• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    কিক অফের আগে: জামালদের জন্য কতটা বিপজ্জনক অস্ট্রেলিয়া?

    কিক অফের আগে: জামালদের জন্য কতটা বিপজ্জনক অস্ট্রেলিয়া?    

    ১৬ নভেম্বর 

    অলিম্পিক বুলেভার্ড, মেলবোর্ন 

    বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা 


    ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ১৫৬ ধাপ উপরে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে টাইগাররা। আজ মেলবোর্নের অলেম্পিক বুলেভার্ডে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়ার এই গ্রুপে আরও আছে ফিলিস্তিন ও লেবানন। প্রতি দলই হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দুটি করে ম্যাচ খেলবে একে-অপরের সাথে।  

    ২০০৬ সালে এএফসিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই এশীয় ফুটবলের পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া। এরপর চারবার এশিয়ান কাপ খেলেছে সকারুরা, কখনো বাদ পরেনি কোয়ার্টারের আগে। একবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নও হয়েছে, ২০১৫ সালে। এএফসির সদস্য হওয়ার কারণেই এশিয়ান দলগুলোর সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাই খেলে অস্ট্রেলিয়া। এবং ২০০৬-এর পর প্রতিবারই এশীয় অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে গিয়েছে সকারুরা। 

    অপরদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সর্বশেষ সাত আসরে মাত্র পাঁচ ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, কখনোই পেরোতে পারেনি দ্বিতীয় রাউন্ড।

    দুই দলের মাঝে তফাৎ কতটুকু বুঝতেই পারছেন। ফিফা র‍্যাংকিংয়ে এখন অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ২৭। এশীয় দলগুলোর মধ্যে তাদের সামনে আছে শুধু জাপান ও ইরান। অপরদিকে বাংলাদেশের র‍্যাংকিং এখনো ২০০’র কাছাকাছি। এশীয় দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পিছনে আছে মাত্র পাঁচ দেশ।  

    পূর্বের দেখায়  

    ১৭/১১/২০১৫: বাংলাদেশ ০-৪ অস্ট্রেলিয়া

    ০৩/০৯/২০১৫: অস্ট্রেলিয়া ৫-০ বাংলাদেশ 

    পূর্বে অস্ট্রেলিয়ার সাথে দুবার দেখা হয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৩ ও ১৫ সালে হওয়া সেই দুই ম্যাচেই বড়সড় পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে।

    সাম্প্রতিক ফর্ম 

     

    গতবছর কাতার বিশ্বকাপে উজ্জীবিত ফুটবল খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে তিউনিশিয়া ও ডেনমার্ককে হারিয়েছে। বাদ পড়েছে শেষ ষোলোতে, টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার কাছে হেরে। মেসিদের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও ভালোই প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে তুলেছিল সকারুরা।

    বিশ্বকাপের পর ছয়টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। খেলেছে আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ডের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচে হারলেও শক্তিমত্তার বিচারে মোটেও খারাপ খেলেনি তারা।

    এদিকে বাংলাদেশ দলের জন্যও ২০২৩ সালটা খারাপ যাচ্ছে না। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্ব পেরোনোর পর তারা সেমিতে নুন্যতম ব্যবধানে হেরেছে শক্তিশালী কুয়েতের বিপক্ষে।

    সেই পরাজয়ের পর গত চার মাস ধরে অপরাজিত বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে ড্র করার পর বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে মালদ্বীপকে অ্যাগ্রিগেটে হারিয়েছে বেঙ্গল টাইগার্সরা।

    সর্বশেষ ৫ ম্যাচে বাংলাদেশ 

     

    বিশ্বকাপ বাছাই: বাংলাদেশ ২-১ মালদ্বীপ

    বিশ্বকাপ বাছাই: মালদ্বীপ ১-১ বাংলাদেশ 

    প্রীতি ম্যাচ: বাংলাদেশ ১-১ আফগানিস্তান

    প্রীতি ম্যাচ: বাংলাদেশ ০-০ আফগানিস্তান 

    সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ: কুয়েত ১-০ বাংলাদেশ

    খেলার ধরন

    অস্ট্রেলিয়া

    অস্ট্রেলিয়া ম্যানেজার গ্রাহাম আর্নল্ড সাধারণত ৪-৪-২ বা ৪-২-৩-১ ফরমেশন খেলিয়ে থাকেন। আক্রমণাত্মক ফুটবলের জন্যই পরিচিত এই বর্ষীয়ান ম্যানেজার। তার দুই উইঙ্গারের কাছে থাকে আক্রমণ ও সুযোগ তৈরির মূল দায়িত্ব। মাঝখানে এক বা দুজন স্ট্রাইকার খেলিয়ে থাকেন তিনি।

    টিম কাহিলের মতো বড় কোনো তারকা নেই এই দলে। তবে অস্ট্রেলিয়া একাদশের প্রায় সব খেলোয়াড়ই খেলেন ইউরোপের লিগগুলোয়। দলে আছেন অনেক অভিবাসী ফুটবলারও। 

    বাংলাদেশ

    এদিকে জামাল ভুঁইয়া ব্যতীত বাংলাদেশের সব খেলোয়াড়ই খেলেন ঘরোয়া লিগে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দায়িত্ব নিয়েছে গতবছরের জানুয়ারিতে। পূর্বে স্প্যানিশ ক্লাব দেপোর্তিভো আলাভেজের একাডেমির দায়িত্বে থাকা এই ৩৯ বছর বয়সীর অধীনে নির্দিষ্ট কোনো ফুটবল দর্শন দেখা যাচ্ছে না দলে। তবে আগের মতো রক্ষণে বসে না থেকে একটু আক্রমণ-মনস্ক ফুটবল খেলতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এতে সাফল্যও আসছে। জুনে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিতে উঠা, এরপর মালদ্বীপের বিপক্ষে দুই লেগের জয়, গত পাঁচ মাসে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে নয় ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।  

    কিন্তু সম্প্রতি মদ পাচার সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির জন্য নিষিদ্ধ আনিসুর রহমান জিকো, তপু বর্মনদের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাচ্ছেন না কাবরেরা। এই দুজনকে ছাড়া রক্ষণে ভালোই ভুগতে পারে বাংলাদেশ।

    বিশ্বকাপ খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৫ সালে। সেই দলটিও ছিল অস্ট্রেলিয়াই। বৃহস্পতিবার সিডনিতে ভরাডুবি এড়ানোটাই হয়তো মূল লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশের, তবে এই ম্যাচের স্কোরলাইন বলে দিবে আন্তর্জাতিক পরিসরে কতটা এগিয়েছেন জামালরা।