খুনে স্টয়নিসের পর বিষাক্ত বিষ্ণোই, মহসিনের ডেথ বোলিংয়ে লক্ষ্ণৌয়ের দারুণ জয়
লক্ষ্ণৌ-মুম্বাই, লক্ষ্ণৌ (টস-মুম্বাই/বোলিং)
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১৭৭/৩, ২০ ওভার (স্টয়নিস ৮৯*, ক্রুনাল ৪৯, ডি কক ১৬, বেরেনডর্ফ ২/৩০, পীযুষ ১/২৬)
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস- ১৭২/৫, ২০ ওভার (কিষান ৫৯, রোহিত ৩৭, ডেভিড ৩২*, বিষ্ণোই ২/২৬, ঠাকুর ২/৪০, মহসিন ১/২৬)
ফলাফল: লক্ষ্ণৌ ৫ রানে জয়ী
রোহিত শর্মা-ঈশান কিষানের ঝড়ো শুরুর পর মুম্বাইয়ের জয়টাই যখন মনে হচ্ছিল অবশ্যম্ভাবী তখনই রবি বিষ্ণোইয়ের দুর্দান্ত স্পেল; সেই সাথে মহসিন খানের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় পেল লক্ষ্ণৌ। ব্যাটিংয়েও শুরুতে ধসের পরে ক্রুনাল পান্ডিয়ার সাথে জুটি গড়ে বিপদ সামলে শেষ দিকে ঝড় তুলেছিলেন মার্কাস স্টয়নিস। দুই ইনিংসেই ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ দুই গল্পে প্লে-অফের জন্য জোর দাবী জানিয়ে রাখল লক্ষ্ণৌ।
অথচ ১৭৮ রানের লক্ষ্যে এদিন শুরু থেকেই নিজের স্বভাবসুলভ খেলাটা খেলছিলেন রোহিত। অন্য প্রান্তে কিষান কিছুটা রয়েসয়ে এগুলেও ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রোহিত; তাতেই পাওয়ারপ্লেতে মুম্বাই তুলে ফেলেছিল ৫৮ রান। পাওয়ারপ্লের পর কিষান বাউন্ডারির মিছিলে যোগ দিলে অন্য প্রান্তে বিষ্ণোই-ক্রুনাল মিলে বেঁধে রাখেন রোহিতকে। তারই ফল হিসেবে বিষ্ণোইকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে রোহিত থামেন ২৫ বলে ৩৭ রান শেষে। পরের ওভারেই ৩৪ বলে কিষান ফিফটি পূর্ণ করলে এরপর বিষ্ণোই ফিরে থামান তাকেও। বিষ্ণোইয়ের গুগলি পড়তে না পেরে আকাশে বল তুলে দিয়ে কিষান থামেন ৩৯ বলে ৫৯ রান শেষে।
সেখান থেকেই যেন হুট করে মুখ থুবড়ে পড়ে মুম্বাইয়ের ইনিংস। ১৫-তম ওভারে যখন যশ ঠাকুর ফেরালেন সূর্যকুমার যাদবকে, তখনও ম্যাচটা মুম্বাইয়ের দিকেই ঝুঁকে ছিল। ৫ ওভারে তখন ৫৮ রান প্রয়োজন হলে মাত্র ৬ রান দেন তখন নাভিন-উল-হক। সেটাই কাজে লাগিয়ে পরের ওভারে মহসিন ফেরান ধুঁকতে থাকা নেহাল ওয়াধেরা। পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা ম্যাচে এরপর বিষ্ণু বিনোদকে ফিরিয়ে ঠাকুর ১৮-তম ওভারে ৯ রান দিলে ১৯-তম ওভারে নাভিনকে দুই ছয় মেরে ১৯ রান তোলেন ডেভিড। শেষ ওভারে ১১ রান প্রয়োজন হলে মহসিন খানের স্লোয়ার একেবারেই ধরতে পারেননি উইকেটে নবাগত ক্যামেরন গ্রিন। ১৯ বলে ৩২* রানে উইকেটে থেকেও ডেভিড তাই পারেননি মুম্বাইকে জয় এনে দিতে।
এর আগে বেরেনডর্ফের দ্বিতীয় ওভারে পরপর দুই বলে ফিরেছিলেন দীপক হুডা ও প্রেরক মানকাড। পরে পীযুষ চাওলা ডি কককেও ফেরালে ৩৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে লক্ষ্ণৌ। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন ক্রুনাল-স্টয়নিস জুটি। ফিফটির দ্বারপ্রান্তে এসে ৪২ বলে ৪৯ রান করে ক্রুনালকে আহত অবসর হয়ে ফিরতে হলেও থামেননি স্টয়নিস। উল্টো ঝড় তুলে মুম্বাইয়ের সব পরিকল্পনা ভেস্তে দেন একাই। ১৮-তম ওভারে ৩৬ বলে ফিফটি করে সেখান থেকেই শুরু করলেন ধ্বংসযজ্ঞ। ক্রিস জর্ডানের করা ওই ওভারে ২ ছয় ও ৩ চারে নিলেন ২৪ রান! অন্য প্রান্তে তখন নামা নিকোলাস পুরান ইনিংস শেষে অপরাজিত থাকলেন সমান সংখ্যক বলে ৮* রানে; আর লক্ষ্ণৌ শেষ ৩ ওভারে তুলল ৫৪ রান। বলতে গেলে একাই সেটা করলেন স্টয়নিস। ৪৭ বলে ৮৯* রানে অপরাজিত থেকে স্টয়নিস যেই ইনিংসটা খেললেন সেটাই দিনশেষে গড়ে দিয়েছে ব্যবধান।