এশিয়া কাপের হতাশা পেছনে ফেলে লঙ্কানদের বিপক্ষে আফগানিস্তানের দাপুটে জয়
২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা (টস-আফগানিস্তান/বোলিং)
শ্রীলঙ্কা - ২৪১, ৪৯.৩ ওভার (পাথুম ৪৬, মেন্ডিস ৩৯, সাদিরা ৩৬, ফারুকী ৪/৩৪, মুজিব ২/৩৮, ওমরযাই ১/৩৭)
আফগানিস্তান - ২৪২/৩, ৪৫.২ ওভার (ওমরযাই ৭৩*, রহমত ৬২, শহীদি ৫৮*, মাদুশাঙ্কা ২/৪৮)
ফলাফল - আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
এশিয়া কাপে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই অবিশ্বাস্য এক জয়ের হাতছোঁয়া দূরত্বে গিয়েও হিসেবে গরমিল করে সুপার ফোরে আর যাওয়া হয়নি। সেই হতাশা ভুলে শ্রীলঙ্কাকে নাকাল করে ছাড়ল আজ আফগানিস্তান। ঐতিহাসিক এই জয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এই আসরেই তৃতীয় টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হারাল তারা।
অবশ্য ২৪২ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই দিলশান মাদুশাঙ্কার দারুণ এক ইন্সুইঙ্গারে পরাস্ত হওয়ায় রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারাতে হয়েছিল আফগানদের। রহমত শাহকে নিয়ে এরপর আরও একবার ইনিংস স্থিতিশীল করেন ইব্রাহিম জাদরান। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৫০ রান চলে এলেও আবারও মাদুশাঙ্কা হন্তারকের ভুমিকায় ফিরে এলে ৫৭ বলে ৩৯ রানে থামেন জাদরান।
তবে বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই ম্যাচ জয়ী ফিফটি পেয়ে যাওয়া রহমত এরপর জুটি বাধেন তার অধিনায়ক শহীদির সাথে। ২২-তম ওভারে দল শতরান পূর্ণ করলে রহমত আরও একটি ফিফটি পেয়ে যান ৬১ বলে। অবশ্য ফিফটি পাওয়ার পর কাসুন রাজিথার করা ২৮-তম ওভারটায় হয় নাটক। পয়েন্টে সহজ ক্যাচ পড়লে রহমত বেঁচে গেলেও ওভারের শেষ বলে করুনারত্নেকে ক্যাচ দিয়ে ঠিকই থমাএ ৭৪ বলে ৬২ রানে থাকা রহমত।
তবে তা সত্ত্বেও ম্যাচের কোনও পরিস্থিতিতেই মনে হয়নি শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ফিরতে পারে। পাঁচে নামা ওমরযাইকে নিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে এগিয়েছেন শহীদি। ৪০-তম ওভারে দলীয় ২০০ পূর্ণ হলে শহীদি ফিফটি পান ৬৭ বলে, ওমরযাই পান ৫০ বলেই। এরপর যেন রান রেট বাড়ানোর জন্য ম্যাচটা দ্রুত শেষ করতেই উঠেপড়ে লাগেন ওমরযাই। ৬২ বলে তিনি ৭২* রান করলে, আর সাথে শহীদি ৭৩ বলে ৫৭* রান করে মাঠ ছাড়লে আফগানরা পাইয় সহজ জয়।
টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই এদিন ফেরেন ওপেন করতে নামা দিমুথ করুনারত্নে। ১৫ রানে করুনারত্নে ফিরলেও পাওয়ারপ্লেতেই ৪১ রানে তুলে ফেলে শ্রীলঙ্কা। আরও একবার পাথুম নিসাঙ্কার ব্যাটে রান এলে সাথে কুশল মেন্ডিস নিজেকে মেলে ধরেন। তবে ১৮.১ ওভারের মাথায় ওমরযাইয়ের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে টানা পঞ্চম ফিফটি থেকে বঞ্চিত হন নিসাঙ্কা। সেখান থেকেই আফগান বোলাররা চাপ তৈরি করলে অধিনায়ক মেন্ডিসও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মুজিবের শিকার হয়ে ৫০ বলে ৩৯ রানে মেন্ডিস ফিরলে সাদিরা ও আসালাঙ্কা জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন।
তবে মুজিব-রশিদের স্পিন জুটি তখন শ্রীলঙ্কার ওপর চেপে বসলে সাদিরাও থামেন; এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে তিনি ৪০ বলে ৩৬ থামলে রশিদের কাছে স্টাম্প খুইয়ে ১৪ রানে থামেন ধনঞ্জয়া। বড় একটা ধাক্কা যখন লঙ্কানরা খেতে যাচ্ছিল তখন শেষ দিকে চেষ্টা করেছিলেন ম্যাথিউজ। বিস্ময়করভাবে মাহিশ থিকশানা খেলেছেন দারুণ এক ইনিংস । ৩১ বলে ২৯ রানে থিকশানা যেই ফারুকীর কাছে থামেন সেই ফারুকীর স্লোয়ারেই বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন ২৬ বলে ২৩ রান করা ম্যাথিউজ। ফারুকীর তোপেই তাই শ্রীলঙ্কা ২৪১ রানের বেশি যেতে পারেনি।