• আফগানিস্তানের বাংলাদেশ সফর ২০২৩
  • " />

     

    জানাতের হ্যাটট্রিকে হৃদস্পন্দন থামতে বসা বাংলাদেশের হৃদয় জিতলেন হৃদয়

    জানাতের হ্যাটট্রিকে হৃদস্পন্দন থামতে বসা বাংলাদেশের হৃদয় জিতলেন হৃদয়    

    ১ম টি-টোয়েন্টি, সিলেট (টস-বাংলাদেশ/ফিল্ডিং)
    আফগানিস্তান-১৫৪/৭, ২০ ওভার (নবী ৫৪*, ওমরযাই ৩৩, নাজিবউল্লাহ ২৩, সাকিব ২/২৭, মিরাজ ১/১৩, নাসুম ১/২০)
    বাংলাদেশ- ১৫৭/৮, ১৯.৫ ওভার (হৃদয় ৪৭*, শামীম ৩৩, সাকিব ১৯, জানাত ৩/১৫, ফরিদ ১/১৭, মুজিব ১/২২)
    ফলাফল: বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী


     

    বাংলাদেশ ভক্তদের হৃদয়ে হয়ত ভয়ে পানি চলে এসেছিল; সেই পানি সরিয়েছেন হৃদয়ই। তাওহিদ হৃদয়ের অপরাজিত ইনিংসের সাথে শামীম হোসেন পাটওয়ারির প্রতি-আক্রমণে বাংলাদেশ শেষমেশ জয় পেয়েছে। তবে শেষ ওভারে করিম জানাত যখন হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলেন তখন ম্যাচ যেতে পারত যেকোনো দিকেই; যেতে দেননি হৃদয় ও শামীমের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী সতীর্থ শরিফুল ইসলাম, নেমেই প্রথম বলে চার মেরে।

    ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের ইনিংসের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা। পাওয়ারপ্লেতে আফগানিস্তানের চেয়ে এক উইকেট কম খোয়ালেও তাদের ৪০ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৩৭ রান; সেটাও রনি তালুকদার ও নাজমুল হোসেন শান্তকে হারিয়ে। পাওয়ারপ্লের পরপরই হুট করে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে রশিদ খানকে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ১৮ রানে ফিরলেন লিটনও। সেখান থেকে সাকিব আল হাসান চেষ্টা করেছিলন ইনিংস মেরামতের, হৃদয়কে সঙ্গী করে। তবে যখনই হাত খোলা শুরু করলেন তার কিছুক্ষণ পরেই ফরিদ আহমেদের মামুলি বলে বাউন্ডারিতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৭ বলে ১৯ রানে ফিরলেন সাকিব।

    সেখান থেকেই ম্যাচ ভোজবাজির মত পালটে ফেললেন মুলত উইকেটে নবাগত শামীম। এক প্রান্ত হৃদয় আগলে রাখলে শামীম উইকেটের পেছনের অঞ্চলটা ব্যবহার করলেন দারুণভাবে।  ১৩-তম ওভারে দুজন মিলে ওমরযাইয়ের ওপর চড়াও হয়ে নিলেন ২১ রান। সেই ওভারেই যেন ম্যাচটা ঘুরে গেল বাংলাদেশের দিকে। তবে নিজের স্পেলের শেষ ওভার করতে এসেও রশিদ খান থামান শামীমকে। ফারুকীর করা ১৭-তম ওভারে ১৬ রান এলে তখনই নিজেকে আক্রমণে এনে ২৫ বলে ৩৩ রান করা শামীমকে উইকেটের পেছনে তালুবদ্ধ করে রশিদ ওভারেও দিলেন মোটে ৫ রান।

    সেই চাপটাই পেয়ে বসল না কি কে জানে, শেষ ওভারে মাত্র ৬ রান প্রয়োজন হওয়া বাংলাদেশ খেই হারিয়ে বসল। অথচ প্রথম বলটাই চার মেরে শুরু করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮ রান করে পরের বলেই মিড উইকেটে সরাসরি ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরলে, পরের বলে অদ্ভুতভাবে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তাসকিন। পরের বলে জানাতকে আক্রমণ করে ম্যাচ শেষ করতে গিয়ে নাসুম আহমেদ আকাশে বল ভাসালেন, আর জানাত পেয়ে গেলেন হ্যাটট্রিক। উইকেটে এসেই পঞ্চম বলে শরিফুল যে পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারি বের করলেন তাতে কত বাংলাদেশি হৃদয় স্বস্তি পেয়েছিল তার হয়ত ইয়ত্তা নেই।

    এর আগে টসে হেরে আফগানিস্তান পাওয়ারপ্লেতেই উইকেট হারায় ৩টি; উইকেট পান তখন পর্যন্ত বল হাতে নেওয়া তিন বোলারের তিন জনই। নাসুম, তাসকিন ও শরিফুলের শিকার হয়ে জাযাই, গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ফিরলে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয় আফগানদের। নাজিবউল্লাহকে সঙ্গী করে সেই চেষ্টাই করেছিলেন নবী। উইকেটে খুব একটা সুবিধা করতে না পারা নাজিবউল্লাহ বলপ্রতি ২৩ রান করে মিরাজের শিকার হয়ে ফিরলে কাজটা নবীর জন্য আরও কঠিন হয়ে যায়। তবে সেই কাজটা মুহূর্তেই সহজ বানিয়ে ফেলেছিলেন উইকেটে এসেই আক্রমণে যাওয়া ওমরযাই। ১৮ বলে ৩৩ রান করে ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকা ওমরযাই ১৯-তম ওভারে ফিরেছিলেন সাকিবের শিকার হয়ে, তাসকিনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। শেষ পর্যন্ত ৪০ বলে ৫৪* রানে অপরাজিত থেকে নবী শেষ চার ওভারে আফগানদের তোলা ৫৩ রানে রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা ম্যাচে শেষের সেই আক্রমণটা তাদেরন জন্য কাজে এলেও স্নায়ু ধরে রেখে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।