• বিপিএল
  • " />

     

    বিপিএল ২০২৪: কার শক্তি কেমন, দুর্বলতা কোথায়?

    বিপিএল ২০২৪:  কার শক্তি কেমন, দুর্বলতা কোথায়?    

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স-দুর্দান্ত ঢাকার উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দশম আসরের। গত আসরের মতো এবারও খেলবে সাতটি দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছরে হতে যাওয়া বিপিএলের কোন দল কেমন হলো? দেশি-বিদেশী মিলিয়ে কোন দল এগিয়ে থাকতে পারে এবার? বিপিএলের টিম প্রিভিউতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়েই আলোচনা হবে এই প্রতিবেদনে।

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স 

    গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, দেশি-বিদেশী মিলিয়ে এবারও বিপিএলে নামছে তারকাসমৃদ্ধ এক স্কোয়াড নিয়ে। দেশীদের মধ্যে লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান, তাওহিদ হৃদয়, ইমরুল কায়েসরা তো আছেনই। তানভির ইসলাম, জাকের আলী অনিকদের মতো তরুনদের ওপরও ভরসা রেখেছে কুমিল্লা। আইএল টি-টোয়েন্টি, এসএ টোয়েন্টির জন্য মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনদের পেতে অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে কিছুদিন। মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতিখার আহমেদ, জামান খানরা আসবেন জাতীয় দলের ব্যস্ততা শেষে।

    ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই বেশ শক্তিশালী কুমিল্লা। শুরুর দিকের ম্যাচগুলোতে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে লিটন দাস-ইমরুল কায়েস জুটি। গত এক বছরে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান লিটনের। বিপিএলের গত আসরেও লিটন ছিলেন কুমিল্লার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ২০২৩ সালের বিপিএলে সিলেটের হয়ে হৃদয় চারশোর বেশি রান করেছিলেন ১৪০ স্ট্রাইকরেটে। এবার কুমিল্লার হয়েও সেই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবেন ডানহাতি এই ব্যাটার। লিটন-হৃদয়ের সাথে নারাইন-রাসেলরা-মঈনরা যুক্ত হলে আরো শক্তিশালী হবে কুমিল্লার ব্যাটিং অর্ডার। আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের সাথে এই তিন জনের কাছ থেকে চার ওভারের স্পেলও আদায় করে নেয়ার সুযোগ থাকছে কুমিল্লার।

    বোলিংয়ে দেশী পেসারদের মধ্যে বড় নাম কেবল মোস্তাফিজুর রহমান। তার সাথে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হতে পারে মৃত্যুঞ্জয়-মুশফিক হাসানদের। স্পিন আক্রমনে এক্স ফ্যাক্টর হতে পারেন তানভীর ইসলাম। কুমিল্লার জার্সিতে  আগের দুই আসরে করেছেন ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্স। গত বিপিএল শেষ করেছেন আসরের যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হয়ে।

    সব মিলিয়ে তারকাসমৃদ্ধ এক স্কোয়াড কুমিল্লার। বিদেশী ক্রিকেটাররাও থাকবেন আসা-যাওয়ার মধ্যেই। সে কারণে সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়াটাও কুমিল্লার আসল চ্যালেঞ্জ।

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স স্কোয়াড :

    স্থানীয় : লিটন দাস (অ), মোস্তাফিজুর রহমান, ইমরুল কায়েস, তাওহিদ হৃদয়,তানভীর ইসলাম, জাকের আলী অনিক,মৃত্যুঞ্জয় চৌধুর, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মুশফিক হাসান, এনামুল হক. মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন,রিশাদ হোসেন

    বিদেশী : মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতিখার আহমেদ,b খুশদিল শাহ, জনসন চার্লস, নূর আহমাদ, রাখিম কর্নওয়াল

     

    দুর্দান্ত ঢাকা

    ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স, ঢাকা ডায়নামাইটস, ঢাকা প্লাটুন, মিনিস্টার ঢাকার পর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে দুর্দান্ত ঢাকা নাম নিয়ে এবারের বিপিএলে আসছে রাজধানীর দলটি।  ঢাকার এবারের স্কোয়াড মূলত স্থানীয় ক্রিকেটারদের প্রাধান্য দিয়েই গড়া। স্কোয়াডের দুই বড় নাম জাতীয় দলের তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। 

    আছেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা মোসাদ্দেক হোসেন, নাঈম ইসলাম, সাইফ হাসানও। এছাড়া আরাফাত সানি, ইরফান শুক্করের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মাররাও খেলবেন ঢাকার হয়ে। অন্য দলগুলোর মতো বিদেশী তারকার ভিড় নেই ঢাকায়। দুই পাকিস্তানি সাইম আইয়ুব, উসমান কাদিরকে নিয়েছে ঢাকা। অবশ্য পিএসএল শুরু হলে মাঝপথেই বিপিএল ছাড়বেন তারা। চার লংকান ক্রিকেটারদের মধ্যে বড় নাম ইনফর্ম সাদিরা সামারাভিক্রমা।

    বিদেশীদের মধ্যে তেমন বড় নাম না থাকায় লোকাল ক্রিকেটারদের ওপরই নির্ভর করবে ঢাকার টুর্নামেন্ট ভাগ্য। সাইম আইয়ুব এলে তার সাথে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে নাঈম শেখকে। অবশ্য ডানহাতি বাঁহাতি কম্বিনেশন চাইলে সাইফ হাসানকে পাঠানো হতে পারে নাঈমের জায়গায়। দেশীদের মধ্যে কেউ পাওয়ার হিটার নন, তাই ফিনিশারের ভুমিকায় দেখা যেতে পারে বিদেশীদের মধ্যে থেকে কাউকে।

    বোলিংটাই ঢাকার মূল অস্ত্র। তাসকিন-শরীফুলের  ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। গত এক বছরে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক দুই বোলার তাসকিন ও শরীফুল। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেট অবশ্য তাসকিনের। পাওয়ার প্লে-ডেথ ওভার মিলিয়ে এই দুই পেসারের আট ওভার কীভাবে ব্যবহার করা হবে, সেটাও ঢাকার চ্যালেঞ্জ।

    দুর্দান্ত ঢাকা স্কোয়াড

    স্থানীয় : তাসকিন আহমেদ, আরাফাত সানি, শরীফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন (অ), সাইফ হাসান, ইফরান শুক্কুর, আলাউদ্দিন বাবু, মেহরব হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম, সাব্বির হোসেন, জসিমউদ্দিন। 

    বিদেশী : সাদিরা সামারাবিক্রমা, চতুরঙ্গা ডি সিলভা, সাইম আইয়ুব, উসমান কাদির, লাসিথ ক্রসপুল্লে, দানুস্কা গুনাথিলাকা

     

    রংপুর রাইডার্স

    দল বদলে সাকিব আল হাসান এবার এসেছেন রংপুর রাইডার্সে। রংপুরে তার সাথে আছেন রনি তালুকদার, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মাহেদী, হাসান মাহুমদের মতো দেশী তারকারা। বিদেশীদের মধ্যে নিকোলাস পুরান, বাবর আজম, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাথিশা পাথিরানা, ব্রেন্ডন কিংদের দলে টেনেছে রংপুর। বাকি দলগুলোর বিদেশী ক্রিকেটারদের মতো তাদের অনেককেই পুরো টুর্নামেন্টে পাচ্ছে না রংপুর। কারো আছে জাতীয় দলের ব্যস্ততা, কেউ আবার চুক্তিবদ্ধ অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে।

    রংপুরের ব্যাটিং অর্ডার অনেকাংশেই দেশী ক্রিকেটার নির্ভর। রনি তালুকদার গত বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার। সেই আসরের পারফর্ম্যান্স দিয়েই ফিরেছিলেন জাতীয় দলে। রনির সাথে শেখ মাহেদী খেলতে পারেন মেইকশিফট ওপেনার হিসেবে। জাতীয় দল, বিপিএলে ওপেন করার অভিজ্ঞতা আছে এই ডানহাতি ব্যাটারের। টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে টপ অর্ডারে সাকিব-সোহানের সাথে দেখা যেতে পারে ফজলে রাব্বীকে। ফিনিশার রোলে শামীমকে সুযোগ দেয়ার কথা রংপুরের। অবশ্য বাবর-পুরান-হাসারাঙ্গারা এলে ব্যাটিং অর্ডারে অদলদবল হবে নিশ্চিত। 

    আগের মৌসুমের যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হাসান মাহমুদ থাকবেন রংপুরের পেস আক্রমণের সামনে। দেশীদের মধ্যে আবু হায়দার রনিও আছেন স্কোয়াডে। আইএল টি-টোয়েন্টি সেরে মাথিশা পাথিরানা, জাতীয় দলের ব্যস্ততা শেষে ওমরজাই যোগ দিলে আরো শক্ত হবে পেস অ্যাটাক। তবে এর আগ পর্যন্ত কাজ সামলাতে হবে হাসান-রনিদেরই।

