বিশ্বকাপের ১০ ভেন্যু: কোথাকার উইকেট কেমন?
বেঙ্গালুরু থেকে ধর্মশালা, দিল্লী থেকে কলকাতা, ভারতজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১০টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ। কোনো মাঠ ব্যাটিং-বান্ধব, কোনো মাঠ বোলিং। কোথাও বাউন্স বেশি, কোথাওবা স্পিন। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের কোন স্টেডিয়াম কেমন-
নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম
আহমেদাবাদ
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫টি
ধারণক্ষমতা: ১,৩২,০০০
প্রথম ইনিংস গড়: ২৩৫
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ৩২৫/৫ (ভারত- ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০০২)
ফাইনালসহ বিশ্বকাপের মোট ৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই নবর্নিমিত মাঠে। ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম হিসেবে উদ্বোধন হওয়ার আগে এই মাঠ পরিচিত ছিল সরদার প্যাটেল স্টেডিয়াম হিসেবে। নতুন মাঠে ওয়ানডে হয়েছে মাত্র তিনটি, সবগুলোই ছিল লো-স্কোরিং। নতুন বলে এই মাঠে যথেষ্ট সুইং পেয়েছেন আইপিএলের বোলাররা। তবে বিশ্বকাপে যেকোনো ধরনের পিচ দেখা যেতে পারে এখানে।
ইডেন গার্ডেনস
কলকাতা
ধারণক্ষমতা: ৬৩,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২৪১
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ৩১৭/৩ (ভারত-শ্রীলঙ্কা, ২০০৯)
একটি সেমিসহ মোট ৫টি ম্যাচ আয়োজন করতে যাচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ইডেন গার্ডেনস। একসময় স্লো ও স্পিনার-বান্ধব উইকেট হিসেবে পরিচিতি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইডেনের উইকেট বেশ পেস-বান্ধব হয়ে উঠেছে। উইকেটের মতো আউটফিল্ডও বেশ ফাস্ট। বিশ্বকাপের রানের বন্যা হতে পারে এই মাঠে।
রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম
হায়দরাবাদ
উদ্বোধন: ২০০৪
ধারণক্ষমতা: ৩৮,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৩
প্রথম ইনিংস গড়: ২৮৮
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ২৫২/৫ (দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত, ২০০৫)
হায়দরাবাদে সাধারণত বড় স্কোরের ম্যাচই হয়। বছরের শুরুতে এই মাঠে ভারতের বিপক্ষে ৩৫০ রান প্রায় চেজ করে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। কিছুদিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের সাথে এরকম টার্গেট হেসেখেলে চেজ করেছে কিউইরা। আইপিএলসহ সব ধরনের ম্যাচেই এখন প্রচুর রান হয় এই মাঠে।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম
দিল্লী
ধারণক্ষমতা: ৪৮,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২২৩
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ২৮১/৪ (ভারত-শ্রীলঙ্গা, ১৯৮২)
পূর্বে ফিরোজ শাহ কোটলা হিসেবে পরিচিত এই মাঠের উইকেট সাধারণত ধীরগতির হয়ে থাকে। এই মাঠের সর্বশেষ ওয়ানডেতে ৯৯ রানে অল-আউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেদিন মোহাম্মাদ সিরাজ পাঁচ উইকেট পেলেও সাধারত স্পিনাররাই বেশি উইকেট পান দিল্লির এই মাঠে ।
হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম
ধর্মশালা
ধারণক্ষমতা: ২৩,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২১৪
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ২২৭/৩ (ইংল্যান্ড-ভারত, ২০১৩)
সমুদ্রপিষ্ঠ থেকে প্রায় দেড় হাজার মিটার উপরে অবস্থিত এই দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামে বলের বাউন্স ও ফ্লাইট সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। পেসাররা বেশি সাহায্য পান এই কন্ডিশনে। স্পিনাররা অতটা না। পরে ব্যটিং করা দল সম্প্রতি সব ম্যাচ জিতেছে এই মাঠে।
এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম
চেন্নাই
ধারণক্ষমতা: ৫০,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২২৪
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া:২৯১/২ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত, ২০১৯)
চিপক নামে পরিচিত এই স্টেডিয়াম সাধারণত স্পিনার-বান্ধব হয়ে থাকে। একসময় এ মাঠে রান তোলা কঠিন ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুর রান উঠেছে এখানে। বিশেষ করে এবারের আইপিএলে। সর্বশেষ তিন ওয়ানডেতেও গড়ে ২৮০ রান করে উঠেছে প্রথম ইনিংসে।
ভারত রত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপায়ী একানা ক্রিকেট স্টেডিয়াম
লক্ষ্ণৌ
ধারণক্ষমতা: ৫০,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২১৯
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া:২৬৯/৩ (দক্ষিণ আফ্রিকা নারী- ভারত নারী, ২০২১ )
জয়ের সংখ্যা
প্রথমে ব্যাটিং ২:৭ প্রথমে বোলিং
স্লো ও স্পিন-বান্ধব উইকেটের জন্য পরিচিত লক্ষ্ণৌতে, এবারের আইপিএলে হাই-স্কোরিং ফ্ল্যাট পিচও দেখা গেছে। স্লো বল করতে পছন্দ করা পেসাররা এই উইকেট পছন্দ করবেন। বিশ্বকাপের সবচেয়ে লো-স্কোরিং মাঠ হতে পারে উত্তর প্রদেশের এই স্টেডিয়াম।
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম
পুনে
ধারণক্ষমতা: ৩৬,৪০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ৩০৭
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ৩৫৬/৭ (ভারত-ইংল্যান্ড, ২০১৭ )
পুরোপুরি ব্যাটিং স্বর্গ, এখানে স্পিনারদের জন্য কিছু নেই। পেসাররা কিছুটা সুবিধা করতে পারলেও এই ফ্ল্যাট উইকেট ব্যাটারদের জন্যই।
চেন্নাস্বামী স্টেডিয়াম
বেঙ্গালুরু
ধারণক্ষমতা: ৪০,০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২৩২
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ৩২৯/৭ (আয়ারল্যান্ড-ইংল্যান্ড, ২০১১)
এই মাঠে বাউন্ডারি কিছুটা ছোট, স্কয়ারে ৬০ মিটারের চেয়েও কম। ছোট বাউন্ডারি, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ও উইকেট, সব মিলিয়ে বেঙ্গালুরু একটি ব্যাটিং স্বর্গ। গত সাত বছরে প্রথম ইনিংসে গড়ে ৩১০ রান উঠেছে এই মাঠে। এখানে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করাটাই প্রেফার করে সব দল।
ওয়াংখেরে স্টেডিয়াম
মুম্বাই
ধারণক্ষমতা: ৩৩,০০০
বিশ্বকাপ ম্যাচ: ৫
প্রথম ইনিংস গড়: ২৩৪
সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া: ২৮৪/৪ (নিউজিল্যান্ড-ভারত, ২০১৭)
ওয়াংখেরের উইকেট বুঝা একটু কঠিন। ভালো বাউন্স-সমৃদ্ধ লাল মাটির এই উইকেটে পেসাররা একটু বাড়তি সুইং পেয়ে থাকেন। মিডল ওভারে স্পিনারদের জন্যও সুবিধা নিয়ে আসে এই উইকেট। বাউন্ডারি কিছুটা ছোট ও আউটফিল্ড ফাস্ট হওয়ায় এখানে রানেরও কমতি হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে এখানে পরে ব্যাট করেই বেশি ম্যাচ জিতেছে দলগুলো।