• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩
  • " />

     

    ইংল্যান্ডকে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে অস্ট্রেলিয়ার টানা পঞ্চম জয়

    ইংল্যান্ডকে সেমির দৌড় থেকে ছিটকে অস্ট্রেলিয়ার টানা পঞ্চম জয়    

    ২০২৩ বিশ্বকাপ, গ্রুপ পর্ব, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া (টস-ইংল্যান্ড/বোলিং)
    অস্ট্রেলিয়া - ২৮৬, ৪৯.৩ ওভার (লাবুশেন ৭১, গ্রিন ৪৭, স্মিথ ৪৪, ওকস ৪/৫৪, রশিদ ২/৩৮,  উড ২/৭০)
    ইংল্যান্ড - ২৫৩, ৪৮.১ ওভার (স্টোকস ৬৪, মালান ৫০, মঈন ৪২, জাম্পা ৩/২১, কামিন্স ২/৪৯, হেজলউড ২/৪৯)
    ফলাফল - অস্ট্রেলিয়া ৩৩ রানে জয়ী


     

    উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে জয় দিয়ে পেল টানা পঞ্চম জয়। সেই সাথে হারের বৃত্ত থেকে বের হতে ব্যর্থ ইংল্যান্ড ছিটকে পড়ল সেমি-ফাইনালের দৌড় থেকে। টেবিলের তলানিতে থেকে তাদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলাটাই এখন হুমকির মুখে।


    ২৮৭ রানের লক্ষ্য ইংল্যান্ড শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল। প্রথম বলেই বেইরস্টোকে উইকেটের পেছনে স্টার্ক তালুবন্দি করিয়ে রুটের ভাগ্য একইভাবে লেখেন স্টার্ক। রুটের উইকেটটার জন্য অজিদের দারুণ রিভিউটার কৃতিত্ব প্রাপ্য বটে। তবে সেখান থেকে স্টোকসকে নিয়ে দলের ইনিংস মেরামত করেছিলেন মালান। ২১.৫ বলে দলীয় শতরান পূর্ণ হলে ৬৩ বলে ফিফটি পেয়ে যান মালান। তবে এরপর গিয়ার পাল্টাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। কামিন্সের বাউন্সারে ধরা খেয়ে মালান থামেন নিজের খেলা পরের বলেই। তাতেও অবিচল স্টোকস এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মঈনকে নিয়ে।


    সেই অর্থে আক্রমণ করতে না পারলেও ইংল্যান্ডের ভরসার প্রতীক হয়ে ছিলেন মাঝে। স্টার্ককে দারুণ এক ছয় মেরে ৭৪ বলে ফিফটি করে গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে দিন ভর দুর্দান্ত বল করে যাওয়া জাম্পাকে সামলাতে বেগ পেতে হলে সেই লেগ স্পিনারের কাছেই বিসর্জন দিতে হয় উইকেট। গতির তারতম্যে ইংলিশদের ভুগিয়ে ৬৪ রানে থামান জাম্পা। এর আগে বাটলারকে মাত্র ১ রানেই ফেরানো জাম্পা দুর্দান্ত স্পেল শেষের আগে ৪২ রানে থাকা মঈনকেও থামিয়েছিলেন বাউন্ডারিতে। কামিন্সের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঝে লিভিংস্টোন ফিরলে ইংল্যান্ডের পরাজয় প্রায় নিশ্চিত মনে হলেও শেষ দিকে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন ওকস ও উইলি। সাথে রশিদও হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন চিন্তার কারণ। তবে কামিন্সের বিচক্ষণ বোলিং পরিবর্তন ও হেজলউডের দারুণ লাইন লেংথের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয়েছে তাদের।


    ইংল্যান্ডের মত না হলেও ব্যাট হাতে আগের দিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিস্ফোরক শুরু করা হেড-ওয়ার্নার জুটির দুজনেই এদিন ফিরলেন প্রথম পাওয়ারপ্লের ভেতরেই। ওকসের বেরিয়ে যাওয়া বল থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে পাঠাতে চাইলে স্লিপে থাকা রুটের হাতে ক্যাচ তুলে হেড দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান। সেই ওকসের অফ কাটার পড়তে না পেরেই আকাশে বল ভাসিয়ে ওয়ার্নার ফেরেন ষষ্ঠ ওভারে। লাবুশেন-স্মিথ জুটি পরে প্রথম পাওয়ারপ্লেতে আর কোনও বিপদ ঘটতে না দিয়ে ৪৮ রান তুলে দলীয় শতরান পূর্ণ করেন ১৯.৩ ওভারে। জুটিটা উইকেটে থিতু হয়ে গেলেও রশিদের দারুণ এক লেগ ব্রেকে ধন্দে পড়ে ৫২ বলে ৪৪ রান শেষে থামেন স্মিথ।


    স্মিথ থামলেও ৬৩ বলে ফিফটি পেয়ে যান লাবুশেন। তবে রশিদকে উইকেট উপহার দিয়ে তার পরের ওভারে ইংলিস ফিরলে স্তিমিত হয়ে পড়ে অজিদের রানের চাকা। সেটারই সুযোগ বুঝে উডকে ফেরানো হলে তার হালকা ভেতরে ঢোকা বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউর হয়ে থামেন ৮৩ বলে ৭১ রানে থাকা লাবুশেন। গ্রিন-স্টয়নিসের দক্ষতায় অবশ্য ৩৭ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া ২০০ রান পেয়ে গেলেও এই দুজন ফেরার পর একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি তারা। উইলির লেংথ বল মিস করে স্টাম্প খুইয়ে ৫২ বলে ৪৭ রানে গ্রিন থামলে পরে আক্রমণে আসা লিভিংস্টোনকে টানা দুই বাউন্ডারি মেরে পরের বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ৩২ বলে ৩৫ রানে ফেরেন স্টয়নিস। পরের ওভারেই উডের শিকার হয়ে কামিন্স ফিরলে পঞ্চাশ ওভার খেলা নিয়েই জেগেছিল অজিদের শঙ্কা। সেই শঙ্কা দূর করে অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ের রসদ এনে দেয় জাম্পা-স্টার্ক জুটি; বলা ভালো এনে দেন জাম্পা। ১৯ বলে ২৯ রানের দারুণ ইনিংসের পর শেষ ওভারের প্রথম বলেই ওকসের শিকার হয়ে ফিরলে দুই বল পরেই ১০ রানে থামেন স্টার্ক। ওই রসদ নিয়েই গত বিশ্বকাপের সেমিতে ইংল্যান্ডের কাছে বিদায় নেওয়ার পর এবার তাদেরই বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে যেন মধুর প্রতিশোধ নিল অজিরা।