• বিপিএল
  • " />

     

    মাশরাফি দাঁড়িয়েই আছেন...

    মাশরাফি দাঁড়িয়েই আছেন...    

    নবম ওভারের খেলা শেষ হয়েছে। আম্পায়ার টাইম আউটের ডাক দিয়েছেন। ছোট্ট বিরতি শেষে আবার যখন খেলা শুরু হলো- ফিল্ডিংয়ে এদিক-ওদিক, চারিদিকে তাকিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখা গেল না। দুই ওভার হয়ে গেলে এরপর অবশ্য অধিনায়ককে মাঠে খুঁজে পাওয়া গেল। দ্বিতীয় টাইম আউটটা আসে ১৬ ওভার শেষে। আবার সেই বিরতি শেষে মাশরাফির দেখা নেই কোথাও। অধিনায়কত্ব করবে তাহলে কে? অধিনায়কত্বের জন্যেই তো তিনি দলে। সেই অধিনায়ক মাশরাফিকেই কিনা চার ওভার দেখা গেল না ফিল্ডিংয়ে। 

    সর্বনাশ! সিলেট স্ট্রাইকার্স তো পিছিয়ে গেল তাহলে। কেবল অধিনায়কত্বের জন্যেই তো তারা একজন ক্রিকেটারকে খেলিয়ে যাচ্ছে, সেই কিনা নেতৃত্বেই নেই। বোলিং করলে এক কথা, ক্লান্তির কারণে একটু বাইরে গিয়ে ঝিরিয়ে নিবেন। একের পর এক ওভার যায়, মাশরাফি যে বোলিংয়েও আসেন না। পুরো ইনিংসই চলে যায়, ‘স্পিনার’ মাশরাফি আর হাত ঘুরাননি!

    ছোট্ট রান আপে একটু একটু করে এগিয়ে মাশরাফি বল করছেন, স্পিনার নয় তো কী! গতিটাও তো স্পিনারদেরই মতো। আনফিট মাশরাফি তবু সিলেটের এবারের আসরের প্রথম ম্যাচে ২.৩ ওভার করেছিলেন। পরের ম্যাচে আর বোলিংই করার কথা আসেনি কাপ্তানের মাথায়। এরপর ওমন মাশরাফিই ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়েছিলেন কুমিল্লার বিপক্ষে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের চতুর্থ ম্যাচে ১৪ রান খরচ করে এক ওভারের বেশি করেননি আর। পঞ্চম ম্যাচে তো এসে আর বোলিংই করলেন না! 

    তাহলে কী মাশরাফির দ্বিতীয় ভূমিকা হয়ে গেল ব্যাটারের! প্রথমটা তো অধিনায়কত্ব জানেনই। টুর্নামেন্টের আগে সিলেট স্ট্রাইকার্সের অন্যতম সত্ত্বাধিকারী জগলুল হায়দার মিঠু বলেছিলেন, মাশরাফি দাঁড়িয়ে থাকলেই চলবে তাদের। মাশরাফি মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই থেকেছেন শুধু। কখনো শর্ট থার্ড ম্যান, কখনো শর্ট ফাইন লেগ। এই যা! শর্ট ফাইন আর শর্ট থার্ডের চক্কর কেটেই পার হয়েছে মাশরাফির প্রথম ইনিংস। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য ব্যাট হাতে নেমে গেছেন দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে নেমে যদিও ৩ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি। 

    মাশরাফির পঞ্চম ম্যাচের গল্প এটুকুই। ওহ হ্যাঁ, বলতে পারেন প্রথম ইনিংসে তো অধিনায়কত্বও করেছেন। অধিনায়কত্বের খাতায় অবশ্য মার্ক দেওয়ার দায়িত্ব আপনার। গেল আসরে সিলেট টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করেছিল প্রথম পাঁচ ম্যাচেই জয় দিয়ে। আর এবারে শুরুতে পাঁচে পাঁচ হার সিলেটের। এতে নিঃসন্দেহেই মাশরাফির একার দায় নয়। সে ভিন্ন আলাপ। তবে পৃথিবীতে খুব বিরলই ঘটনা বলতে হয়, একজন ক্রিকেটার ফিট না হয়েও খেলে যাচ্ছেন শুধু অধিনায়কত্ব করবেন বলে! মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা রিকি পন্টিং বলে উঠতে পারেন, এমন হলে তাদের জনম জনম ধরে অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাওয়া উচিত। 

    মাশরাফি নিজেও যদিও স্বীকার করে নিয়েছেন, তার খেলা এভাবে চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে মাশরাফি বলেছিলেন, ‘সব জিনিস সব জায়গায় ব্যাখ্যা করা যায় না। তবে আমি যেটা মনে করেছি, এটা (চোট নিয়েও খেলা) আইডিয়াল সিচুয়েশন না।’ অবশ্য তাতে কী, সিলেট স্ট্রাইকার্সের যে তার দাঁড়িয়ে থাকা চাই শুধু। সিলেটের জন্য সুখবর, নেতা তাদের কথা অক্ষরে অক্ষরেই পালন করে যাওয়ার নজির দেখিয়ে যাচ্ছেন। মাশরাফি দাঁড়িয়েই আছেন…