শীর্ষ পাঁচ লিগ থেকে কারা যাচ্ছে ইউরোপে
ইউরোপীয় ফুটবলে মৌসুম শেষ হতে চলেছে। তবে সব লিগেই এখনো দুই-এক ম্যাচ বাকি আছে। যে ম্যাচগুলোর উপর নির্ভর করছে অনেক ক্লাবের মহাদেশীয় ফুটবল খেলার ভাগ্য। ২০২২-২৩ মৌসুমে পর্দা নামার আগে চলুন দেখে নেওয়া যাক শীর্ষ পাঁচ লিগে থেকে কোন কোন ক্লাব ইউয়েফার তিন প্রতিযোগিতা- চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে জায়গা পেতে যাচ্ছে।
প্রিমিয়ার লিগ
শীর্ষ চার, অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবগুলো স্পট প্রায় পাকাপাকিই হয়ে আছে। চ্যাম্পিয়ন ম্যান সিটি, আর্সেনাল ও নিউক্যাসল ইতোমধ্যে শীর্ষ চার নিশ্চিত করেছে। শেষ দুই ম্যাচের একটি ড্র করতে পারলে নিশ্চিত হয়ে যাবে ইউনাইটেডের অন্তর্ভুক্তিও।
লিভারপুল ও ব্রাইটন ইতোমধ্যে শীর্ষ ছয় নিশ্চিত করেছে। অলরেডরা আট বছর পর ইউরোপায় খেলতে যাচ্ছে, আর ব্রাইটন তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।
টেবিলের সপ্তম স্থানে আছে উনাই এমেরির অ্যাস্টন ভিলা। শেষদিনে ব্রাইটনকে হারাতে পারলে লিগের একমাত্র দল হিসেবে তারা কনফারেন্স লিগে খেলতে যাবে। সেটি না পারলে এক পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা টটেনহাম হটস্পারের কাছে সুযোগ থাকবে শেষদিনে তাদের টপকে যাওয়ার।
লা লিগা
স্পেনের শীর্ষ চার পজিশন নিয়ে আছেন বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, রিয়াল মাদ্রিদ ও রিয়াল সোসিয়েদাদ। প্রথম তিন দলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল নিশ্চিত, চারে থাকা সোসিয়েদাদও পরবর্তী দলের চেয়ে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে আছে। শেষ তিন ম্যাচে তারা পা না হড়কালে শীর্ষ চারে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
টেবিলের পাঁচ ও ছয়ে অবস্থান করছে ভিয়ারিয়াল ও রিয়াল বেটিস। বেটিস সাতে থাকা বিলবাওয়ের চেয়ে ছয় পয়েন্টে এগিয়ে আছে। শেষ তিন ম্যাচে এই লিড ধরে রাখতে পারলে তারাই যাবে ইউরোপা লিগে। আর অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের জায়গা হবে কনফারেন্স লিগে।
জিরোনা, সেভিয়া, ওসাসুনা ও রায়ো ভায়েকানো এখনো গাণিতিকভাবে কনফারেন্স লিগের দৌড়ে আছে।
সিরি আ
এই মৌসুমে ইউরোপিয়ান ফুটবলের জন্য সবচেয়ে জমজমাট লড়াই দেখছে সিরি আ। টেবিলের শীর্ষস্থান শুধু নিশ্চিত। শেষ দুই ম্যাচে পরের ছয় পজিশনেই আসতে পারে পরিবর্তন। চ্যাম্পিয়ন নাপোলির সঙ্গে এখন শীর্ষ চারে আছে লাৎসিও (৬৮), ইন্টার (৬৬) ও এসি মিলান (৬৪)। জুভেন্টাসের আবার হুট করে ১০ পয়েন্ট কাটা যাওয়ায় সবচেয়ে বড় লাভ হয়েছে মিলানের। পাঁচ থেকে তারা চলে এসেছে চারে। পাঁচে থাকা আটালান্টার সঙ্গেও জিরুদের তিন পয়েন্টের ব্যবধান রয়েছে। শেষ দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট আনতে পারলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের শীর্ষ চারে থাকা।
এই চার দলের পাশাপাশি পঞ্চম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল পেতে পারে রোমা। সেক্ষেত্রে ইউরোপা লিগের ফাইনালে জিততে হবে জোসে মরিনহোর দলকে।
ইউরোপার জন্য সাধারণত পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থান বরাদ্দ থাকে সিরি আয়। তবে কোপা ইতালিয়া জেতা দল শীর্ষ ছয়ে না থাকলে ষষ্ঠ দলের বদলে তারা জায়গা পায় ইউরোপায়। বর্তমানে টেবিলের ১১-তে থাকা ফিওরেন্তিনা খেলবে কোপা ইতালিয়ার ফাইনালে। সেখানে জিতলে তারা এবং টেবিলের পাঁচে থাকা দল যাবে ইউরোপায় (রোমা ইউরোপা জিতলে ও লিগে পঞ্চম হলে ষষ্ঠ দল জায়গা পাবে)।
আর ছয় বা সাত নাম্বারে থাকা দল জায়গা পাবে কনফারেন্স লিগে। বর্তমানে সাতে আছে ১০ পয়েন্ট কর্তনের শিকার হওয়া জুভেন্টাস (৫৯)। তাদের সামনে দুই পজিশনে আছে রোমা (৬০) ও আটালান্টা (৬১)।
বুন্দেসলিগা
জার্মান লিগ থেকেও চার দল খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। শীর্ষ তিনে থাকছে ডর্টমুন্ড, বায়ার্ন ও লাইপজিগ। চার ও পাঁচে থাকা ইউনিয়ন বার্লিন ও ফ্রাইবুর্গের পয়েন্ট সমান (৫৯)। শেষ ম্যাচে এই দুই পজিশনে পরিবর্তন আসতে পারে। পাঁচে শেষ করা দলের জায়গা হবে ইউরোপায়। ফ্রাঙ্কফুর্ট ডিএফবি পোকাল জিতলে দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরোপায় খেলবে তারা। আর না জিতলে ছয়ে থাকা দল যাবে ইউরোপায়। বর্তমানে ছয়ে থাকা লেভারকুসেন শেষ ম্যাচ জিতলেই ইউরোপিয়ান ফুটবল নিশ্চিত করে ফেলবে (ইউরোপা অথবা কনফারেন্স লিগ)।
লিগ ওয়ান
ফরাসি লিগ থেকে দুই দল সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুযোগ পায়। টেবিলের তৃতীয় দলের খেলতে হয় বাছাইপর্ব। ইতোমধ্যে শীর্ষ তিনে থাকা নিশ্চিত করেছে পিএসজি, লেঁস ও মার্সেই। অর্থাৎ, ফ্রান্স থেকে এই তিন দলই যাচ্ছে এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।
কুপ দে ফ্রান্স জেতা তুলোজ নিশ্চিত করেছে ইউরোপা লিগ ফুটবল। দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরোপায় যাবে চতুর্থ স্থানধারী ক্লাব। যেখানে বর্তমানে অবস্থান করছে মোনাকো। শেষ দুই ম্যাচে জিতলে তারা ইউরোপা নিশ্চিত করবে। একই কাজ করলে কনফারেন্স লিগ নিশ্চিত করবে পাঁচে থাকা লিল।