বিপিএলের বিদেশী তারকারা কে কোথায় ব্যস্ত?
আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্দা উঠতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দশম আসরের। বিপিএলের দশম আসরের সাথে কাছাকাছি সময়ে পর্দা উঠবে দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টোয়েন্টি ও আইএল টি-টোয়েন্টির। জানুয়ারিতে শুরু হয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সমান্তরালে চলবে এই তিনটি টি-টোয়েন্টি লিগ। ১০ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে এসএ টোয়েন্টি, ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বিপিএলের দশম ও আইএল টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসর। সাংঘর্ষিক এই সুচির জন্য গত আসরের মতো এবারও তারকা ক্রিকেটাররা আসা যাওয়ার মধ্যে থাকবেন এবারের বিপিএলে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টির চেনা তারকারা এই সময়ে কে কোথায় খেলবেন? বিপিএলের কোন দলগুলো তাদের টেনেছে এবারের আসরের জন্য?
রিটেনশন, সরাসরি চুক্তি ও প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারদের দলে টেনেছে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এদের মধ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেই ও রংপুর রাইডার্সে আছেন হেভিওয়েট সব বিদেশীরা। কুমিল্লার হয়ে এবারও খেলার কথা মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের। রংপুর রাইডার্সে চুক্তি করেছে বাবর আজম, নিকোলাস পুরান, মাথিশা পাথিরানাদের সাথে। ফরচুন বরিশালে খেলার কথা শোয়েব মালিক, ফখর জামান, মোহাম্মদ আমিরদের। চট্টগ্রামে মোহাম্মদ হারিস, নাজিবউল্লাহ জাদরান। ঢাকায় সাইম আইয়ুব সাদিরা সামারাভিক্রমা। খুলনা টাইগার্স দলে টেনেছে এভিন লুইস, দাসুন শানাকা, ফাহিম আশরাফদের। সিলেট স্ট্রাইকার্সে অবশ্য অত বড় নাম নেই এবার বিদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে।
গত বিপিএলে বিদেশী ক্রিকেটাররা আসা যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন। সিকান্দার রাজা রংপুরের হয়ে খেলে গিয়েছেন আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলার ফাঁকে। এবারও এমন চিত্রই দেখা যাবে বিপিএলে।
বিপিএল চলাকালীন বিদেশী ক্রিকেটাররা কে কোথায় ব্যস্ত?
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
সুনীল নারাইন,আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতিখার আহমেদদের শুরু থেকেই পাচ্ছে না কুমিল্লা।নারাইন-রাসেল ব্যস্ত থাকবেন আইএল টি-টোয়েন্টিতে। মঈন আলীর খেলার কথা এসএ টোয়েন্টির এবারের আসরে। তারা যদি দুই টূর্নামেন্টের পুরো মৌসুম শেষ করে আসতে চাইলে বিপিএল থাকবে তখন প্রায় শেষদিকে। এসএ টোয়েন্টিতে খেলার কথা থাকলেও রশিদ খানের আছে চোটের ইস্যু, আছে জাতীয় দলের ব্যস্ততাও। আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা থাকায় রিজওয়ানকেও আসবেন দেরিতে। কাজেই ধরে নেয়া যায় বিপিএলের বেশিরভাগ ম্যাচই কুমিল্লাকে খেলতে হবে তাদের ছাড়া।
রংপুর রাইডার্স
সেই অনুযায়ী রংপুর রাইডার্সের বাবর আজমও বিপিএলে আসবেন জাতীয় দলের ব্যস্ততা শেষে। নিকোলাস পুরান, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাথিশা পাথিরানাদের সাথেও চুক্তি আছে রংপুরের। তাদেরও টুর্নামেন্টের শুরু থেকে পাবে না সাকিব আল হাসানের দল। আইএলটি-টোয়েন্টিতে একই দলে খেলার কথা হাসারাঙ্গা ও পাথিরানার। আছে জাতীয় দলের ব্যস্ততাও। পুরান অধিনায়কত্ব করবেন এমআই এমিরেটসের।
ফরচুন বরিশাল
ফরচুন বরিশালের ইব্রাহিম জাদরান-ফখর জামান ছাড়া শোয়েব মালিক,মোহাম্মদ আমির, পল স্টার্লিঙ্গদের শুরু থেকেই পাওয়ার কথা। ফখর ,ইব্রাহিম ও আব্বাস আফ্রিদি বিপিএলের শুরুতে ব্যস্ত থাকবেন নিজ নিজ জাতীয় দলের ম্যাচে।
খুলনা টাইগার্স
খুলনার বিদেশী রিক্রুট দাসুন শানাকা খেলছেন ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আবার তার আইএল টি-টোয়েন্টিতেও খেলার কথা দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে। খুলনার হয়ে খেলতে আসলে বিপিএল থাকবে শেষদিকে।
এছাড়া চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মোহাম্মদ হারিস, নাজিবউল্লাহ জাদরান, দুর্দান্ত ঢাকার সাইম আইয়ুব, সাদিরা সামারাভিক্রমাদেরও আছে বিপিএলের প্রথম পক্ষের মধ্যে জাতীয় দলের ব্যস্ততা।
বিপিএলে তারকাদের আসা যাওয়া, খেলা না খেলার অনিশ্চয়তার নেপথ্যে অন্যান্য লিগগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক সূচি তো আছেই। আছে পারিশ্রমিক কাঠামোর ভিন্নতাও। মাঠে গড়ানোর আগেই বিশ্বের দ্বিতীয় আকর্ষণীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ছিল আইএল টি-২০। সর্বোচ্চ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক পেয়েছেন সাড়ে চার লক্ষ মার্কিন ডলার। এসএ টোয়েন্টির শীর্ষ ক্যাটগরির ক্রিকেটাররা পাবেন ৩ লক্ষ মার্কিন ডলার। আর এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ ক্যাটাগরিতে থাকা বিদেশী ক্রিকেটাররা পাবেন ৮০ হাজার ডলার পারিশ্রমিক।
আর্থিক দিকটা বিবেচনা করেও বিদেশী ক্রিকেটাররা বিপিএলের চেয়ে অন্যান্য লিগগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেন। আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সূচির সাথে এবারও সাংঘর্ষিক বিপিএল। সূচি-পারিশ্রমিকের তারতম্যের ইস্যু মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত কোন তারকারা খেলতে আসেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা।