শান্তর 'ব্যাক টু ব্যাক', মুমিনুলের বহুল আরাধ্য সেঞ্চুরিতে বড় জয়ের অপেক্ষা বাংলাদেশের
একমাত্র টেস্ট, মিরপুর (টস-আফগানিস্তান/বোলিং)
বাংলাদেশ- ৩৮২ ও ৪২৫/৪ (শান্ত ১২৪, মুমিনুল ১২১*, জাকির ৭১, জহির ২/১১২, আমির ১/৯০)
আফগানিস্তান- ১৪৬ ও ৪৫/২ (শহীদী ১৩, রহমত ১০, শরিফুল ১/৬, তাইজুল ১/২৮)
জয়ের জন্য আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৬১৭ রান
৩য় দিন, স্টাম্পস
তৃতীয় দিন শেষে জয় যেন বাংলাদেশের জন্য সমইয়ের ব্যাপার মাত্র। নাজমুল হোসেন শান্তর রেকর্ড সেঞ্চুরির সাথে মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানকে রানের পাহাড়ে পিষ্ট করে বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে তাদের ২ উইকেট তুলে নিয়ে।
গত বিকেলে যেখানে শেষ করেছিলেন দিনের শুরুটা যেন সেখান থেকেই করেছিলেন শান্ত-জাকির। ৩০ ওভারেই দলীয় ১৫০ রান পূর্ণ করার পর নির্বিঘ্নেই সময় কাটাচ্ছিলেন এই জুটি। তবে শান্ত যখন নব্বইয়ের ঘরে অন্য প্রান্তে তখন ঘটে বিপদ। শান্তর ব্যাটের কানায় বল লেগে স্লিপ অঞ্চল দিয়ে বল এর হয়ে গেলে দুই রানের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। দুই রান সম্পন্ন করার পর জাকির তৃতীয় রান নিতে গেলে সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। রান আউটের শিকার হয়ে শেষ হয় জাকিরের ৯৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। তার কিছুক্ষণ পরেই ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত সেঞ্চুরি পেয়ে যান শান্ত, সেটাও ১১৫ বলে। মুমিনুল হকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে একই টেস্টে দুই সেঞ্চুরি পাওয়া শান্ত যেন ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি হয়ে উঠলেন। মুমিনুলকে নিয়ে দলকে ২৫৫ রানে নিয়ে লাঞ্চে যাওয়া শান্ত অবশ্য ফেরেন লাঞ্চের পরেই। মিড উইকেটে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে জাহির খানের শিকার হয়ে শান্ত থামেন ১৫১ বলে ১২৪ রান শেষে। ওই ওভারে নেমেই তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যাওয়া মুশফিকুর রহিম রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ফিরলেন ৩ বলে ৮ রান করে।
তবে জোড়া আঘাতে বিচলিত না হয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হন্যে হয়ে থাকা মুমিনুল এরপরের ওভারেই ৬৭ বলে তুলে নেন ফিফটি, লিটনের সাথে গড়েন দারুণ জুটি। ৮ রানে থাকতে একবার অবশ্য আফগানদের রিভিউ অবশিষ্ট না থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন লিটন। দুজনে মিলে তাই চা-বিরতিতে যান দলীয় ৩৭৮ রান পূর্ণ করে।
চা-বিরতির আগে দুজনেই দাঁড়িয়েছিলেন মাইলফলকের সামনে। বিরতির পরপরই ৫৩ বলে অধিনায়ক হিসেবে লিটন পেয়ে যান নিজের প্রথম ফিফটি। সময় ক্ষেপণ না করে এরপর মুমিনুলও পেয়ে যান তার বহুল আরাধ্য ১২-তম টেস্ট সেঞ্চুরি, ১২৩ বলে। ২০২১ সালের ২২ এপ্রিলের পর এটি তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি; সেবারও তার সঙ্গী হিসেবে নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটা পেয়েছিলেন শান্ত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে ওঠা ম্যাচে হঠাৎ লিটন প্রাণ সঞ্চার করেন নিজের সেঞ্চুরির জন্য চেষ্টা না করে ইনিংস ঘোষণা করে। লিটন ৬৬* রানে থেকে ও মুমিনুল ১২১* রানে থেকে আফগানদের সামনে দাঁড় করান ৬৬২ রানের সুবিশাল লক্ষ্য।
সেই লক্ষ্যে আফগানদের শুরুটা হয় ভয়াবহ। শরিফুলের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে গোল্ডেন ডাকের শিকার হন ইব্রাহিম জাদরান। পরের ওভারেই তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আব্দুল মালিক। মরার ওপর খড়ার ঘা হয়ে আসে ষষ্ঠ ওভারে তাসকিনের বাউন্সার। বাউন্সার এড়াতে গিয়ে মাথার পেছনে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদী। শঙ্কা কাটিয়ে স্ট্রেচার ছাড়াই তিনি পরে মাঠ ছাড়লেও দিনশেষে আফগানদের মাথার ওপর বড় হারের শঙ্কাটাই বিরাজমান।