• দলবদলের যত খবর
  • " />

     

    মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হতে যাচ্ছেন যেসব বড় নাম

    মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হতে যাচ্ছেন যেসব বড় নাম    

    চলছে জানুয়ারির দলবদল। তবে গ্রীষ্মের দলবদলকে মাথায় রেখে এই বাজারে কেনাবেচার চেয়ে হয়ত চুক্তি নবায়ন, প্রত্যাখ্যানের খবরই মিলবে বেশি। মৌসুম শেষ হলেই যে অনেক বড় নামের চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। মৌসুম শেষেই দলবদলের বাজারে তাদের নেওয়ার জন্য বড় ক্লাবগুলোর হিড়িক পড়ে যাবে - সেটা বলাই বাহুল্য। এরকম কিছু বড় নামেই চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

     

    কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স, পিএসজি)

    দলবদলের বাজারের দুয়ার খুললেই একজনকে নিয়ে গুঞ্জন উঠবেই - কিলিয়ান এমবাপে। গত কয়েক দলবদলের মৌসুমেই রিয়াল মাদ্রিদের সাথে যেন চলছে তার মন দেওয়া নেওয়া; বাকি শুধু মিলনটাই। সেটাও গত মৌসুমে যেন হয়েই গিয়েছিল মনে হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে সেটা না হলেও পিএসজির সাথে তার সম্পর্কের অবনতিটাও জনসম্মুখে চলে এসেছিল। এবারের জানুয়ারির দলবদল শুরু হতেই নেমেছে মাদ্রিদ ও তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন খবরের ঢল। তবে এই মৌসুম শেষ হলে পিএসজির সাথে তার চুক্তিটাও শেষ হয়ে যাবে। ফ্রি এজেন্ট হিসেবে তাকে বিক্রি করার মত বড় একটা সিদ্ধান্ত অবশ্য পিএসজি নিবে কি-না সেটাই দেখার বিষয়।

    লুকা মদ্রিচ (ক্রোয়েশিয়া, রিয়াল মাদ্রিদ)

    বয়সটা তার ৩৮। মাদ্রিদের সাথে চুক্তি নবায়ন করলেও বড় চুক্তি যে হবে না সেটা হলফ করেই বলা যায়। এমনকি গত মৌসুমেও এই এক বছরের জন্যই নতুন চুক্তি সই করেছিলেন এই রিয়াল মাদ্রিদ ও ক্রোয়েশিয়া কিংবদন্তি। মদ্রিচ যে শেষমেশ সাদা জার্সিটা তুলেই রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে তার জন্য প্রস্তাবের হয়ত অভাব হবে না। যে ঢঙে এখনও খেলে চলেছেন, তাতে ইউরোপ থেকেও প্রস্তাব পেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

    টনি ক্রুস (জার্মানি, রিয়াল মাদ্রিদ)

    রিয়াল মাদ্রিদের জার্মান মিডফিল্ড জেনারেলের চুক্তিও শেষ হতে যাচ্ছে এই মৌসুম শেষে। অবশ্য ৩৩ বছর বয়সী "স্নাইপার" রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চুক্তি নবায়ন করার কথা ভাবতেই পারেন। তবে এর আগেও অবসর নিয়ে মাঝেমধ্যে কথা বলেছেন; জার্মানির হয়ে খেলায় তো ইস্তফাও দিয়েছেন। রিয়াল মাদ্রিদের চাপের সময়টা থেকে তাই নিস্তার তিনি চাইতেই পারেন। সেরকমটা হলে ক্রুসকে নেওয়ার জন্য বাজারে খদ্দেরের অভাব হবে না।

    মার্কো রয়েস (জার্মানি, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড)

    বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সেনানি তিনি; ক্লাবের অধিনায়কও বটে। রয়েসের চুক্তি শেষ হতে চলেছে এই মৌসুম শেষে। নিজের ক্লাবের সাথে আপাতদৃষ্টিতে সম্পর্কের ইতি টানার কোনও কারণ রয়েসের কাছে থাকার কথা নয়। সমস্যা একটাই - ফিটনেস। ইনজুরি জর্জরিত ক্যারিয়ারে জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিল তাকে। শরীরটা ক্লাব ফুটবলের জন্যও কতদিন সাঁয় দেয় সেটাই এই উইঙ্গারের ভাবনার বিষয় এখন।

    থিয়াগো আলকানতারা (স্পেন, লিভারপুল)

    লিভারপুলের মিডফিল্ড ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি লম্বা ইনজুরিতে ইয়ুর্গেন ক্লপের পরিকল্পনায় প্রথম সারিতে আর ণেই এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। তবে ৩২ বছর বয়সী থিয়াগোর চাহিদায় কিন্তু ঘাটতি ণেই। বার্সেলোনায় গাভি পুরো মৌসুমের জন্য ছিটকে পড়ার পর তাকে ধারে নেওয়ার ব্যাপারেও তলব করেছে ক্লাবটি। অল রেডদের সাথে চুক্তি যদি আর নবায়ন নাই করেন, তাহলে তার দিকে হাত বাড়াতে পারে আরও বেশ কিছু ক্লাব।

