জামালের জৌলুশে দাপুটে কুমিল্লা, আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে সিলেটের হাসি
বিপিএল ২০২৪
১ম ম্যাচ (টস - কুমিল্লা/ব্যাটিং)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস - ১৪৯/৭, ২০ ওভার (লিটন ৪৫, জ্যাকস ২২, রিজওয়ান ২১, নাসুম ২/২১, ফাহিম ২/২৫, ওয়াসিম ১/৩৭ )
খুলনা টাইগার্স - ১১৫, ১৮ ওভার (ওয়াসিম ২৩, নাহিদুল ২১, বিজয় ১৯, জামাল ৫/২৩, তানভীর ২/২৯, জ্যাকস ১/১৪)
ফলাফল - কুমিল্লা ৩৪ রানে জয়ী
২য় ম্যাচ (টস - সিলেট/বোলিং)
দুর্দান্ত ঢাকা - ১২৪/৮, ২০ ওভার (সাইফ ৪১, নাঈম ৩৬, ক্রুস্পুল্লা ১২, রাজা ৩/২০, সামিত ২/১৯, হাওয়েল ১/১৭)
সিলেট স্ট্রাইকার্স - ১২৯/৫, ১৯ ওভার (শান্ত ৩৩, হাওয়েল ৩০*, বার্ল ২৯, শরিফুল ৩/২৭, কাদির ২/১৬)
ফলাফল - সিলেট ৫ উইকেটে জয়ী
জামাল জ্বালালেন খুলনার বন
আমের জামাল - গত মাসে ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল এই নাম। অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে পাকিস্তান বোলার মত কিছু করতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়াতে নিজেকে চিনিয়েছেন এই পেসার। আজ কুমিল্লার হয়ে বিপিএলেও হাঁকডাক দিয়ে জানিয়ে দিয়ে গেলেন তার নাম। যেই খুলনাকে হারানোই দায় হয়ে গিয়েছিল সেই খুলনা টানা দুই ম্যাচে হারল তো হারলই, গুটিয়ে গেল মাত্র ১১৫ রানে।
জামালের আগে তুমুল বিতর্ক সয়ে যাওয়া কুমিল্লা অধিনায়ক লিটন ফিরেছিলেন রানে। ৪৫ রান করলেও দিনশেষে কুমিল্লার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ১৫০ রানের লক্ষ্য মিরপুরে সবসময়ই কঠিন হতে যাচ্ছিল। আমের জামাল কাজটা আরও কঠিন করে তুলেছিলেন খুলনার জন্য। মাসুদের জন্য অবশ্য রাস্তাটা তৈরি করে দিয়েছিলেন দুর্দান্ত এক ম্যাচ কাটানো জ্যাকস। ব্যাট হাতে কার্যকর ইনিংস খেলার পর দুর্দান্ত এক স্পেলে রান দিয়েছিলেন মোটে ১৪! তারই সুবাদে নাওয়াজ যখন ফিরলেন তখন ১২.৩ ওভারে ৬ উইকেট খুইয়ে খুলনা তুলেছিল মোটে ৬৭ রান। বাকি কাজটুকু সারতে তাই জামালকে খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয়নি।
ডেড রাবারও যেন 'ডেড'
সিলেট-ঢাকার ম্যাচটার ফলাফলের কোনও প্রভাব নকআউটে বলতে গেলে ছিল না। তবুও সম্মানের বিষয় তো ছিল। তবে ম্যাচটা দুই দলের পুরো মৌসুমের পারফরম্যান্সের মতই ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। মিরপুরের রাতের ম্যাচগুলোর মত এদিনও খুব একটা আহামরি ম্যাচের দেখা মিলল না। ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকাকে সাইফ, নাঈম ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন। অথচ দলকে ৮২ রানে রেখে ৪১ রানে সাইফ যখন ফিরলেন সেখান থেকে এমন একটা সংগ্রহ মোটেও কাম্য ছিল না। সেটার জন্য রাজাকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। সেই ধন্যবাদটা শরিফুলও পেতে পারতেন। তবে ক্রিকেট কারিয়ারে প্রথমবারের মত অধিনায়কত্ব করতে নেমে তাসকিন আহমেদ দলটাকে যেন সাজাতে পারলেন না সেভাবে। ম্যাচ ১৯-তম ওভার পর্যন্ত গড়িয়েছে ঠিকই। তবে শান্তর অবিবেচকের মত শটে ফেরার পর বার্ল-হাওয়েল ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝেই খেলেছিলেন শুধু। জয়টা মাথায় রেখেই এগিয়ে শরিফুলর ৩ উইকেটের দুর্দান্ত এক স্পেলটাও শেষমেশ কাজে আসেনি।
মিরপুরে ফিরে বিপিএল যেন আবারও মরা
মিরপুরে বিপিএলের টি-টোয়েন্টির আমেজটা যেন পাওয়া যায় না। সিলেটে গিয়ে বিপিএল যা একটু প্রাণ ফিরে পেয়েছিল মিরপুরে ফিরে আবারও মরা সেই টুর্নামেন্ট। রাতের ম্যাচগুলো যেন একটা শীর্ষস্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে শুধুই উইকেটের দোশ দেওয়াটাও হয়ত অবান্তর। ভালো শুরু পেয়েও বেশ একটা চাপমুক্ত অবস্থায়ও শান্ত যেই শট খেলে আউট হলেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। আর প্রথম ম্যাচে তো উইকেট দিয়ে আসার মিছিল দেখা গেল দুই দলেই। একের পর এক জয় তুলে নিয়েও খুলনা যে টানা ম্যাচ হারের বৃত্তে ঢুকে গেল তাতেও নিজেদের দোষারোপ করতেই হয়। সব মিলিয়ে মিরপুরে ফিরে বিপিএল যেন আবারও জৌলুশ হারাতে বসেছে।