    স্পিনে স্বাভাবিকভাবেই নেতৃত্ব দেবেন অধিনায়ক সাকিব। অফস্পিনার শেখ মাহেদীর সাথে বিদেশী কোটায় একাদশে আসতে পারেন লেগি মাইকেল রিপন। হাসারাঙ্গা মাঝপথে যোগ দেওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে দারুণ এক অলরাউন্ডিং অপশনও পাবেন সাকিব। 

    রংপুর রাইডার্স স্কোয়াড

    স্থানীয় : সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহান (অ), শেখ মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, রনি তালুকদার, শামীম হোসেন, রিপন মণ্ডল, হাসান মুরাদ, আবু হায়দার, ফজলে রাব্বি, আশিকুজ্জামান।

    বিদেশী : আজমতউল্লাহ ওমরজাই, নিকোলাস পুরান, বাবর আজম, এহসানউল্লাহ, মাতিশা পাতিরানা, ব্রেন্ডন কিং, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মিশেল রিপন, ইয়াসির মোহাম্মদ।

     

    ফরচুন বরিশাল

    জাতীয় দলের এক ঝাঁক তারকায় ভর্তি ফরচুন বরিশাল। তামিম ইকবাল এবার যোগ দিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ, মিরাজদের ধরে রেখেছে দলটি। ড্রাফট থেকে নিয়েছে মুশফিক-তাইজুল-সৌম্যদের। ইব্রাহিম জাদরান, শোয়েব মালিক, ফখর জামান, দীনেশ চান্দিমালরা আছেন বিদেশী ক্রিকেটার হিসেবে। শেষদিকে যোগ দেবেন ডেভিড মিলারও।  

    ব্যাটিংয়ে বরিশালের শক্তি পজিশনভেদে একাধিক বিকল্প। বিশেষত ওপেনিংয়ে। যেখানে তামিমের সঙ্গী হিসেবে অনেক অপশনই থাকছে বরিশালের সামনে। সৌম্য আছেন, মেইকশিফট ওপেনার হতে পারেন মিরাজও। ইব্রাহিম জাদরান-ফখর জামানরা এলে বাড়বে বিদেশী ওপেনারের সংখ্যাও। ওপেনিং বা টপ অর্ডারের জন্য অফুরন্ত অপশন থাকছে বরিশালের সামনে।

    এত বিকল্প অবশ্য নেই মিডল অর্ডারে। তবে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতাই সেখানে সবচেয়ে বড় শক্তি। মিড ওভারে এই দুজনের পর ফিনিশারের দায়িত্ব থাকবে পাঁচশর বেশি টি-টোয়েন্টি খেলা শোয়েব মালিকের ওপর। পিএসএলের জন্য পুরো সময় থাকবেন না মালিক। তবে মিলার যোগ দিচ্ছেন শেষদিকে। নিজের দিনে যিনি হয়ে উঠেন ‘কিলার মিলার’। 

    মিরাজ-তাইজুল-রাকিবুলদের নিয়ে  বেশ বৈচিত্র্যময় বরিশালের স্পিন বিভাগ। বিদেশী কোটায় দুনিথ ওয়েলালাগেও আছেন স্কোয়াডে। মালিক-রিয়াদরাও কাজ চালাতে পারবেন পার্ট টাইমার হিসেবে। পেস বোলিং নিয়ে আগের আসরেও ভুগেছে বরিশাল। এবারও সেই সম্ভাবনা আছে। 

    দেশীদের মধ্যে রাব্বি-খালেদ-রানাদের অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনজনই খরুচে বোলিং করেছেন ২০২৩ বিপিএলে। রাব্বির ইকোনমি রেট ছিল দশ ছাড়ানো। বাকি দুজন রান দিয়েছিলেন ৯-এর বেশি করে। বিদেশীদের মধ্যে আব্বাস আফ্রিদি, আকিফ জাভেদরা এখনো সেই অর্থে অভিজ্ঞ নন। লংকার থুসারা এলে কিছুটা বাড়বে শক্তি। 

    ফরচুন বরিশাল স্কোয়াড : 

    স্থানীয় : তামিম ইকবাল(অ), মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, খালেদ আহমেদ, মুশফিকুর রহিম, রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সৌম্য সরকার, কামরুল ইসলাম, প্রীতম কুমার, তাইজুল ইসলাম, প্রান্তিক নওরোজ, মেহেদী হাসান রানা।

    বিদেশী : ডেভিড মিলার, ইব্রাহিম জাদরান, শোয়েব মালিক, পল স্টার্লিং, ফখর জামান, আব্বাস আফ্রিদি, দুনিথ ওয়েলালাগে, ইয়ানিক ক্যারিয়াহ, দিনেশ চান্ডিমাল, নুয়ার তুশারা

