• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    আফগানিস্তানকে কীভাবে হারাতে পারবে বাংলাদেশ?

    আফগানিস্তানকে কীভাবে হারাতে পারবে বাংলাদেশ?    

    ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। বিশ্বকাপে শুভসূচনা চাইলে চেনাজানা এই প্রতিপক্ষকে হারাতেই হবে বাংলাদেশের। কীভাবে আফগানিস্তানকে হারাতে পারবে বাংলাদেশ? আফগানদের কোথায় আঘাত করলে জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে সাকিবদের?

    ভেন্যু

    এই ম্যাচের ভেন্যু হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা স্টেডিয়াম। এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে চারটি ওয়ানডে। এই চার ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল। প্রথম ইনিংসের গড় রান ২১৪, দ্বিতীয় ইনিংসের ২০১।

     

    দ্রুত গুরবাজকে ফেরানো

     

    প্রথমত ম্যাচের শুরুতেই ভেঙে দিতে হবে আফগানদের শক্তির মূল জায়গা ওপেনিং জুটি। নির্দিষ্ট করে বললে রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট যত দ্রুত নিতে পারবে বাংলাদেশ ততই এগিয়ে থাকবে ম্যাচে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যতবার পঞ্চাশ বা তার বেশির রানের ইনিংস খেলেছেন গুরবাজ, ততবারই ম্যাচেই জিতেছে আফগানিস্তান। নতুন বলে গুরবাজের জন্য সাকিবের অস্ত্র হতে পারেন বাঁহাতি পেসার শরীফুল। সর্বশেষ দেখায় শরীফুলই ফিরিয়ছেন তাকে। ২৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে সাতবার বাঁহাতিদের উইকেট দিয়েছেন গুরবাজ। সবচেয়ে বেশি তিনবার তার উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সেক্ষেত্রে শরীফুল বা মোস্তাফিজ ব্যর্থ হলেও সাকিব থাকছেন গুরবাজের জন্য। 

     

    আবারও মেইকশিফট ওপেনার মিরাজ?

    এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে মেইকশিফট ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরি করা মেহেদী হাসান মিরাজ হতে পারেন ট্রাম্প কার্ড। গত দুই বছরে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটারদের একজন তিনি। আফগানদের বিপক্ষে কমপক্ষে পাঁচ ম্যাচে খেলেছেন এমন বাংলাদেশী ব্যাটারদের মধ্যে মিরাজের গড়ই  সবচেয়ে বেশি, ৭৬.৩৩। 

    সর্বশেষ এশিয়া কাপের ম্যাচে আফগান স্পিনারদেরও সামলেছেন দারুণ। ১১২ রানের ইনিংসের দুই-তৃতীয়াংশ রানই মিরাজ তুলেছিলেন আফগান স্পিন ত্রয়ী রশিদ-মুজিব-নবীর বল থেকে। মিড ওভারের সফল বোলার রশিদকে খেলেছেন দেখেশুনে। পাওয়ারপ্লেতে মুজিবকে দেননি কোনো সুযোগ। সেই ম্যাচেই রশিদ প্রথমবার বাংলাদেশের বিপক্ষে বল করে ওভারপ্রতি রান দিয়েছিলেন ছয়ের বেশি ।

     

     

    এশিয়া কাপে আফগান স্পিনত্রয়ীর বিপক্ষে মিরাজ

    বোলার

    রান

    বল

    মুজিব উর রহমান

    ২৭

    ২৫

    মোহাম্মদ নবী

    ২৮

    ২৯

    রশিদ খান

    ১৮

    ২৪

     

    ম্যাচ শেষে অধিনায়ক সাকিবও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন আফগানদের বিপক্ষে মিরাজের রেকর্ডের কথা। জানিয়েছিলেন মিরাজকে মেইকশিফট ওপেনার হিসেবে খেলানোর নেপথ্যের ভাবনা, 'আগেও মিরাজ যখনই টপ-অর্ডারে সুযোগ পেয়েছে, নিজেকে প্রমাণ করেছে। আমরা সবসময়ই জানি ওর সামর্থ্য আছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওর ভালো রেকর্ড আছে। আমরা ভাবলাম কেন ওকে চেষ্টা করে দেখবো না ভালো উইকেটে। সৌভাগ্যবশত সেটি কাজে এসেছে।'

    বিশ্বকাপে সব ম্যাচে মিরাজ ওপেন না করলেও আফগানদের বিপক্ষে তাকে শুরুতে দেখা যেতেও পারে।

     

    সাকিব-তাসকিনদের বানি আফগান মিডল অর্ডার

    আফগান টপ অর্ডারে ফাটল ধরাতে পারলে বাংলাদেশের সামনে থাকবেন হাশমতউল্লাহ, মোহাম্মদ নবী, নাজিবউল্লাহ জাদরানরা। তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন সাকিব- তাসকিন জুটি। এই তিন ব্যাটারের মধ্যে সাকিবের বলেই সবচেয়ে বেশি তিনবার করে আউট হয়েছেন জাদরান- নবী। তাসকিনও বেশ সফল এই দুজনের বিপক্ষে। তাসকিন দুইবার করে পেয়েছেন দুজনের উইকেট। 

     

    মিড ওভারসে স্পিন জাদু

    মিড ওভারসে পুরনো হওয়া বলে সাকিবের সাথে মিরাজের স্পিনজুটিও প্রশ্ন ছুড়বে আফগান ব্যাটারদের। ২০২১ থেকে এই দুই স্পিনার মিড ওভারে বল করে নিয়েছেন ৬৭ উইকেট। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর বোলারদের মধ্যে বোলিং গড় চতুর্থ সর্বনিম্ন হলেও ইকোনমি রেটে সবার চেয়ে এগিয়ে সাকিব। 

     

    মিড ওভারসে সাকিব-মিরাজ 

     

    সাকিব    

    বোলিং : ২১০.৫ ওভার

    উইকেট: ৩৪

    ইকোনমি : ৪.০৫

    বোলিং গড় : ২৫.১১

     

     

    মিরাজ 

    বোলিং : ২৩৪.৪ ওভার 

    উইকেট : ৩৩

    ইকোনমি : ৪.৭৫

    বোলিং গড় : ৩৩.৭৮

     

     

    এই সময়ে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বোলারদের মধ্যে মিড ওভারে সাকিবের চেয়ে বেশি ডট বল করেছেন কেবল তিনজন। এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আফগানদের ডট বলের চাপে ফেলে উইকেট আদায় করে নিতে পারেন সাকিব। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডট আদায় করেছেন মিরাজ। 

     

    মিড ওভারে সর্বোচ্চ ডট বল 

    বোলার

    ডট বল

    আকিল হোসেন

    ৮৯৯

    মেহেদী হাসান মিরাজ

    ৭৪৮

    ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা

    ৭২৩

    সাকিব আল হাসান

    ৭১৯

     

    সর্বশেষ পাঁচ দেখা 

    দুই দলের সর্বশেষ পাঁচ দেখায়ন তিন ম্যাচ জিতে বাংলাদেশই এগিয়ে। তবে সম্প্রতি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে আফগানরা।  কিন্তু বিশ্বকাপে দুইবারের দেখায় একবারও জিততে পারেনি আফগানিস্তান। ২০১৫ সালের পর ২০১৯ বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের কাছে হেরেছেন রশিদ-নবীরা।