রান-আউটের রঙ্গমঞ্চে মাধওয়াল-ম্যাজিকে মুম্বাইয়ের দাপুটে জয়
এলিমিনেটর, চেন্নাই (টস-মুম্বাই/ব্যাটিং)
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস- ১৮২/৮, ২০ ওভার (গ্রিন ৪১, সূর্যকুমার ৩৩, তিলক ২৬, নাভিন ৪/৩৮, যশ ৩/৩৪, মহসিন ১/২৪)
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১০১, ১৬.৩ ওভার (স্টয়নিস ৪০, মেয়ার্স ১৮, হুডা ১৫, মাধওয়াল ৫/৫, জর্ডান ১/৭, চাওলা ১/২৮)
ফলাফল: মুম্বাই ৮১ রানে জয়ী
যেই লক্ষ্ণৌ মুম্বাইয়ের বিপক্ষে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচেই জয় পেয়েছিল সেই লক্ষ্ণৌকে যেন খুঁজেও পাওয়া গেল না আজ। চিপকে সুপার জায়ান্টসদের নামটা যেন আক্ষরিক অর্থেই ধূলিসাৎ করে জয়ের ঝান্ডা উড়াল মুম্বাই। কোনও ফিফটি ছাড়াই আইপিএল প্লে-অফ ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ গড়ার পর আকাশ মাধওয়ালের ৫ উইকেটে রীতিমত ছেলেখেলা করেই জিতল মুম্বাই। খেলার অংশ হিসেবে লক্ষ্ণৌ যে তাদের তিনটি বিদঘুটে রান আউট উপহার দিল তারও অবদান কম নয় তাদের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের টিকেট কাটায়।
১৮৩ রানের লক্ষ্য প্রেরক মানকাডকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাতটা হেনেছিলেন মাধওয়ালই। বলের লেংথ ঠাহর করতে না পেরে চতুর্থ ওভারে ক্রিস জর্ডানের শিকার হয়ে এরপর ফেরেন কাইল মেয়ার্স। সেখান থেকে ক্রুনাল পান্ডিয়াকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন মার্কাস স্টয়নিস। ঋত্বিক শকীনের করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে তো নিলেন ১৮ রান। ধুঁকতে থাকা পান্ডিয়া ৯ম ওভারে পীযুষ চাওলার শিকার হয়ে ফিরলেও স্টয়নিস কিছু একটা করেই দেখাবেন বলে মনে হচ্ছিল।
পরের ওভারেই অবশ্য ম্যাচের পেন্ডুলাম নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে ফেলেন মাধওয়াল। টানা দুই বলে আকাশ বাদোনি ও নিকোলাস পুরানকে ফেরান এই পেসর। ম্যাচের ভাগ্য অবশ্য লেখা হয়ে যায় এক ওভার পরেই। দীপক হুডার সাথে মাঝ রাস্তায় ধাক্কা খেয়ে আর ফিরতে পারেননি স্টয়নিস। রান আউট হয়ে তাই শেষ হয় তার ২৭ বলে ৪০ রানের ইনিংস। সেখান থেকে এরপর লক্ষ্ণৌয়ের ইনিংসটা যেন উপহাসের কোনও লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল। কিছুক্ষণ পরে আবারও হুডার সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে হাস্যকরভাবে রান আউট হয়ে ফিরেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। নিজের তৃতীয় ওভারে মাধওয়াল ফেরান রবি বিষ্ণোইকে; আর সেই ওভারেই আবারও রান আউটের শিকার নাভিন-উল-হক! নিজের শেষ ওভার করতে এসে কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকে মাধওয়াল পূর্ণ করেন নিজের ৫-উইকেট। আর মুম্বাইও পেয়ে যায় তাদের কাঙ্ক্ষিত জয়।
এর আগে দারুণ শুরু করেও টানা দুই ওভারে ফেরেন রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষান। পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার ফিরলে এরপর প্রতি আক্রমণে যান ক্যামেরন গ্রিন; যোগ্য সঙ্গ দেন সূর্যকুমার যাদব। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ক্রুনালের ওপর চড়াও হয়ে দুজনে মিলে ১৬ রান তুললে ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠার ইঙ্গিত দেন দুজন। তবে লক্ষ্ণৌকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেওয়া নাভিন ১১-তম ওভারে ফেরান দুজনকেই। নাভিনের দারুণ স্লোয়ার পড়তে না পেরে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ২০ বলে ৩৩ রানে সূর্যকুমার ফেরার এক বল পরেই ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত এক বলে পরাস্ত হয়ে ফেরেন ২৩ বলে ৪১ রানে থাকা গ্রিন।
সেখান থেকে তিলক ভার্মা বা টিম ডেভিড কেউই খুব একটা সুবিধা করতে না পারায় নাভিন ফিরিয়েছিলেন ২৬ রানে থাকা তিলককে। তবে ম্যাচটায় মুম্বাইয়ের আত্মবিশ্বাসের যোগান দেন সূর্যকুমারের বদলে ইমপ্যাক্ট সাব হিসেবে নামা নেহাল ওয়াধেরা। শেষ ওভারে দারুণ কিছু শট খেলে শেষ বলে থামার আগে ১২ বলে ২৩ রান করে সংগ্রহ ১৮০+ বানিয়েছিলেন; মনস্তাত্ত্বিকভাবেও ম্যাচ জিততে যা সাহায্য করছে বলা যায়।