দাপুটে ডি লিডের ঝাপ্টা সামলে শাকিল-রিজওয়ানের জোড়া ফিফটি, লোয়ার অর্ডারের সাহায্যে পাকিস্তানের ২৮৬
২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, পাকিস্তান-নেদারল্যান্ডস (টস-নেদারল্যান্ডস/বোলিং)
পাকিস্তান - ২৮৬, ৪৯ ওভার (শাকিল ৬৮, রিজওয়ান ৬৮, নাওয়াজ ৩৯, ডি লিড ৪/৬৩, অ্যাকারম্যান ২/৩৯, ভ্যান বিক ১/৩০)
গতকাল নিজেদের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর আগে পরিকল্পনাটা পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন ডাচ অলরাউন্ডার বাস ডি লিড - সেমিফাইনাল। রাস্তা অতদূর গড়াবে কি না তা সময়ই বলবে, তবে শুরু থেকেই যে সেই স্বপ্ন বুকে ধরেই তারা লড়বে, প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেটাই এখন পর্যন্ত দেখাল নেদারল্যান্ডস। আর ডি লিড নিজেই সেখানে অগ্রণী ভুমিকায় থাকলেন। যে মাঠে টসের সময় পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বলেছিলেন ২৯০-৩০০ রানের মত প্রথমে ব্যাট করে করা উচিৎ সেখানে পাকিস্তান মাঝে ধুঁকেছিল; লোয়ার অর্ডারের সৌজন্যে অবশ্য তার কাছাকাছি চলে গিয়েছে।
পাকিস্তানের শঙ্কার শুরুটা ইনিংসের একেবারে অগ্রভাগেই। দশ ওভারের মধ্যেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন পাকিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটার; যার মধ্যে ছিলেন উইকেটে ১৮ বলে ৫ রান করে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। দশম ওভারে ইমাম-উল-হককে ফেরানোর পরের ওভারেই সাউদ শাকিলকে ফেরানোর সুযোগ তৈরি করেছিলেন আরিয়ান দত্ত। তবে স্লিপে বিক্রমজিত সিং ক্যাচ ফেললে সেখান থেকেই শুরু হয় পাকিস্তানের ইনিংস মেরামত। ১৪-তম ওভারে তো ঘটে আরেক উদ্ভট কাণ্ড; আম্পায়ারদের ভুলে ওভার শেষ হয় পাঁচ বলেই। এই বছর আরও একবার হয়েছে এরকম ভুল; সেবার ওভারে বল হয়েছিল সাতটি, সেবারও এক দলের নাম পাকিস্তান। ঘটনাটা পাকিস্তান ও ভারতের মেয়েদের খেলার।
সেই ভুলের পর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গী করে শাকিল দলকে এগিয়ে নিয়ে যান আপন গতিতে। রিজওয়ান এক প্রান্ত আগলে রাখলে আক্রমণের দায়িত্ব বুঝে নেন শাকিল; পাকিস্তান দলীয় শতরান পূর্ণ করে ১৯.৩ ওভারেই। সেখান থেকেই মাত্র ৩২ বলে শাকিল ফিফটি পূর্ণ করার পর ৫৮ বলে নিজের ১৩-তম ফিফটি পেয়ে যান রিজওয়ান। তবে ছুটতে থাকা শাকিল হুট করে মনোযোগ হারিয়ে দত্তের নিরীহ এক বলে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ৫২ বলে ৬৮ রানে।
সেখান থেকে আরও এক দফা খেই হারিয়ে বসে পাকিস্তান। ডি লিডের দারুণ এক ভেতরে ঢোকা বলে স্টাম্প খুইয়ে রিজওয়ান ফেরেন ৭৫ বলে ৬৮ রান করে। ওই ওভারের শেষ বলেই ইফতিখারকেও ফেরান ডি লিড। তবে সেই ধাক্কা সামলে পাকিস্তানও লড়াইয়ে ফেরে আরও একবার; মোহাম্মদ নাওয়াজ ও শাদাব খানের সৌজন্যে। শাদাব অবশ্য ফিরতে পারতেন ১৬ রানেই, অ্যাকারম্যানের বলে ডি লিড তো সেই ক্যাচ নিতেই পারলেন না উল্টো হয়ে গেল ছয়। সেই ক্যাচ মিস, রান আউট মিস ডাচদের অবশ্য ভুগিয়েছে ভালই। ৪৪-তম ওভারে ৩২ রানে থাকা শাদাবের স্টাম্প উপড়ে ফেলার পরের বলেই হাসান আলীকেও ফিরিয়েছিলেন ডি লিড। কিছুক্ষণ পরে রান আউট হয়ে থেমেছিলেন ৪৩ বলে ৩৯ রান করা নাওয়াজও। তবে শাদাব-নাওয়াজ জুটি নিজেদের কাজটা ততক্ষণে সেরে ফেলেছিলেন মোটামুটি। শেষ দুই জুটিতে ৩৪ রান এলে পাকিস্তান তাই পেয়ে যায় তাদের প্রত্যাশিত সংগ্রহের কাছাকাছি রসদ।