• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    লজ্জাজনক পরাজয়ে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল বাংলাদেশ

    লজ্জাজনক পরাজয়ে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল বাংলাদেশ    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, পাকিস্তান-বাংলাদেশ (টস-বাংলাদেশ/ব্যাটিং)
    বাংলাদেশ - ২০৪, ৪৫.১ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৫৬, লিটন ৪৫, সাকিব ৪৩, আফ্রিদি ৩/২৩, ওয়াসিম /৩১, রউফ ২/৩৬)
    পাকিস্তান - ২০৫/৩, ৩২.৩ ওভার (ফাখার ৮১, শফিক ৬৮, রিজওয়ান ২৬*, মিরাজ ৩/৬০)
    ফলাফল - পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী


     

    জরাজীর্ণ এক বিশ্বকাপে সেমির আশা জলাঞ্জলি দিয়ে প্রথম দল হিসেব এই দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল বাংলাদেশ। যেই পাকিস্তান নিজেরাই টানা চার ম্যাচ হেরে খাবি খাচ্ছিল, তাদের কাছেই রীতিমত উড়ে গেল বাংলাদেশ।

    ইডেন গার্ডেনসের এই উইকেটে ২০৫ রানের লক্ষ্য দিয়েই এক অর্থে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে বল হাতে লড়াইয়ের ছিটেফোঁটাও মেলেনি তাদের খেলায়। দুই ওপেনার ফাখার জামান ও আবদুল্লাহ শফিক মিলে দলীয় শতরান পূর্ণ করে ফেলেন ১৮-তম ওভারেই। ফর্মহীনতায় একাদশে জায়গা হারানো ফাখার দলে ফিরেই নিজেকে খুঁজে পেলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। ৫১ বলে তিনি ফিফটি পেলে শফিকেও এর আগে ফিফটি পান ৫৬ বলে। ২৪-তম ওভারেই পাকিস্তানের রান ১৫০ ছুঁলে হারটা নিশ্চিত হয়েই যায়।

    হারের আগে শুধুই নিজের এক মাইলফলক ছুঁয়েছেন মিরাজ। শফিককে ৬৯ বলে ৬৮ রান শেষে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর অধিনায়ক বাবর আজমকেও মাত্র ৬ রানে বাউন্ডারিতে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচে থামান। সেঞ্চুরির জন্য ফাখার আক্রমণের জায়গা খুঁজতে থাকলে মিড-উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ৭৪ বলে ৮১ রানে থামেন ফাখার। বাকি পথটুকু ২৬* রান করে রিজওয়ান ও ইফতিখার ১৭* রান করে অনায়াসে পাড়ি দিলে ১০৫ বল হাতে রেখে জিতে যায় পাকিস্তান।

    প্রথম ওভারেই শাহীন শাহ আফ্রিদির এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। নিজের পরের ওভারে এসে আফ্রিদি ফেরান নাজমুল হোসেন শান্তকে। এদিন চারে নামা মুশফিকুর রহিম এর দুই ওভার পরেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হারিস রউফের শিকার হয়ে। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গী করে লিটন দাস দলের ইনিংস স্থিতিশীল করার চেষ্টা করেন। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তবুও পায় মোটে ৩৭ রান।

    তবে সেখান থেকেই রানের চাকা সচল করে ২০.৩ ওভারেই দলীয় শতরান পূর্ণ করে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন লিটন-মাহমুদউল্লাহ জুটি। যেই একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন তারা ওমনি মতিভ্রম হল লিটনের। ওই ওভারের পঞ্চম বলে ইফতিখার আহমেদের নিরীহ ডেলিভারিতে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ৬৪ বলে ৪৫ রানে থামেন লিটন। লিটন থামলেও পাঁচে নামার সুযোগ পেয়ে মাহমুদউল্লাহ ফিফটি পেয়ে যান ৫৮ বলে। তবে ফিফটির পর সেই অর্থে সুবিধা করতে পারছিলেন না, সেই সাথে আক্রমণে ফেরেন আফ্রিদি; তাতেই ঘটে বিপদ। আফ্রিদির কাছে স্টাম্প খুইয়ে ৭০ বলে ৫৬ রানে মাহমুদউল্লাহ থামলে আবারও মুখ থুবড়ে পড়ার শঙ্কা জাগে বাংলাদেশ ইনিংসে।

    সেই শঙ্কা থেকে ক্ষণিকের জন্য মুক্তি দিয়েছিল সাকিব-মিরাজ জুটি। মাঝে তাওহিদ হৃদয় উসামা মীরকে ছয় মেরে তার পরের বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ওই জুটি সেই অর্থে লাগাম ছাড়া হতে পারেনি। দুজনেই বিপদ পার করার জন্য মগ্ন ছিলেন। ইফতিখারকে এক ওভারে টানা তিন চার মেরে সাকিব অবশ্য এরপর গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন। হারিস রউফের বিপক্ষে সেটাই করতে গিয়ে খাটো লেংথের বলটা অবশ্য আকাশে ভাসিয়ে সালমান আঘাকে আরও একটি ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক থামেন ৬৪ বলে ৪৩ রানে। লড়াইটাও শেষ ওখানেই। ওয়াসিম জুনিয়রকে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে ৩০ বলে ২৫ রানে স্টাম্প খুইয়ে মিরাজ থামলে ওই ওভারে ফেরেন তাসকিন। নিজের পরের ওভারে এসে হাস্যকর এক ভঙ্গিতে মোস্তাফিজের স্টাম্প উপড়ে ওয়াসিম এরপর আরও একবার পঞ্চাশের আগেই গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের ইনিংস।