     

    সিলেট স্ট্রাইকার্স 

    নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে প্রথমবার খেলতে এসেই বাজিমাত করেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। গত আসরের রানার আপ দলটি হয়ে উঠেছিল ফ্যান ফেভারিট। আগের বিপিএলের মতো এবারও তরুণদের দিয়েই দল সাজিয়েছে সিলেট। ফর্মের তুঙ্গে থাকা নাজমুল শান্তর সাথে ধরে রেখেছে, জাকির হাসান, তানজিম সাকিবকেও। অধিনায়ক মাশরাফি তো আছেনই। অত নামডাক ওয়ালা বিদেশী তারকা না থাকলেও আছেন তিন কার্যকরী অলরাউন্ডার। রায়ান বার্ল, হাওয়েলের সাথে এবার পুরো মৌসুমের জন্য আসছেন অজি ক্রিকেটার বেন কাটিংও।

    বিপিএলের নবম আসরে ১৫ ম্যাচে ৫১৬ রান করে সেরা ক্রিকেটার হওয়া শান্ত এবারও ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা।  আছেন জাকিরও। এই দুই বাঁহাতির দিকেই তাকিয়ে সিলেটের টপ অর্ডার। অবশ্য ব্যাটিং অতিমাত্রায় টপ অর্ডার নির্ভর হয়ে গেলে বিপদ হতেও পারে সিলেটের। মুশফিক চলে যাওয়ায় যোগ্য বিকল্প আসেনি মিডল অর্ডারে। এবার মিডল অর্ডারে দেখা যাবে ইয়াসির রাব্বিকে। আছেন মোহাম্মদ মিঠুনও। তাদের পর থাকছেন বার্ল, হাওয়েল, কাটিংরা। যাদের খেলানো হতে পারে কম্বিনেশন অনুযায়ী। তিনজনই অলরাউন্ডার। বোলিংয়ের সাথে লোয়ার অর্ডারে দ্রুত রান তোলার কাজটাও করতে পারেন। 

    মাশরাফির নেতৃত্বে পেস বিভাগে আছেন তানজিম সাকিব, রেজাউর রাজা, শফিকুলরা। এনগারাভা থাকায় রোটেট করে খেলানোর অপশনও থাকছে সিলেটের সামনে। স্পিনে ভুগতে হতে পারে সিলেটকে। নাজমুল অপুর সাথে আছেন নাঈম হাসান। যিনি লাল বলের ক্রিকেটই বেশি খেলেন। নিয়মিত টেস্ট খেলা নাঈম টি-টোয়েন্টিতে কেমন করবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সব্ ছপিয়ে গত আসরে তরুণদের কাধে চড়ে যেভাবে ফাইনালে উঠেছিল সিলেট, সেই অনুপ্রেরণা তো থাকছেই তাদের সামনে। 

    সিলেট স্ট্রাইকার্স স্কোয়াড : 

    স্থানীয় : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অ), জাকির হাসান, তানজিম হাসান, নাজমুল হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, রেজাউর রহমান, আরিফুল হক, ইয়াসির আলী, নাজমুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, নাঈম ইসলাম, জাওয়াদ রোয়েন, সালমান হোসেন।

    বিদেশী : রায়ান বার্ল, বেন কাটিং, হ্যারি টেক্টর, রিচার্ড এনগারাভা, দুশান হেমন্ত, বেনি হাওয়েল। 

    খুলনা টাইগার্স 

    কুমিল্লা-রংপুরের পর ভারসাম্যপূর্ণ দল বলা যেতে পারে খুলনা টাইগার্সকে। বিজয়,আফিফ, নাসুম নাহিদুলদের সাথে আছেন উইন্ডিজের এভিন লুইস, শাই হোপরা। আছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম, ফাহিম আশরাফ। সব মিলিয়ে টিম কম্বিনেশন বেশ ভারসাম্যপূর্ন খুলনার। গত মৌসুমেও দেশি-বিদেশী মিলিয়ে দারুণ সমন্বয় করেছিল খুলনা, কিন্তু নেতৃত্বের পালাবদলে ফল আসেনি পক্ষে। এবার অধিনায়ক হয়েছেন আনামুল হক বিজয়। 

