• আফগানিস্তানের বাংলাদেশ সফর ২০২৩
  • " />

     

    'পরীক্ষা-নিরীক্ষা' নয়, আফগানিস্তান সিরিজে খেলোয়াড়দের 'গেম টাইম'-এর সুযোগ দেখছেন হাথুরুসিংহে

    'পরীক্ষা-নিরীক্ষা' নয়, আফগানিস্তান সিরিজে খেলোয়াড়দের 'গেম টাইম'-এর সুযোগ দেখছেন হাথুরুসিংহে    

    আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে টেস্ট জেতার পরে ওয়ানডে সিরিজেও সেটার ধারাবাহিকতা নিশ্চয়ই বজায় রাখতে চাইবে বাংলাদেশ; ঠিক সেরকমটাই চাইছেন কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহেও। তবে তার ভাবনায় শুধু জয় নয়, সাথে রয়েছে বিশ্বকাপের ভাবনাও। তাই আফগানদের বিপক্ষে সিরিজটাতেও তিনি তার খেলোয়াড়দের ওপর নজর রাখার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাজিয়ে দেখতে চান বেশ কিছু খেলোয়াড়কেই, তবে সেটাকে নিছক ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা’ বলতে নারাজ তিনি।

    বরং বিশ্বকাপের আগে কে কেমন অবস্থায় আছেন সেটা বোঝার চেষ্টা করছেন বলেই জানালেন তিনি। এই যেমন ধরুন নাঈম শেখের কথা। বছর দুই এক আগেও তিনি ছিলেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কিংয়ের ব্যাটার, দলের নিয়মিত ওপেনার। তবে তার স্ট্রাইক রেটটা তিনি কথা উঠত সবসময়ই। শেষমেশ ফর্মহীনতা ও স্ট্রাইক রেটের বেহাল দশার কারণে দলে জায়গা খোয়াতে হয়েছে তাকে। তবে বিশ্বকাপের বছরে আবারও আলোচনায় তিনি। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজে তো আছেন বটেই, শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলেও আছেন। আলোচনায় তিনি ফিরেছেন মূলত আবাহনীর হয়ে শিরোপা জয়ী মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে। অল্পের জন্য হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া না হলেও এক সেঞ্চুরিতে এবার তিনি তুলেছেন ৯৩২ রান; তবে আশা জাগানিয়া বিষয়টা আসলে তার স্ট্রাইক রেট - ৯১.৬৪।

    তাই তাকে নিয়ে আলাদা করেই কথা বললেন হাথুরুসিংহে, “আমরা যখনই সুযোগ পাব, তাকে (নাঈম) একটি ম্যাচ দিতে চাই।” সেই সাথে তিনি কোচ হওয়ার পরেই ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়া আফিফ হোসেন এবার ফিরেছেন স্কোয়াডে। তাকে নিয়েও তাই প্রশ্নের উত্তর দিলেন আলাদা করেই, “(আফিফ যদি খেলে) মিডল-অর্ডারে খেলবে।”

    শুধু আফিফ, নাঈমরাই নয়, ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলে থাকা সৌম্য সরকার, শেখ মাহাদীদের ওপর যে আলাদা করে নজর রাখবেন এই সিরিজের প্রসঙ্গে সেটাও জানালেন তিনি, “আমার মতে, এশিয়ার সব দল এটিকে ক্রিকেটারদের ফর্ম দেখানোর জন্য পরীক্ষার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে। একই সময়ে আমাদের খুব গোছালো দল রয়েছে। তো কেউ যদি (ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে) অনেক রান করে, তাহলে (দল) বাছাইয়ের জন্য নিজের নাম তুলবে।”

    বিশ্বকাপের আগেও ব্যাটিং পজিশনের সাত নম্বর নিয়ে যে শঙ্কা রয়েছে সেটা তো জানাই। সেটার জন্যই হয়ত হাথুরুর সন্ধান এখনও চলছেই। এভাবে স্কোয়াড সাজানোটাকে তাই তিনি দেখছেন সুযোগ হিসেবে, কিছু খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপের আগে দলে থিতু হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার ক্ষেত্র হিসেবে, “হ্যাঁ! আমি আগেই যেটা বললাম, আমরা কিছু ছেলেকে গেম টাইম দেওয়ার চেষ্টা করছি। এর মানে এটি নয় যে, পরীক্ষা করছি। এর মাধ্যমে আমরা কোচিং গ্রুপ, নির্বাচকরা দেখতে চাই যে আমরা কী চাই এবং কোন কোন জায়গায় কাজ করতে হবে। যাতে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে ইনজুরি বা অন্য কোনো জরুরি অবস্থা সামাল দেওয়ার গভীরতা আমাদের থাকে।”

    তবে বিশ্বকাপের বছরে বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবালই যেন সবচেয়ে বড় শঙ্কা। ইনজুরি যেন পিছুই ছাড়ছে না তার। আফগানিস্তান সিরিজে দলে ফিরলেও পূর্ণ ফিটনেস নিয়ে সিরিজে নামতে পারবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। সেই ধোঁয়াশা কাটাতেও যেন অপরাগ হাথুরুসিংহে, “আমি এখানে কারও মেডিকেল ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব না। তবে সে (তামিম) গত দুই দিন অনুশীলন করেছে। সে এখন পর্যন্ত ভালো। আমরা তার অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং অনুশীলনের পর কেমন বোধ করে, তা দেখছি।”

    বিশ্বকাপের বছরে অধিনায়ক সংকটের কোনও পরিস্থিতি উত্তীর্ণ হলে তার পরিত্রাণের উপায় নিয়ে অবশ্য খুব একটা শঙ্কিত বলে মনে হল না বাংলাদেশ কোচকে, “আমাদের দলে অনেকেই আছে যারা আগে অধিনায়কত্ব করেছে। সম্প্রতি টেস্ট ম্যাচে যখন সাকিব ছিল না, লিটন অধিনায়কত্ব করেছে। এর আগে মুশফিক, সাকিবও অধিনায়কত্ব করেছে। আমাদের যথেষ্ট নেতা আছে। তেমন কিছু (তামিমের অনুপস্থিতি) হলে নির্বাচকরা সিদ্ধান্ত নেবে।”
    বাংলাদেশ কোচের তাই দৃষ্টি মুলত থাকছে তার দলে ফেরা খেলোয়াড়দের ওপরেই। আরও গভীরে গেলে, হয়ত ব্যাটিং অর্ডারের কয়েক জায়গায় ঘাটতি মেটাতেই। কোচের নজরে পড়তে দলে ফেরা এই খেলোয়াড়েরাও তাই হয়ত দিতে চাইবেন নিজের সর্বোচ্চটাই।