• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ‘এল-কাইসেডো’তেও ড্রয়ে থামল চেলসি-লিভারপুল

    ‘এল-কাইসেডো’তেও ড্রয়ে থামল চেলসি-লিভারপুল    

    চেলসি ১:১ লিভারপুল 


    কাইসেডো-যুদ্ধের সমাপ্তি না দেখেই মৌসুম শুরু করা চেলসি ও লিভারপুল চারবারের লড়াই শেষে গোলের দেখা পেলেও ভাঙতে পারেনি ড্রয়ের ধারা। লুইস ডিয়াজ ও অভিষিক্ত অ্যাক্সেল ডিসাসির গোলে স্টামফোর্ড ব্রিজে ১-১ ড্র নিয়ে উদ্বোধনী ম্যাচ শেষ করেছে দুই দল। এ নিয়ে টানা সপ্তমবারের মতো ড্রয়ে শেষ হলো চেলসি-লিভারপুল। 

    ম্যাচের আগের এক সপ্তাহ বেশ তর্জন-গর্জন চলেছে দুই ক্লাবের মধ্যে। ম্যাচ নিয়ে নয়, দুটি দলবদল নিয়ে। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের খুঁজে থাকা চেলসি ও লিভারপুল টার্গেট করেছিল যথাক্রমে মইসেস কাইসেডো (ব্রাইটন) ও রোমিও লাভিয়াকে (সাউদাম্পটন)। দেড় মাস চেষ্টা করেও যখন কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না দুই দলবদলে, এবং ঘনিয়ে আসছিল লিগ, চেলসি অগত্যা বিড দিয়ে বসে লাভিয়ার জন্য। জবাবে লিভারপুল বিড পাঠায় কাইসেডোর জন্য। বেঁধে যায় বিডিং যুদ্ধ। তর্কসাপেক্ষে বাজারের শীর্ষ ডিফেন্সিভ মিড কাইসেডোর জন্য ব্রিটিস ট্রান্সফার রেকর্ড ১১১ মিলিয়ন পাউন্ড বিড দিয়ে জয়ী হয় লিভারপুল। কিন্তু পরদিন লিভারপুলের হাইজ্যাককে ‘পাল্টা হাইজ্যাক’ করার চেষ্টা করে চেলসি। যেই চেষ্টা এখনো চলমান। 

    কাইসেডো নাটকের শেষ না দেখেই মৌসুম শুরু করে দুই দল। যার ছাপ তাদের খেলাতেও ছিল। দুই দলই এদিক মাঠে নামে কোনো স্বীকৃত ডিফেন্সিভ মিড ছাড়া। লিভারপুল এই পজিশনে খেলায় বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে নাম্বার টেন হিসেবে খেলা অ্যালেক্সিস ম্যাক আলিস্টারকে। চেলসি খেলায় আরেক স্বভাবজাত অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কনর গালাগারকে। চেলসির দুই উইং-ব্যাক মিডফিল্ডে উঠে আসায় বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে যায় তারা। লিভারপুলে ম্যাক আলিস্টারের সঙ্গে মিডফিল্ডে খেলেছেন ডমিনিক সবজলাই ও কোডি গাকপো, দুজন স্বভাবজাত অ্যাটাকার। যার ফলে মিডফিল্ড থেকে তারা খুব দ্রুত সামনে বল পাঠাতে সক্ষম হলেও পিছিয়ে যায় বল দখলের লড়াইয়ে। রক্ষণবিহীন এই মিডফিল্ডের জন্য স্বাভাবিক হাইলাইন ছেড়ে অনেকটা নিচে নেমেও খেলেছে লিভারপুল। 

    লো ব্লক রক্ষণ নিয়ে ম্যাচের শুরুটা ভালোই করেছে লিভারপুল। শুরুতেই বারের জন্য একবার গোলবঞ্চিত হওয়ার পর ম্যাচের ১৮ মিনিটে রাইট উইং থেকে মেসি-সুলভ এক মাঠচেড়া পাসে অপর প্রান্তে থাকা ডিয়াজকে খুঁজে নেন সালাহ। একদম গোলরক্ষকের সামনে বল পাওয়া ডিয়াজ খুঁজে নেন জাল। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। এর ১০ মিনিটের মাথায় মিডফিল্ড থেকে চেলসির পুরো রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের পাঠানো এক থ্রু বল নিয়ে সরাসরি গোলরক্ষকের সামনে চলে যান সালাহ। আলতো শটে করেন গোল। কিন্তু অল্পের জন্য অফসাইড হওয়ায় সেই গোল বাতিল করে ভিএআর। 

    প্রথমার্ধের শেষে ১০-১৫ মিনিটে ম্যাচে ফিরে আসে চেলসি। ৩৭ মিনিটে লিভারপুল একটি কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ডানপাশ থেকে বেন চিলওয়েলের ফিরতি ক্রসে গোল করে বসেন মাত্র এক সপ্তাহ আগে দলে যোগ দেওয়া ফরাসি ডিফেন্ডার অ্যাক্সেল ডিসাসি। এর দুই মিনিটের মাথায় লিভারপুলের রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে চিলওয়েল নিজেও গোল করে বসেন। কিন্তু অফসাইডের জন্য বাতিল হয় এই গোল। 

    উত্তপ্ত প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই কিছু নেতিয়ে যায়। বিশেষ করে লিভারপুল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সফরকারীদের কাউন্টার-প্রেস সিস্টেম যেন পুরোপুরি ভেঙে যায়। প্রথম ১৫-২০ মিনিট বল ও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চেলসির কাছে থাকে। নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একাধিক আক্রমণ করলেও জ্যাকসন-স্টার্লিংরা ফিনিশ করতে ব্যর্থ হন। দ্বিতীয়ার্ধের শেষাংশে আক্রমণভাগ পুরোপুরি বদলে তরুণদের নামায় লিভারপুল। কার্টিস জোন্স, হার্ভি এলিয়ট, বেন ডোকের সঙ্গে মাঠে নামেন ডারউইন নুনেজ। এরপর লিভারপুল নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেলেও জয়সূচক গোলের দেখা আর পায়নি।