• বিপিএল
  • " />

     

    কেন ভারতের ভিসার জটিলতায় পড়লেন শোয়েব বশির? খাওয়াজা, মঈনরাও আগে যে ঝামেলায় পড়েছিলেন

    কেন ভারতের ভিসার জটিলতায় পড়লেন শোয়েব বশির? খাওয়াজা, মঈনরাও আগে যে ঝামেলায় পড়েছিলেন    

    ২০ বছর বয়সী সমারসেট অফ স্পিনার শোয়েব বশির। খুব যে আহামরি রেকর্ড তা নয়; তবে হুট করেই ভারত সফরের জন্য ইংল্যান্ডের টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পেলেন এই স্পিনার। আনন্দে উদ্বেলিত বশিরের জীবনে যেখানে নতুন রঙ লাগার কথা, সেখানে তাকে সম্মুখীন হতে হল অদ্ভুত এক সমস্যার। দলের সাথে অর্ধেক পথ এসেও ভারতের ভিসা না পাওয়ায় তাকে ফিরতে হয়েছিল ইংল্যান্ডে। অবশ্য ইংল্যান্ড এই বিষয়ে রব তুলে, কঠোর সমালোচনা করে বিষয়টা সমাধা করেছে। গতকাল অবশেষে এই অবস্থার পরিত্রাণ মিলেছে। কিন্তু সবাই ভিসা পেল, বশির কেন একা এই সমস্যায় পড়লেন?

    ধারণা করা হচ্ছে, এর কারণ বশির পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। কারণ এর আগেও ইংল্যান্ডের মঈন আলী, সাকিব মাহমুদরা ঠিক একই কারণে ভারতের ভিসা জটিলতায় পড়েছিলেন। ঘটনা ঘটার সাথে সাথে সেটা চাওর হয়ে গেলে ব্রিটিশ সরকার বিষয়টা সমাধা করার চেষ্টা চালায়, ভারত সরকারের সাথে বসে।

    ভিসা নিয়ে যখন জলঘোলা হচ্ছিল, তখন ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রিটিশ মুখপাত্র বলেছিলেন যে, বিষয়টা ভারতী সরকার ও বশিরের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে তিনি পরে এটাও ভলেন, " আমরা সকল ব্রিটিশ নাগরিককেই সমানভাবে দেখার প্রত্যাশাই রাখি, ভিসার প্রক্রিয়াটার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতও সেটাই করবে ভেবেছিলাম। অথচ লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশদের হেনস্থা হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা আগেও জানিয়েছিলাম।"

    খবরটা বেশিদূর যাতে না গড়ায় ভারতীয় হাই কমিশন তাই নিশ্চয়তা দিয়েছিল সেটার। তবে বিলম্ব ঠিকই হল। আরব আমিরাত পর্যন্ত দলের সাথে যেয়েও বশিরকে ঠিকই দল ছেড়ে ইংল্যান্ড ফিরতে হল। হায়দরাবাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই সপ্তাহের শেষের দিকে উড়াল দিবেন ঠিকই। কিন্তু প্রথম টেস্টটা তো আর তার খেলা হল না।

    তবে দুই দলের দুই অধিনায়ক বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বশিরের পাশেই ছিলেন। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস তো ড্রেসিং রুমে ভারত সফর বয়কট করা যায় কি না এটা নিয়েও দুবার ভেবেছিলেন বলে জানিয়েছেন। কারণ এই ভিসার জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছিলন ১১ ডিসেম্বর দল ঘোষণার পরপরই। প্রশ্ন উঠতে পারে দলে থাকা রেহান আহমেদেরও তো এই সমস্যায় পড়ার কথা, তিনি কীভাবে ভিসা পেলেন? কারণ রেহানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সেই বিশ্বকাপের সময়েই সারিয়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড, যা এতদিন পর এই সিরিজের সময়ে দেখেছে আলোর মুখ।

    যার জন্য প্রতিপক্ষ অধিনায়ক রোহিতও বশিরের বিষয়টা নিয়ে ব্যথিত, "সত্যি বলতে ওর জন্য আমার দুঃখই লাগছে। তবে আমি তো আসলে ভিসা অফিসে বসি না, তাই আমি বিস্তারিত বলতে পারব না কী হয়েছে। আশা রাখছি দ্রুতই আমাদের দেশে এসে ক্রিকেট মাঠে নামতে পারবে সে।"

    বশির তাই পাশে পাচ্ছেন খেলোয়াড়দের। তার নিজ অধিনায়কও তো স্বীকার করেছেন, ঘটনায় তিনি বেশ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন, "ব্যাশকে এই অবস্থায় যেতে দেখে আমি নিজেই তো ভেঙে পড়েছিলাম। যখন আপনার দলের একজনকে এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হতে দেখবেন, তখন একজন অধিনায়ক, একজন নেতা হিসেবে আপনার আবেগতাড়িত হওয়াটাই স্বাভাবিক।"

    বশিরের মত সমস্যায় এর আগে পড়েছিলেন উসমান খাওয়াজা। পাকিস্তানের সাথে ভারতের বৈরী রাজনৈতিক সম্পর্ক কারও অজানা নয়। তবে অস্ট্রেলিয়ানাগরিক হওয়া সত্ত্বেও বংশ সুত্রেই ভিসা জটিলতায় পড়ে গত ভারত সফরের প্রথম টেস্ট খেলতে পারেননি এই অজি ওপেনার। এর আগে ২০১৯ সফরে ইংল্যান্ডের সাকিব মাহমুদ পড়েছিলেন একই সমস্যায়। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলতে এসে মঈন আলীও এর আগে পড়েছিলেন এই সমস্যায়। আর গত বিশ্বকাপে পুরো পাকিস্তান দলের সাথেও ভিসা নিয়ে যেই সমস্যা হয়েছিল সেটার স্মৃতি তো এখনও তরতাজা।