গিল-গরিমা, শামি-মোহিত তান্ডবে প্লে-অফে গুজরাট
গুজরাট-হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ (টস-হায়দরাবাদ/বোলিং)
গুজরাট টাইটানস- ১৮৮/৯, ২০ ওভার (গিল ১০১, সুদর্শন ৪৭, শানাকা ৯*, ভুবনেশ্বর ৫/৩০, ফারুকী ১/৩১, নাটারাজান ১/৩৪ )
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ- ১৫৪/৯, ২০ ওভার (ক্লাসেন ৬৪, ভুবনেশ্বর ২৭, মারকান্দে ১৮*, শামি ৪/২১, মোহিত ৪/২৮, দয়াল ১/৩১)
ফলাফল: গুজরাট ৩৪ রানে জয়ী
প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানস। শুবমান গিলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর দুইশো যখন মনে হচ্ছিল অবশ্যম্ভাবী, তখনই ৫-উইকেট পেয়ে তাদের লাগাম টেনে ধরেছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। পরে অবশ্য মোহাম্মদ শামি ও মোহিত শর্মার তোপে গুজরাটকে ভয়ও ধরাতে পারেনি হায়দরাবাদ। হাইনরিখ ক্লাসেন এক প্রান্তে একাই লড়াই চালালেও ম্যাচের ফলাফল প্রলম্বিত হওয়া ছাড়া তেমন একটা কাজে আসেনি সেটা হায়দরাবাদের। গুজরাট তাই পয়েন্ট তালিকার প্রথম দুইয়ের মধ্যে থাকাটা নিশ্চিত করল দাপটের সাথেই।
১৮৯ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই বড়সড় হোঁচট খায় হায়দরাবাদ। দ্বিতীয় বলেই আনমোলপ্রিত সিং বেঁচে গেলেও পঞ্চম বলে তাকে ঠিকই ফেরান শামি। পরের ওভারে অভিষেক শর্মাও ফেরেন যশ দয়ালের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে রাহুল ত্রিপাঠিকেও শামি ফেরালে ঘোর বিপদে পড়ে হায়দরাবাদ। সেই বিপদকে আরও গভীর করে টানা তৃতীয় ওভারে শামি আঘাত হানেন, ফেরান অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে। পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের ওভারেই বল হাতে নিয়ে মোহিত শর্মা হানেন জোড়া আঘাত; ফেরান সানবীর সিং ও আবদুল সামাদকে। ম্যাচটাও যেন কার্যত শেষ হয়ে যায় সেখানেই।
তবে হারার আগে হাল ছাড়েননি ক্লাসেন। নবম ওভারে মোহিতের তৃতীয় শিকার হয়ে মার্কো ইয়ানসেন ফেরার পর ভুবনেশ্বরকে সঙ্গী করে চেষ্টা চালিয়ে যান ক্লাসেন। ১৪-তম ওভারে ৩৫ বলে ফিফটি করে অতি আশাবাদীদের মনে আশাও হয়তে জাগাতে শুরু করেছিলেন। তবে ম্যাচে থাকতে গিয়ার পাল্টাতেই হত। শামির শেষ ওভারে তাকে লং অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সরাসরি ক্যাচ দিয়ে থামেন ৪৪ বলে ৬৪ রানে; আর সেই সাথে শেষ হয় শামির মাত্র ২১ রান দিয়ে নেওয়ার ৪ উইকেটের ক্ষিপ্র স্পেল। অন্য প্রান্তে থাকা ভুবনেশ্বরও এরপর ২৬ বলে ২৭ রানে ফিরেছিলেন মোহিতের শিকার হয়ে। আইপিএলের ইতিহাসে ৮ম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ার পরেও এই দুজনকে তাই হার মানত হয় নির্দয় ভঙ্গিমায়।
এর আগে প্রথম ওভারেই উইকেট খুইয়েছিল গুজরাটও। ভুবনেশ্বরের শিকার হয়ে ঋদ্ধিমান সাহা শূন্য রানেই ফিরলে সেখান থেকে ১৪৭ রানের জুটি গড়েন গিল-সুদর্শন। স্পিনারদের ওপর চড়াও হয়ে মাত্র ২২ বলে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর গিল দাপটের সাথেই খেলে যাচ্ছিলেন। গিলের আক্রমণে সুদর্শনও সুযোগ পেয়েছিলেন নিজ ভঙ্গিতে এগিয়ে যাওয়ার। ১৪-তম ওভারে অবশ্য মনোযোগ বিচ্যুতি ঘটলে ইয়ানসেনের শিকার হয়ে ৩৬ বলে ৪৭ রানের ইনিংস শেষে থামেন সুদর্শন।
অন্য প্রান্তে অবিচল গিল আক্রমণ চালিয়ে যান অন্য প্রান্তে উইকেট আসা যাওয়ার মাঝেও। হার্দিক পান্ডিয়াকে ভুবনেশ্বর ফেরানোর পরের ওভারেই ডেভিড মিলারকে নাটারাজান ফেরালে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় হায়দরাবাদ। পরের ওভারে রাহুল তেওয়াতিয়াও ফিরে যান ফারুকীর শিকার হয়ে। এক প্রান্ত আগলে এর পরের ওভারে অবশ্য ঠিকই নিজের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি পেয়ে যান গিল। ৫৬ বলে পাওয়া সেই সেঞ্চুরির পর অবশ্য শেষ ওভারে দুর্ধর্ষ হন্তারকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন ভুবনেশ্বর। গিলের ৫৮ বলে ১০১ রানের দারুণ ইনিংসের সমাপ্তি ঘটিয়ে পরের বলেই রশিদ খানকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। হ্যাটট্রিক না পেলেও ওই বলে রান আউট হয়ে নূর আহমেদ ফিরলে এরপর শামিকে ফিরিয়ে আইপিএলে নিজের দ্বিতীয় ৫-উইকেটের দেখা পান ভুবনেশ্বর। ৪ উইকেটময় সেই শেশব ওভারটা অবশ্য দিনশেষে কাজে আসেনি হায়দরাবাদের।