পরিবর্তনের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে আফগানদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১২৭
৩য় ওয়ানডে, চট্টগ্রাম (টস-আফগানিস্তান/ব্যাটিং)
আফগানিস্তান- ১২৬, ৪৫.২ ওভার (ওমরযাই ৫৬, শহীদি ২২, মুজিব ১১, শরিফুল ৪/২১, তাসকিন ২/২২, তাইজুল ২/৩৩)
সিরিজটা হয়ত আগেই খুইয়ে বসেছে বাংলাদেশ। তবে একাদশে ফেরা শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম ও সেই সাথে তাসকিন আহমেদ যেন মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপের তেজটা এখনও কমেনি। এই তিন জনের দাপটে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের সর্বনিম্ন ওয়ানডে সংগ্রহের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়তে হল আফগানদের, সেটাও বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ ওয়ানডে সংগ্রহের রেকর্ড গড়ার পরের ম্যাচেই।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বসে থাকার পর আজ ফিরেই যেন বাইশ গজে আগুন ঝরালেন তাসকিন; সেই সাথে শরিফুলও যেন আসা যাওয়ার মাঝে থাকার ক্ষোভটা ঝাড়লেন ওই বাইশ গজেই। ব্যাটিং নেওয়ার পরেও শুরু থেকেই খাবি খেতে থাকা আফগানদের ওপর রাজত্ব বিস্তার করে তৃতীয় ওভারে শরিফুল হানেন জোড়া আঘাত। ইব্রাহিম জাদরানের পর রহমত শাহকেও শরিফুল ফেরালেন উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করেই। আফগানদের ভিত অবশ্য শুরুতেই একেবারে নড়ে গেল ষষ্ঠ ওভারেই তাদের গত ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান রহমানউল্লাহ গুরবাজ ফিরলে; হন্তারক এবার তাসকিন। সেই মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়েই ২২ বলে ৬ রানের দুঃসহ এক ইনিংস শেষে থামতে হয় গুরবাজকে। তবে এদিন যেন নিজেকে প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর শরিফুল আফগানদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখার পণ করেই নেমেছেন। হাঁফ ছাড়ার সুযোগ না দিয়ে নবম ওভারেই মোহাম্মদ নবীকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েও প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই চার উইকেট খুইয়ে বসার ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি আফগানিস্তান।
সাগরিকায় পেসারদের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই আফগানদের নাভিশ্বাস ছুটিয়ে ছাড়েন এরপর স্পিনাররা। সাকিব আল হাসানের স্পেলের জন্য তো কোনও জবাবই যেন ছিল না আজ আফগানদের কাছে। সাকিবের সাথে আঁটসাঁট লাইনে বলে করে যাওয়া তাইজুল ইসলামের সৌজন্যে তাই আফগানরা আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি। সাকিবের পাতা এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে নাজিবউল্লাহ জাদরান ফেরার পর ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করতে থাকা হাশমতউল্লাহ শহীদির স্টাম উপড়ে তার ৫৪ বলে ২২ রানের ইনিংসের ইতি টানেন তাইজুল। শরিফুলের চতুর্থ শিকার হয়ে এরপর আব্দুল রহমান ফিরলে লোয়ার অর্ডার নিয়ে শেষ একটা চেষ্টা করেছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরযাই।
অন্য প্রান্তে আসাযাওয়ার মাঝে অনড় থেকে দলকে সম্মানজনক অবস্থানে নেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন এই বোলিং অলরাউন্ডার। সাকিবের ওভারের কোটা পূর্ণ করে মাত্র ১৩ রান দেওয়া অসামান্য এক স্পেলের বিপরীতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়ে ফিফটিও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে যখন থামলেন, তখন তার ৭১ বলে ৫৬ রানের ইনিংসটাও আফগানদের এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়া থেকে রেহাই দিতে পারেনি।