কথা হলো না সাকিব-তামিমের, প্রশ্ন ক্রিকেটের মান নিয়ে
বিপিএল ২০২৪, মিরপুর
১ম ম্যাচ (টস - বরিশাল/বোলিং)
রংপুর রাইডার্স - ১৩৪/৯, ২০ ওভার (শামীম ৩৪, মাহেদী ২৯, নুরুল ২৩, খালেদ ৪/৩১, মিরাজ ২/১৩, মালিক ১/৯)
ফরচুন বরিশাল - ১৩৮/৫, ১৯.১ ওভার (তামিম ৩৫, মুশফিক ২৬, মিরাজ ২০, সাকিব ২/১৬, মুরাদ ২/১৭, নবী ১/২৫)
ফলাফল - বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী
২য় ম্যাচ (টস - খুলনা/বোলিং)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স - ১২১, ১৯.৫ ওভার (শহিদুল ৪০, নাজিবউল্লাহ ২৪, তামিম ১৯, নাহিদুল ৪/১২, ফাহিম ৩/২০, থমাস ২/৩৮)
খুলনা টাইগার্স - ১২২/৬, ১৮.২ ওভার (জয় ৩৯, আফিফ ২৬, ফাহিম ১৫*, শহিদুল ২/২৬, আল-আমিন ২/২৭)
ফলাফল - খুলনা ৪ উইকেটে জয়ী
দেখা হলেও হল না কথা, সাকিবের ঘায়ে তামিমের কাঁটা
সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব এখন আর কারও অজানা নয়। বিশ্বকাপের আগে দুটো বিস্ফোরক বার্তা ও সাক্ষাৎকারের পর এবারেই প্রথম দুজনে মাঠে নেমেছিলেন একসাথে। সাকিবের রংপুরের বিপক্ষে তামিমদের দিনটা দারুণ কেটেছে। খালেদ আহমেদের তোপে সাকিবরা একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি। শামীম হোসেন পাটওয়ারির ৩৪ রানের পর শেষদিকে শেখ মাহেদী ১৯ বলে ২৯ রান করে কিছুটা লড়াইয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে জয় বের করে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
তবে সেই চেষ্টাকে সফল করতে দেননি তামিম নিজেই। দারুণ এক শুরু এনে দিয়ে রংপুরকে শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিলেন তামিম। নবীর ফাঁদে পা দিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে ৫টি চার ও ১টি ছয়ে ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে অধিনায়ক পথ দেখিয়েছিলেন শুরু থেকেই। তবে অষ্টম ওভারে তামিম যখন ফিরলেন তখন দলের রান ৬৬। ১৩৫ রানের লক্ষ্যে দল পা হড়কাতে পারত সেখান থেকেও। মাত্র ১৬ রান দিয়ে ইব্রাহিম জাদরান ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট তুলে নিয়ে সেই সম্ভাবনা জাগিয়েছিলন সাকিব। তবে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার শোয়েব মালিক ও মাহমুদউল্লাহ ১৫ বলে ২৫* রানের জুটি গড়ে বিপদ ঘটতে দেননি। সাকিব-তামিম দ্বৈরথটা তাই মাঠের ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে জমেছে বেশ।
ফ্লাডলাইটের নিচেও লো-স্কোরিং ম্যাচ, আগের দিনের চট্টগ্রাম আজ অচেনা
গতকাল রাতেই খেলেছিল চট্টগ্রাম। অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দীপু ও নাজিবউলাহ জাদরান দারুণ ব্যাটিং করে ১৭০+ লক্ষ্য তাড়া করেছিলেন। অথচ আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পুরোই বিপরীত ঘরানার ব্যাটিং দেখাল তারা। শতরান যে পার করতে পেরেছে সেটাই তাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। খুলনার বাজে ফিল্ডিংয়ের সাথে শেষ দিকে শহিদুল ইসলামের ৪০ রানে মুখ রক্ষা হয়েছে তাদের। শুরুতেই নাহিদুলের স্পিন তো বুঝেই উঠতে পারেনি তারা। দশ ওভার পেরুতে না পেরুতেই ৬৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে একেবারেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিল তারা। শেষদিকে ওশেন থমাসের চোখে চোখ রেখে শহিদুল কথা না বললে অবস্থা আরও বেগতিক হতে পারত।
তবে খুলনাও কম যায়নি; পাওয়ারপ্লেতে তিন উইকেট খুইয়ে নিজের জন্য নিজেরাই গর্ত খুড়ে বসেছিল। বেপরোয়া ব্যাটিংয়ের পর দলের হাল ধরেছিলেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদুল হোসেন জয় জুটি। দুজনের কেউ টি-টোয়ন্টিসুলভ ব্যাটিং করেননি। তবে দুজনেই খেলেছিলেন ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে। দলকে জয়ের বন্দরে রেখে ৪৪ বলে ৩৯ রান শেষ জয় ফিরলে ম্যাচের মোড় ঘুরলেও ঘুরতে পারত। তবে ফাহিম আশরাফের ৮ বলে ১৫* রানে পরে ১০ বল হাতে রেখেই জয় পেয়েছে খুলনা।
শঙ্কা শুধুই মিরপুরের উইকেটে নয়, খেলার মানেও
মিরপুরের উইকেট নিয়ে প্রতিবারই কম কথা হয় না। এবারও সেটার ব্যত্যয় ঘটবে না সেই ইঙ্গিত মিলছে প্রথম দিন থেকেই। আজকেও সেটার ব্যতিক্রম হল না। উইকেটে সাবলীল ব্যাটিং করাটাই যেন দায়। মাঝারি মানের স্পিন বোলিংয়েও হাত খুলে খেলতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাটাররা; অসম বাউন্সের ভয় থেকেই যাচ্ছে। তবে সত্যি বলতে মাঠের ক্রিকেটটাও আজ একেবারেই আনাড়ি ঠেকেছে। গত রাতের মত আজ দুই ম্যাচেই দেখা মিলেছে বাজে ফিল্ডিংয়ের পসরা। ক্যাচ মিস তো আছেই, রান আটকানোতেও দক্ষতার অভাবটা স্পষ্ট।
সেই সাথে ব্যাটিংয়ের অ্যাপ্রোচ নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। শট নির্বাচনের মান কোনোভাবেই শীর্ষস্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সাথে মানানসই হয়নি। খুলনার পাওয়ারপ্লে ব্যাটিংটাই উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। কাঠগড়ায় দাড় করানো যেতে পারে শামীমদেরও। ৩৩ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে যখন ফিরলেন তখন উইকেটে থিতু হয়ে বরং দলের হাল ধরার কথা ছিল। সব মিলিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় দিনটা বিপিএলের দুর্নামটাই যেন আরও পোক্ত করেছে।