প্লে-অফের আশা জলাঞ্জলি দিয়েছে দিল্লি
পাঞ্জাব-দিল্লি, দিল্লি (টস-দিল্লি/বোলিং)
পাঞ্জাব কিংস- ১৬৭/৭, ২০ ওভার (প্রাভসিমরান ১০৩, কারান ২০, রাজা ১১*, ইশান্ত ৩/২৭, মুকেশ ১/৩, দুবে ১/১৯ )
দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৩৬/৮, ২০ ওভার (ওয়ার্নার ৫৪, সল্ট ২১, আমান ১৬, ব্রার ৪/৩০, চাহার ২/১৬, এলিস ২/২৬)
ফলাফল: পাঞ্জাব ৩১ রানে জয়ী
দিল্লির বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে পাঞ্জাব। আর ব্যাট হাতে সেটার জোগাড়যন্ত্র করেছিলেন প্রাভসিমরান সিং একাই। পরে বোলিংয়ে হারপ্রিত ব্রার, রাহুল চাহার, ন্যাথান এলিসদের দাপটে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে পাঞ্জাবের লড়াকু সংগ্রহ পেরুনোর মত কোনও অবস্থাতেই যেতে পারেনি দিল্লি।
১৬৮ রানের লক্ষ্যে ফিল সল্টকে নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। নিজের নামের সাথে বেমানান এবারের স্ট্রাইক রেটের তকমাটা মুছে দিতে যেন আদাজল খেয়ে লেগে পড়েছিলেন দিল্লি অধিনায়ক। পাওয়ারপ্লে শেষে সল্টের রান ১৫ বলে মোটে ১৭; আর দিল্লির রান ৬৫। ২১ বলে ৪৮ রান করে ফেলে সেই ঝড়টা চালাচ্ছিলেন এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার নিজেই। তবে পরের ওভারেই এসে ব্রার ২১ রানে থাকা সল্টের স্টাম্প উপড়ে সেই যে ম্যাচ ঘুরালেন দিল্লি এরপর আর ম্যাচের গতিবিধি বুঝেই উঠতে পারেনি।
চাহারের বলে এরপর মিচেল মার্শ খামখেয়ালিপনায় উইকেট হারালেন পরের ওভারেই। ওয়ার্নার অবশ্য ওই ওভারেই ২৩ বলে নিজের ৬০-তম আইপিএল ফিফটি পেয়ে যান। আর ঠিক পরের ওভারে দিল্লির মুঠো থেকে এক ওভারেই ম্যাচ বের করে ফেলেন ব্রার। রাইলি রুশোকে ডিপ মিড উইকেটে তালুবন্দি করার এক বল পরেই রিভিউয়ের সাহায্য নিয়ে ৫৪ রানে ওয়ার্নারকে থামালেন ব্রার। পরের ওভারেই মাত্র ১ রানে অক্ষরকে ফেরান চাহার; মুহূর্তেই দিল্লির স্কোরবোর্ড হয়ে দাঁড়াল ৮৬/৫। নিজের শেষ ওভারে এসে রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় থাকা মানিশ পান্ডেকে ফিরিয়ে দারুণ এক স্পেল শেষ করেন ব্রার।
অন্য প্রান্তে কিপ্টে এক স্পেল করে উইকেটে থাকা আমান হাকিম খান ও প্রাভিন দুবেকে চাহার বেঁধে রাখলে সেটার ফল তোলেন এলিস। ১৬ রানে সেই ব্রারের ক্যাচে আমানকে ফেরানোর পরের ওভারে একই রানে তিনি ফেরান দুবেকেও। দিল্লির রান তাড়া তাই তাদের ইনিংসের দ্বিতীয়ার্ধে মাথাই তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
একই অবস্থা হতে পারত পাঞ্জাবেরও। দ্বিতীয় ওভারেই ইশান্ত শর্মা পাঞ্জাব অধিনায়ক শিখর ধাওয়ানকে ফেরানোর পরের ওভারে ফেরান ৫ম ওভারে এসে ফেরান লিয়াম লিভিংস্টোনকে। দারুণ ফর্মে থাকা জিতেশ শর্মাও পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে অক্ষর পাটেলের শিকার হয়ে ফিরলে বিপদে পড়ে পাঞ্জাব।
সেই বিপদ থেকে দলকে তো উদ্ধার করেছিলেন বটেই, স্যাম কারানের সাথে জুটি গড়ে প্রাভসিমরান এরপর একা হাতে সামলেছিলেন পাঞ্জাবের ইনিংস। ১০ম ওভার শেষেও তার রান ৩১ বলে ২৭ রান। ঠিক পরের ওভারেই মার্শের মিডিয়াম পেসের ওপর চড়াও হয়ে ২টি ছয় ও ১টি চারে তিনি নেন ২১ রান। নিজের দ্বিতীয় আইপিএল ফিফটি এরপর পান ৪২ বলে। এক ওভার পরেই দুবের বলে ৬৮ রানে থাকার সময় রুশোর কল্যাণে পেলেন জীবন। ঠিক পরের বলেই কারান ফিরলেন ২০ রানে। অথচ এরপরেও অবিচল প্রাভসিমরান। যেই ওভারে ব্রার ফিরলেন কুলদিপের সেই ওভারেও মারলেন ১টি করে ছয় ও চার। খলিলের করা পরের ওভারে টানা দুই চারে এরপর প্রাভসিমরান পেয়ে যান নিজের প্রথম আইপিএল ফিফটির দেখা। দলের রান যখন ১৫৩ রান তখন প্রাভসিমরান একাই করে ফেললেন ৬১ বলে ১০৩ রান! পরের ওভারে ওই ১০৩ রানেই ফিরলেন মুকেশের বলে স্টামপ খুইয়ে। শেষ দিকে সিকান্দার রাজা ৭ বল১ ১১* রান করে পাঞ্জাবের লড়াকু সংগ্রহে অবদান রেখেছিলেন। তবে ইনিংসের আগাগোড়ায় অবদান আসলে প্রাভসিমরানের। তার গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বোলাররা পরে বিদায় জানিয়েছে দিল্লিকে।