    ব্যাটিংয়ে মেরে খেলার মতো ক্রিকেটার যেমন আছেন, আছেন ধরে খেলার মতো ব্যাটারও। বিজয়-শাই হোপরা ইনিংস লম্বা করার কাজটা করতে পারেন। আফিফ-ইমন-হাবিবুররা খেলতে পারেন হাত খুলে। এভিন লুইস যোগ দিলে ওপেনিংয়ে শক্তি বাড়বে, দাসুন শানাকা এলে নিতে পারেন ফিনিশারের দায়িত্ব। 

    পিএসএলের আগ পর্যন্ত ওয়াসিম জুনিয়র-ফাহিম আশরাফ পেস বোলিংয়ের অগ্রভাগে থাকবেন। কাজে লাগবে রুবেল হোসেনের অভিজ্ঞতা। তবে সব মিলিয়ে মুকিদুল-নাহিদ-রুবেলের মতো দেশী পেসারদের ওপরই ভরসা করতে হবে খুলনাকে। অনেক বিদেশী ক্রিকেটারদেরই পুরো সময়ের জন্য পাবে না খুলনা। কারো আছে জাতীয় দলের ব্যস্তা, কেউ ব্যস্ত থাকবেন অন্য লিগে। আদর্শ একাদশ বা টিম কম্বিনেশন সাজাতেও তাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে দলটিকে। 

    খুলনা টাইগার্স স্কোয়াড

    স্থানীয় : আনামুল হক বিজয় (অ), নাসুম আহমেদ, আফিফ হোসেন, রুবেল হোসেন, পারভেজ হোসেন, হাবিবুর রহমান, নাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, মুকিদুল ইসলাম, আকবর আলী, সুমন খান, নাহিদ রানা।

    বিদেশী : এভিন লুইস, ফাহিম আশরাফ, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, শাই হোপ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, কাসুন রাজিথা, দাসুন শানাকা।

    চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

    নতুন নাম নিয়ে বিপিএলে আসার পর চট্টগ্রামের দলটা গত তিন মৌসুমের দুটিতেই খেলেছে প্লে অফে। আগের আসর শেষ করেছে টেবিলের তলানিতে থেকে। এবার জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন কেবল তানজিদ তামিম। বাকিরা ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ।আগের ব্যর্থতা মুছতে এই বছর বিদেশীদের প্রাধান্য দিয়েই দল সাজিয়েছ চট্টগ্রাম। ফিল সল্ট, মোহাম্মদ হারিস, কুশাল মেন্ডিস, নাজিবউল্লাহ জাদরানদের দলে টেনেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। 

    টপ অর্ডারে চট্টগ্রামের ভরসা পাকিস্তানি ব্যাটার মোহাম্মদ হারিস। আছেন তানজিদ তামিমও।  দুই লংকান তারকা আভিস্কা ফার্নান্দো ও কুশাল মেন্ডিস আরো শক্ত করবেন টপ অর্ডারের ভিত। অ্যাংকর হিসেবে দায়িত্বটা পালন করতে হবে আব্দুল্লাহ শফিককে। ফিনিশার রোলের দায়িত্ব নিতে পারেন নাজিবুল্লাহ জাদরান কিংবা কার্টিস ক্যাম্ফার।

    ব্যাটিংয়ের মতো বিদেশী নির্ভর নয় চট্টগ্রামের বোলিং আক্রমণ। স্পিন-পেস মিলিয়ে দেশিরাই থাকবেন মূল দায়িত্বে। নিহাদউজ্জামান-শুভাগত হোমরা দেখবেন স্পিন বিভাগ। পেস আক্রমনের আস্থা শহীদুল ইসলাম। চোট থেকে ফেরা পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ হাসনাইনকে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম। বিপিএলে নিজের সেরা ছন্দে ফিরতে পারবেন কিনা, সেটা হতে পারে চিন্তার কারণ।

    চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড : 

    স্থানীয় : শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান, নিহাদউজ্জামান, শহীদুল ইসলাম, তানজিদ হাসান, আল আমিন হোসেন, সৈকত আলী, ইমরানুজ্জামান, শাহাদাত হোসেন, সালাউদ্দিন শাকিল, হুসনা হাবিব।

    বিদেশী : কুশল মেন্ডিস, আভিস্কা ফার্নান্ডো, মোহাম্মদ হারিস, নজিবউল্লাহ জাদরান, আবদুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ হাসনাইন, স্টিভ এসকিনাজি, কার্টিস ক্যাম্ফার, বিলাল খান, ফিল সল্ট। 

    সব মিলিয়ে এই সাত দলের লড়াই চলবে প্রায় মাস দেড়েক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছর বলে নজর থাকবে তরুণ ক্রিকেটারদের দিকেও। কারা উঠে আসতে পারেন এই টুর্নামেন্ট থেকে?