বিশ্বকাপ ফাইনাল বিশেষজ্ঞ
ব্যাপক অনিশ্চয়তা ছিল সেদিন ম্যাচটা শুরু হওয়া নিয়ে। মাঝে মাঝে ছোট ছোট বিরতি বাদ দিয়ে অনবরতই কেঁদে যাচ্ছিল আকাশ। এরকমই একটা বিরতিতে এসে ম্যাচ অফিশিয়ালরা সিদ্ধান্ত নিলেন মাঠ শুকিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে ম্যাচ, যেখানে প্রতিটি দল ৩৮ ওভার করে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবে। কিসের কি? ফের শুরু হল আকাশের কান্না। খেলোয়াড়দের মধ্যে আলসেমিও চলে আসতে শুরু করে দিয়েছে ততক্ষনে। খেলা মাঠে গড়াতে গড়াতে দুপুর পেরিয়ে বিকেল, টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামল অস্ট্রেলিয়া। মেঘলা আবহাওয়ায় সিক্ত পিচে শ্রীলঙ্কান বোলারদের আধিপত্যটাই ছিল প্রত্যাশিত। অন্য অসি ব্যাটসম্যানদের উপর আধিপত্যটা তাঁরা ঠিকই ধরে রেখেছিলেন, একজন বাদে। সেই একজন একাই সর্বনাশ করলেন শ্রীলঙ্কার। তিনি বিশ্বকাপ ফাইনাল বিশেষজ্ঞ অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
১৯৯৯-এর বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানের সাথে করেছিলেন ঝড়ো অর্ধশতক, ফিফটি ছিল ২০০৩ আসরের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষেও। তবে ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল মহাকাব্যিক এক ইনিংস। ১০৪ বলে ১৪৯ রানের সে ইনিংসে চার মেরেছিলেন তিনি ১৩টি, আর ৮বার বাতাসে ভাসিয়ে সীমানা ছাড়া করেছেন বলকে। তৃতীয় ওভারে চামিন্দা ভাসকে একটি চার ও একটি ছয় মেরে শুরু করেছিলেন যে ধ্বংসযজ্ঞের, ৩১তম ওভারে গিয়ে ইতি ঘটে সেটার। অসিদের রান ততক্ষণে ২ উইকেটে ২২৪।
বিস্ময়ে বিমূড় হয়ে পড়েছিলেন শ্রীলঙ্কান বোলাররা। সেদিনের ম্যাচটায় গিলক্রিস্টের একক আধিপত্যটা ছিল এতটাই স্পষ্ট, যে স্কোরবোর্ডে আর কোন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের নামের পাশে ছিল না একটি ফিফটিও। বলতে গেলে গিলক্রিস্টের একার নৈপুণ্যে নির্ধারিত ৩৮ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ২৮১। একটু পরপর বৃষ্টির বাদ সাধার সে ম্যাচে বৃষ্টি আইন ও আইসিসির প্রহসনমূলক আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল ম্যাচের শেষ কিছুটা সময়কে, সে আবার অন্য গল্প। ছবি-সূত্রঃগেটিইমেজেস