেটে নবাগত মঈন আলীর ১২ বলে ৭ রানের কষ্টসাধ্য ইনিংস শেষ হলে সেখান থেকে প্রতি আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেন উইকেটে আসা শিভাম দুবে। খোলসে ঢুকে যাওয়া রাহানে পরের ওভারেই ললিতকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ২০ বলে ২১ রান শেষে ফিরলেও অবিচল ছিলেন দুবে। ললিতের করা ১৪-তম ওভারে তো আম্বাতি রায়ুডুকে সঙ্গী করে ৩ ছয় ও ১ চারে নিলেন ২৩ রান! পরের ওভারে এসেই অবশ্য দুবের ১২ বলে ২৫ রানের দাপুটে ইনিংসের ইতি টানেন মার্শ। খলিল আহমেদের দারুণ এক ১৭-তম ওভারে ২৩ রান শেষে রায়ুডুও ফিরলে ১৫০ ছোঁয়ার স্বপ্ন যেন মিইয়ে যেতে বসেছিল।
সেই স্বপ্নকে সত্যি করে বুড়ো হাড়ের ভেল্কি দেখালেন ধোনি। জাদেজার সাথে জুটি গড়ে খেললেন দারুণ এক ক্যামিও। সেই খলিলের করা ১৯-তম ওভারে দুজনে মিলে করলেন ২১ রান! মার্শের করা শেষ ওভারে অবশ্য ফিরেছিলেন দুজনেই। ৯ বলে ২০ রান করে ধোনি ও ১৬ বলে ২১ রান করে জাদেজা অবশ্য চেন্নাইকে যেই সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন দিনশেষে সেটাই জয়ের জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হয়েছে।