মার্শ, ইংলিসের জোড়া ফিফটিতে আসরে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম জয়
২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা (টস-শ্রীলঙ্কা/ব্যাটিং)
শ্রীলঙ্কা - ২০৯, ৪৩.৩ ওভার (কুশল ৭৮, নিসাঙ্কা ৬১, আসালাঙ্কা ২৫, জাম্পা ৪/৪৭, কামিন্স ২/৩২, স্টার্ক ২/৪৩)
অস্ট্রেলিয়া - ২১৫/৫, ৩৫.৩ ওভার (ইংলিস ৫৭, মার্শ ৫২, লাবুশেন ৪০, মাদুশাঙ্কা ৩/৩৮)
ফলাফল - অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী
পয়েন্ট তালিকার তলানিতে চলে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার জন্য যেন বাঁচা-মরার লড়াই ছিল আজকের ম্যাচটা, পরিস্থিতি অনেকটা এমনি ছিল জয়ের খাতা খুলতে না পারা শ্রীলঙ্কার জন্যও। সেই লড়াইয়ে শেষমেশ জয়ী পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
২১০ রানের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা অবশ্য যেন দিচ্ছিল কোনও অশনি সংকেত। দিলশান মাদুশাঙ্কার দুর্দান্ত চতুর্থ ওভারে ১১ রানে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে থামেন আউটটার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারা ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ওই ওভারে স্টিভ স্মিথ যে বলে এলবিডব্লিউ হলেন, সেই দুর্দান্ত ইনসুইঙ্গার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অবকাশ নেই। ভয়াবহ সেই শুরুর পর অবশ্য মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে দ্রুতই ইনিংস গুছিয়ে ফেলেন মিচেল মার্শ। জুটিটায় অবশ্য লাবুশেনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য নয়। কুমারার পর ওয়েলালাগের ওপর চড়াও হয়ে একা হাতেই প্রায় লঙ্কান বোলারদের সামলান মার্শ। সেই সুবাদে ৩৯ বলেই ফিফটি পেয়ে গেলেও পরের ১২ বলে পান মোটে ১ রান। অন্য দিকে লাবুশেনও সুবিধা করতে না পারায় চাপ বাড়তে থাকলে ডাবল বের করতে গিয়ে করুনারত্নের দুর্দান্ত থ্রোতে ৫১ বলে ৫২ রানেই থামতে হয় মার্শকে।
লাবুশেনের কাজটা এরপর অবশ্য সহজ করে দেন উইকেটে আসা জশ ইংলিস। লাহিড়ু কুমারাকে পরপর দুই বলে যে আপারকাট আর হুক করলেন তাতেই যেন দমে গিয়েছিল লঙ্কানরা। তারই সুফল তিনি ভোগ করেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ফিফটি দিয়ে। পরে ৬০ বলে ৪০ রান করে মাদুশাঙ্কার তৃতীয় শিকার হয়ে লাবুশেন ফিরলে শেষদিকে ৫৯ বলে ৫৮ রান করে ইংলিশ থামেন ওয়েলালাগের শিকার হয়ে। তবে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার থিকশানা ও এদিনের সেরা বোলার মাদুশাঙ্কাকে লক্ষ্য বানিয়ে ২০ বলে ৩১* রান করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৮৮ বল হাতে রেখেই এনে দিয়েছেন অজিদর প্রথম জয়।
এর আগে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের একেবারে নিষ্ক্রিয় করে নিজেদের বাজে ফর্ম পেছনে ফেলে বড় ইনিংস গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই ওপেনার। ১৮-তম ওভারেই দলীয় শতরান পূর্ণ করে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে দুঃখের ভেলায় ভাসানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দুজন। ৫৭ বলেই পেরেরা ফিফটি পেয়ে গেলে ৫৮ বলে নিসাঙ্কা পেয়ে যান ফিফটি। তবে কামিন্সের আঘাতে নিসাঙ্কা এরপর ফেরেন ৬৭ বলে ৬১ রানে; যার জন্য ওয়ার্নারকেই ধন্যবাদ দিতে পারেন তিনি। সেই কামিন্সই কুশলের স্টাম্প উপড়ে ৮২ বলে ৭৮ রানে তাকে থামান।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং বিপর্যয়টায় এরপর নেতৃত্ব দেন জাম্পা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেন্ডিসকে তিনি থামান ডিপে আরও একবার ওয়ার্নারের দুর্দান্ত ক্যাচে; এরপর সাদিরাকে থামান এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। মাঝে অল্প সময়ের জন্য বৃষ্টি-বিরতি পড়লে সেটার পরে আরও সুবিধা করতে পারেনি লঙ্কানরা। এক বল পরেই স্টার্কের শিকার হয়ে ধনঞ্জয়া ফিরলে শেষ ৪৯ রানেই ৫ উইকেট হারায় তারা। জাম্পা-স্টার্কের কোনও জবাবই তাদের জানা ছিল না।