মেঘাচ্ছন্ন ইডেনে মিলার-ম্যাজিক: দুর্দান্ত অজি বোলিং সামলে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ২১২
২০২৩ বিশ্বকাপ, ২য় সেমি-ফাইনাল, দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া (টস-দক্ষিণ আফ্রিকা/ব্যাটিং)
দক্ষিণ আফ্রিকা - ২১২, ৪৯.৪ ওভার (মিলার ১০১, ক্লাসেন ৪৭, রাবাদা ১০, স্টার্ক ৩/৩৪, কামিন্স ৩/৫১, হেজলউড ২/১২)
বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়ে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল শুরু হওয়ার পর বৃষ্টি বাগড়াও দিয়েছিল। তারই আগে দক্ষিণ আফ্রিকার নাভিশ্বাস ছুটিয়ে ছেড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টির পর মেঘাছন্ন ইডেন গার্ডেনস দেখল ডেভিড মিলারের অসামান্য এক ইনিংস। আর তাতেই লড়াইয়ে রসদ পেল এক সময় বিনা লড়াইয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিতে থাকা প্রোটিয়ারা।
আকাশ জুড়ে মেঘ; ফ্লাড লাইট জ্বলছে প্রায় সবগুলোই। তবুও নিজেদের রান তাড়ার শঙ্কাটা মাথায় নিয়েই হয়ত দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে যেন অস্ট্রেলিয়াকে পাতে দিল সোনার বার। সেগুলো দুমুঠো ভরে লুফে নিয়ে বাইশ গজে টেস্ট বোলিংয়ের ত্রাস ফিরিয় আনলেন স্টার্ক-হেজলউড জুটি। দুজনে টানা বল করলেন ১২ ওভার, আর তাতেই প্রোটিয়ারা খোয়াল চার উইকেট। প্রথম ওভারেই স্টার্কের সুইংয়ে উইকটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বাভুমা ফিরলে ৫ ওভারে তারা পায় মাত্র ৮ রান। ওই ওভারেই শিকল ছিড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে মিড অনে কামিন্সের দুর্দান্ত ক্যাচে হেজলউডের শিকার হয়ে ফেরেন ডি কক। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ১৮ রান এলে সেই চাপ ধরে রাখতেি দুজনকে আক্রমণে রাখেন কামিন্স। আর তাতেই স্টার্কের বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে মার্করাম থামলে পরের ওভারে হেজলউডের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে থামেন ডুসেন; ২৪ রানে নেই দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেট!
এর কিছুক্ষণ পরে বৃষ্টি নেমে কোনও ওভার না খুইয়েই খেলা শুরু হলে সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। মিলার-ক্লাসেন জুটি স্পিনারদের জন্য যেন অপেক্ষা করছিলেন। দলীয় শতরান ছুঁতে তাদের লাগে ২৮ ওভার। তবে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ক্লাসেন তখন ভয়ংকর হয়ে উঠার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। হেডকে আক্রমণে আনা হলে দুই বাউন্ডারিতে তাকে স্বাগত জানান তিনি। তবে হেডের এক অফ স্পিনে একেবারে হতভম্ব হয়ে লেগ স্টাম্প খুইয়ে তিনি ৪৮ বলে ৪৭ রানে থামলে তার পরের বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ইয়ানসেন। আবারও যখন অল্প রানেই তাদের গুটিয়ে ফেলার ঘ্রাণ পাচ্ছিল অজিরা, তখনই দেয়াল হয়ে দাঁড়ান মিলার। ৭০ বলে ফিফটি পূর্ণ করে কোটজিয়াকে নিয়ে একবার লড়লেন, কামিন্সকে একহাত নিলেন, জাম্পাকে কখনই থিতু হওয়ার সুযোগ দিলেন না। অন্য প্রান্তে কেউ সেই অর্থে সাহায্য করতে না পারলেও শেষে এসে কামিন্সকে দারুণ এক ছয় মেরে ১১৫ বলে মিলার পেয়ে যান নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি। ওই কামিন্সের খাটো লেংথের বলেই ডিপ স্কয়্যার লেগে ক্যাচ দিয়ে ১১৬ বলের ১০১ রানের অসামান্য ইনিংস শেষে মিলার থামলে শেষ ওভারে রাবাদাকেও ফিরিয়ে কামিন্স দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুটিয়ে দেন ২১২ রানে।