• আফ্রিকান নেশন্স কাপ
  • " />

     

    গাম্বিয়া দলের ফ্লাইটের 'ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং': কী হয়েছিল তাদের উড়োজাহাজে?

    গাম্বিয়া দলের ফ্লাইটের 'ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং': কী হয়েছিল তাদের উড়োজাহাজে?    

    'এয়ার কোট ডি আইভোর'-এ করে আফ্রিকান নেশনস কাপে অংশ নিতে আইভরি কোস্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই 'ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং'-এর শণাপন্ন হতে হয়েছে গাম্বিয়া দলের উড়োজাহাজকে। কেবিনের বায়ু চাপ হুট করে কমে যাওয়ার পাশাপাশি অক্সিজেন সংকট সৃষ্টি হওয়ায় দ্রুতই সেই ব্যবস্থা নেওয়ায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে গাম্বিয়া দল - এমনটাই বলেছেন গাম্বিয়া কোচ টম সেইন্টফিট।

    মারাত্মক এক দুর্ঘটনার হাত থেকেই বেঁচে গিয়েছেন তারা, বলেই দাবী করেছেন গাম্বিয়া কোচ। গাম্বিয়ার রাজধানী বাঞ্জুল থেকে আইভরি কোস্টের ইয়ামুসুক্রুর উদ্দেশ্যে তাদের উড়োজাহাজ উড়াল দেওয়ার নয় মিনিটের মধ্যেই দ্রুত সেটা ফিরিয়ে জরুরী ভিত্তিতে অবতরণ করা হয়েছে।

    এর আগে সৌদি আরবে টুর্নামেন্ট উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক ক্যাম্প শেষে গাম্বিয়া ফিরেছিল তাদের ফুটবল দল। এরপর একবারে স্বাগতিক দেশের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে গেলেই ঘটে এই ঘটনা।

    উড়োজাহাজে ওঠার পরপরই খেলোয়াড়রা মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণতার কথা জানিয়েছিলেন। ডিফেন্ডার সাইদি জেঙ্কো সেটার কথা জানিয়ে বলেছেন যে খেলোয়াড়েরা অসম্ভব অস্বস্তি অনুভব করার পর পরিস্থিতি সামলাতেই অনেকে ঘুমিয়েও পড়েছিলেন। তবে বারবার অভিযোগ করতে পরে ব্যবস্থা নেওয়ায় এই যাত্রায় ঘটেনি কোনও বিপদ। ফ্লাইটের সবাইকে সুস্থ অবস্থায় নামানো হয়েছে বলেই জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

    'এয়ার কোট ডি আইভর' এবারের টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক ফ্লাইট পারত্নার। নিজেদের ভুল স্বীকার করে এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়েছে তাদের কর্তৃপক্ষ। উড়োজাহাজের ভেতরে বায়ুচাপের সমস্যার কারণে এমনটা হয়েছে জানিয়ে তারা তাদের ইউ-টার্নের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

    তবে সেই বিবৃতি ও স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও বিষয়টা মানতে কষ্ট হচ্ছে সেইন্টফিটের। কর্তৃপক্ষের প্রথমদিকের উদাসীনতা নিয়ে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'ওঠার সাথে সাথেই আমাদের অসম্ভব গরম লাগছিল। বিষয়টা আমরা জানালে তারা আমাদের বলে যে তাদের এয়ার কন্ডিশনারে ঝামেলা হয়েছিল। প্লেন উড়াল দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।"

    তারা যে মারা যেতে পারতেন সেটাই খোলাসা করে গাম্বিয়া কোচ জানান, "অক্সিজেনের অভাব তো আর আমরা তখন বুঝিনি। কিন্তু সেটার জন্য ওঠার একটু পরেই আমাদের অনেকেই ঘুমে ঢলে পড়ে। পরে আমাদের যখন বিষয়টা জানানো হল তখন চেষ্টা করেও তাদের অনেককেই তোলা সম্ভব হয়নি। তখন টনক নড়ে পাইলটের; এরপরেই প্লেন ঘুরায় সে! এভাবে যদি আরও ৩০ মিনিট প্লেনটা চলত আমরা তো তাহলে মারাই যেতাম। কারণ তখনও আমাদের কোনও ধরনের অক্সিজেন মাস্কও দেওয়া হয়নি। ভাগ্যিস পাইলট নিজে বিষয়টা বুঝতে পেরেছিল। প্লেনটা তখন না ঘুরালে না জানি কি হত!"

    ১৫ জানুয়ারি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সেনেগালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে গাম্বিয়ার যাত্রা। এমন একটা ম্যাচকে সামনে রেখে এমন একটা ঘটনা ঘটায় যারপরনায় হতাশ কোচ। গ্যাজেট ভ্যান অ্যান্টওয়ার্পেনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সেইন্টফিট জানিয়েছেন, "আমার অনেক খেলোয়াড়ই এখনও ঘোরের মধ্যে রয়েছে। এই ধাক্কা তো সহজেই কাটবার নয়! অনেকেরই এখনও মাথা ঘুরাচ্ছে। কিন্তু আমাদের কিছু করারও নেই। আজ অনুশীলন করতেই হবে আমাদের।"

    এমন পরিস্থিতিতেই নিজের খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি, "বিশাল একটা মানসিক ধাক্কা খেয়েছে তারা। তবে আমি তাদের বুঝিয়েছি যে, যেটা তোমাদের মারতে পারেনি সেটাই তোমাদের শক্তি হয়ে দাঁড়াবে।"

    বুধবারের এক বিবৃতিতে গাম্বিয়া ফুটবল ফেডারেশনও খেলোয়াড়দের ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টার কথা জানিয়েছে। ওশান বে হোটেলে তাদের জায়গা দিয়ে পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত তাদের সুস্থ ও শান্ত রাখার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেই জানিয়েছে সংস্থাটা।