আফগানদের উড়িয়ে দিয়ে নিউজিল্যান্ডের টানা চতুর্থ জয়
২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, নিউজিল্যান্ড-আফগানিস্তান (টস-আফগানিস্তান/বোলিং)
নিউজিল্যান্ড - ২৮৮/৬, ৫০ ওভার (ফিলিপস ৭১, ল্যাথাম ৬৮, ইয়াং ৫৪, নাভিন ২/৪৮, ওমরযাই ২/৫৬, রশিদ ১/৪৩)
আফগানিস্তান - ১৩৯, ৩৪.৪ ওভার ( রহমত ৩৬, ওমরযাই ২৭, ইকরাম ১৯, ফার্গুসন ৩/১৯, স্যান্টনার ৩/৩৯, বোল্ট ২/১৮)
ফলাফল - নিউজিল্যান্ড ১৪৯ রানে জয়ী
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চমকে দেওয়ার পরের ম্যাচে গতবারের রানার্স-আপদের কাছে নাস্তানাবুদ হতে হল আফগানিস্তানকে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের মাঝে নয় বলের জন্য চেপে ধরা ছাড়া ম্যাচের কোনও অবস্থাতেই তাদের চেপে ধরতে পারেনি আফগানিস্তান। কিউইরা তাই পেয়ে গেল টানা চতুর্থ জয়।
ট্রেন্ট বোল্ট-ম্যাট হেনরির তোপে শুরু থেকে সাবধানী শুরু করলেও ষষ্ঠ ওভারে হেনরিকে দুর্দান্ত এক ছয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজ হাত খোলার ইঙ্গিত দিলেও দারুণ এক ভেতরে ঢোকা বলে সেই ওভারেই স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন তিনি। বোল্টের শিকার হয়ে পরের ওভারেই ফেরেন আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি এরপর রহমত শাহকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করলেও একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। তবে তিনি যেই ক্যাচে ফিরলেন তা হয়ত এই টুর্নামেন্টের এখন পর্যন্ত সেরা কাচের দাবীদার। ফার্গুসনের কোমর সমান উচ্চতায় ওঠা বলে সুবিধা করতে না পেরে স্কয়্যার লেগে বল ভাসালে স্যান্টনার খানিকটা পিছে দৌড়ে শরীর পেছনে উড়িয়ে দিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন।
অধিনায়ক ফিরলেও আজমতউল্লাহ ওমরযাই আশা জাগিয়েছিলেন। তবে বোলার হিসেবে আশা জাগানোর পর ব্যাটার হিসেবেও সেই আশাটা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ২৭ রানে বোল্টের শিকার হয়ে তিনি ফেরার কিছুক্ষণ পরেই লড়তে থাকা রহমতও ৩৬ রানে ফিরলে তাসের ঘরের মত লুটিয়ে পড়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপ। ১০৭ রানে ৪ উইকেট থেকে ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানদের ব্যাটিং।
এর আগে কেন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে আবারও দলে ফেরা উইল ইয়াং এদিন নিজেকে মেলে ধরলেও ৭ম ওভারেই মুজিবের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ১৮ বলে ২০ রানে থামেন ডেভন কনওয়ে। তবে রাচিন রবীন্দ্রকে সঙ্গী করে বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরার পপ্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া ইয়াং ফিফটিও পেয়ে যান। দলীয় শতরানও ততক্ষণে পূর্ণ হয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে আফগানরা। আর আফগানদের ঘুরে দাঁড়ায় আজমতউল্লাহ ওমরযাইয়ের সুবাদে। ২০.২ থেকে ২১.৪ ওভারের মধ্যে মাত্র ১ রান তুলেই ৩ উইকেট খুইয়ে বসে নিউজিল্যান্ড। ওমরযাইয়ের বলে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে ৩২ রানে রবীন্দ্র ফিরলে ওই ওভারেই ৫৪ রানে থামেন উইল ইয়াং। পরের ওভারে ফর্মে থাকা মিচেলকেও উইকেটের পেছনে বন্দি করেন রশিদ খান।
সেখান থেকেই দৃশ্যপটে আবারও আসে পরিবর্তন। ৩০ ওভারে ১৩৮ রান তুলতে পারা নিউজিল্যান্ড সময় নেয় ইনিংস মেরামতে। নবী, রশিদদের যোগ্য সম্মান দিয়ে খেলতে থাকা ফিলিপস ৬৯ বলে ফিফটি পাওয়ার পর ফারুকীর করা ৪৫-তম ওভারে দুই ছয়ে ১৫ রান নিলে সেখান থেকেই গিয়ার পালটায় কিউইরা। পরের ওভারে ৬৭ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ল্যাথামও ছয়ের মিছিলে যোগ দেন তখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বোলার ওমরযাইয়ের ওভারে ১৮ রান তুলে। নাভিনের করা পরের ওভারেই অবশ্য ৭১ রানে ফিলিপস ও ৬৮ রানে ল্যাথাম তিন বলের ব্যবধানেই ফেরেন। শেষ দুই ওভারে তাও আসে ৩১ রান! মার্ক চ্যাপম্যানের ১২ বলে ২৫* রানের দারুণ ক্যামিওকে সেজন্য ধন্যবাদ দেবে কিউইরা, শেষমেশ সেই রসদটাও তাদের জন্য প্রয়োজনের চেয়েও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।