    আদ্রিয়েন রাবিও (ফ্রান্স, জুভেন্টাস)

    জুভেন্টাসের মিডফিল্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই। মাঝে ফ্রান্সে নানাবিধ ঝামেলায় জড়িয়ে দলে জায়গা হারালেও ধীরে ধীরে আস্থার জায়গাটা ফিরিয়ে নিয়েছেন নিজেই। রাবিওর খেলার ধরনটা হাই-প্রেসিং অনেক দলের সাথেই না গেলেও সৃষ্টিশীলতার অভাবে থাকা মিডফিল্ডে নতুন প্রাণ সঞ্চারের ক্ষমতা রয়েছে তার। এর আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে কথা পাকা হয়েও শেষ মুহূর্তে আর যাওয়া হয়নি সেখানে তার। তবে রাবিও এবার চুক্তি নবায়ন না করলে হতে পারে সেরকম কিছু।

    অলিভিয়ের জিরু (ফ্রান্স, এসি মিলান)

    ৩৭ বছর বয়সেও এসি মিলানের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গাগুলোর একটা ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বয়সের কারণেই হয়ত রোজোনেরোদের হয়ে মৌসুম শেষে আর খেলা নাও হতে পারে তার। চুক্তি শেষ হওয়ার পর তাকে নেওয়ার জন্য হয়ত উঠেপড়ে লাগবে না ইউরোপের বড় ক্লাবগুলো। তবে এখনও বেঞ্চ থেকে উঠে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন তিনি। তাই ইউরোপের চ্যাম্পিয়নস লিগের দলগুলোও বেঞ্চের শক্তি বাড়াতে জিরুর দিকে নজর দিতেই পারে। তবে এটুকু বলাই যায় - ইতালিয়ান ক্লাবটির সাথে চুক্তি নবায়ন না করলে জিরুর জন্য সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রস্তাবের অভাব হবে না।

    রাফায়েল ভারান (ফ্রান্স, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)

    কয়েক বছর আগেও যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রতাপশালী ডিফেন্ডারদের একজন ছিলেন তিনি সেটা হয়ত ভুলতে বসেছে অনেকেই; ভুলে তো যাচ্ছেন তার নিজের দলের কোচই! ফিটনেস, পড়তি ফর্মের জন্য ভারানের দেখা মিলে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম একাদশেও। তবে বয়স তো মোটে ৩০!  বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী একজন ডিফেন্ডারের ফর্ম ফেরত আসাই বা কত দিনের মামলা! বয়স বিবেচনায় তাই প্রস্তাবের অভাব হয়ত হবে না তার। সেই সাথে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা, ক্লাবের সাথে তার অবস্থান সব বিবেচনায় মৌসুম শেষ চুক্তিটাও হয়ত আর নবায়ন করবেন না এই ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার।

    পিওতর জিলিন্সকি (পোল্যান্ড, নাপোলি)

    কয়েক মৌসুম ধরেই সিরি আ-এর অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারদের একজন তিনি। জিলিন্সকি বল বানানোয় তো ওস্তাদ বটেই, নিচে নেমে তার ট্যাকলের পারদর্শিতার প্রমাণটাও মেলে পরিসংখ্যানেই। নাপোলির দীর্ঘদিনের সেনানির ক্লাবের হয়ে ইতিহাস গড়া তো হয়েই গিয়েছে। তার ওপর এই মৌসুমে নাপোলির সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। সিরি আ চ্যাম্পিয়নদের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে জিলিন্সকি তাই হয়ত চুক্তির মেয়াদ আর নাও বাড়াতে পারেন; খুঁজতে পারেন নতুন চ্যালেঞ্জ।

    সার্জিও রামোস (স্পেন, সেভিয়া)

    রিয়াল মাদ্রিদের সাথে অনেকটা আকস্মিকভাবেই সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন। এরপর ফিরেছেন শৈশবের ক্লাব সেভিয়াতে। লা লিগার কিংবদন্তি ডিফেন্ডারের বয়সটা অবশ্য আর অনুকূলে নেই, সেই সাথে বহু বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ে ইউরোপার ট্রেনটাও ধরতে পারেনি সেভিয়া। মৌসুম শেষে তাকে নতুন চুক্তির প্রস্তাব হয়ত নাও দেওয়া হতে পারে। সেই সাথে সৌদি প্রো লিগ থেকেই রামোসের জন্য আসতে চলেছে প্রস্তাব। মৌসুম শেষে তাই তার ফ্রি এজেন্ট হওয়াটা হয়ত সময়ের ব্যাপার।